somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবী

১০ ই অক্টোবর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১০টা হাত ওয়ালা একজন মানুষকে বীভৎস লাগার কথা ছিল, কিন্তু তাকে লাগে না। প্রকৃতির সকল সৌন্দর্য তার মাঝে উজার করে দেয়া হয়েছে। তার সমগ্র সত্ত্বা নিয়ে সে নিঁখুত। কেউ যখন তার চোখের দিকে তাকা তখন সে তাতে ঢুবে যায়, যখন তার নাকের দিকে তাকায় তখন শ্বাসের গতি বেড়ে যায়, যখন তার ঠোঁটের দিকে তাকায় তখন তাতে ঢুবে যাবার আকুলতায় সে ভেসে যায়..............

সে শ্রেষ্ট জায়া, শ্রেষ্ট জননী। না কেউ কখনও প্রশ্ন করে না জায়া অর্থাৎ কি না "যারা মাঝ দিয়ে পুরুষ আবার জন্ম নেয়" সে একটি যন্ত্র ভিন্ন আর কিছু হবে কেন? একটা যন্ত্রের কিভাবে হৃদয় থাকবে? কোন যন্ত্র তো তার মাধ্যমে তৈরি হওয়া বস্তুকে স্নেহ করে না!!! কিন্তু প্রশ্নটা কেউ করে না, কারণ অবচেতনভাবেই কেউ তার মাঝে হৃদয় চায় না। হৃদয় থাকলেই আবেগ থাকবে যা তাকে শ্রেষ্ট হতে বাধা দিবে, মহান হওয়া থেকে বিরত রাখবে। কারণ তাকে মস্ত বড় দেবী হতে হবে। তার রূপের অপভ্রংশটুকুও অর্থ আনবে, শিক্ষা আনবে............সে নিরাপত্তাদায়ীনি, বিনোদিনী।
তার জন্য বারটা মাস ধরে অপেক্ষা হয়, তার জন্য সাজ সাজ রব তুলে প্রতীক্ষা হয়। তার পায়ে সিঁদুর ছুইয়ে সব নারী তার মত হবার আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। সকল পুরুষ প্রার্থনা করে তার মত জায়া'র যে তাদের মর্ত্যের ঘরে স্বর্গ সুখের বান আনবে.....

অবশেষে আলোর অসীম ঝলকানির পর পর্দা নামে। যাকে বেদিতে তোলা হয়েছিল তাকে টুপ করে পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এখন আর পুতুল খেলার সময় নয়।

সেটাই তো আসলে হবার কথা তাই না? আদতে পুতুল ভিন্ন কিছু তো সে নয়। মাটিতে গড়া একটা পুতুল, যার চোখ নাক ঠোঁট শরীর সব সুন্দরতম, যেমন করে সভ্যতার তাকে প্রয়োজন হয়। তাকে নিয়ে একটা গল্প তৈরি হয়, সেখানে তাকে অসীম পরিমানে শক্তি দেয়া হয় যেন যখন তাকে যেভাবে চাওয়া যায় ঠিক সেভাবে পাওয়া যায়, প্রাপ্তি তিল পরিমানেও কম না হয়।অতঃপর তাকে বেদীতে তোলা হয় এবং প্রয়োজন ফুরালে তাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলতেও দ্বিধা হয় না।

বছরে বাকিটা সময় এই কঠিন প্রক্রিয়াটি অনুশীলন করার জন্য রক্ত মাংসের প্রতিমাগুলো ব্যাবহৃত হয়। তাদের বেদিতে তোলা হয় "গৃহলক্ষী" জাতীয় বিভিন্ন নামের ঝলকে ভোলানো হয়। এর পর ভীষন পেষন করে তার কাছ থেকে বিদ্যা, কর্মক্ষমতা, কর্মদক্ষতা, দৃঢ়তা বের করা হয়।
এরই সাথে আশা করা হয় সে দেবীর মত হবে, নির্বাক। তার রক্তের প্রতিটি কণা শুষে নিইয়েও আশা করা হয় সে হবে ধরিত্রীর মত সর্বংসহা, হাজার অত্যাচার অনাচার সয়েও তার মুখে থাকবে স্মিত হাসি।
দূর্ভাগ্য বলতেই হবে, রক্তমাংসেরদেবীগুলোর হৃদয় নামক একটি বস্তু আছে। তারা কষ্ট পায়, তাদেরও চাহিদা থাকে, অভাব আছে অভিযোগ আছে। এ কারণে এই জায়া নামক যন্ত্রটি ত্রুটিপূর্ণ, তুচ্ছ, নগণ্য।

কিন্তু মানুষ হিসাবে আমাদের সভ্যতা ধরে রাখতে হয়, তারা যতই নিজেদের উন্নত করুক তাদেরকে ঘাড়ে ধরে সভ্যতার স্বাদ দেয়া হয়, দেবী দুর্গার কৃপায় প্রতিদিন তাদের ক্ষমতা বাড়ে, তারা সয়েও যায়..........এভাবেই সভ্যতার বিস্তার হয়.......মূল পদ্ধতি অভিন্ন থাকে, শুধু রূপ বদলায়..........






এটা কোন ধর্ম বিদ্বেষী লেখা নয়, আমার বন্ধু মাত্রই জানে নারী চরিত্র হিসাবে আমি দূর্গার দৃঢ়তকে কি পরিমানে পছন্দ করি। আমার কাছে সে শুধু দেবী না একজন আদর্শনীয় চরিত্র।
এ লেখাটা Domestic violence এর against এ লেখা। আমি শুধু বলতে চেয়েছি স্ত্রী নামক যন্ত্রটাকে কেউ দয়া করে একটু মানুষ ভাবুন। একবার বিবেচনা করুন তারও ভুল হতে পারে, তারও আবেগ থাকতে পারে। তারও আপনার কাছে কোন চাহিদা থাকতে পারে।

তার ভালবাসা যেন মর্যাদা পায়, আপনার বিরক্তির কারণ যেন তার আবেগ না হয়।


ছবির কৃতজ্ঞতাঃ ব্লগার যিশু




সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:২০
২০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×