কিছু গান থাকে, একেকটা সময় এর কথা মনে করিয়ে দেয়। কোন একাকী গুনগুন কিংবা বন্ধু দের আড্ডায় হেঁড়ে গলার গান, পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে রেডিও তে বাজা বাংলা ছিঃনেমার গান অথবা সেলুন এ বারবার বাজতে থাকা সদ্য হিট হওয়া কোন গান,সবকিছুই একেকটা মুহূর্ত কে ধরে রাখে...
কয়দিন ধরে আমি রবীন্দ্র জ্বরে আক্রান্ত, বারবার ওই হাজার বার শোনা গান গুলি শুনতেই ভাল লাগছে। কলেজ এ থাকতে একদিন আমার এক বন্ধু জিগ্যেস করেছিল কোন গান টা মন কে ছুয়ে যায়? আমি বলেছিলাম আমার পরান যাহা চায় ...এখনো কেন জানিনা গানটা শুনলেই ওইদিনের কথা মনে পড়ে আর গানটা আবার নতুন করে ভাল লাগে......
একটুকু ছোঁয়া লাগে গানটা শুনলে আবার প্রেম এ পড়তে ইচ্ছে করে...... একদম খা খা রোদে ও আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে গানটা শুনলে সিনেমার মত চারপাশ টা বদলে যায় ...মনে হয় হাত বড়ালেই বুঝি বৃষ্টির পানি ছোঁয়া যাবে...
আমি বলতে গেলে অর্ধেক জীবন হোস্টেলে ই কাটিয়েছি ...তাই কফি হাউস গানটা শুনলে আবার বন্ধুময় জীবনে ফিরে যাবার দুর্দমনীয় ইচ্ছে জাগে...অবশ্য কফি হাউসে গানটা শুনলে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়না, এমন বাঙালি বুঝি একটি ও পাওয়া যাবেনা...
“বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িত গেলাম” গানটা বাজলেই পুরাপুরি ভিন্ন একটি কথা মনে পড়ে ...এস.এস.সি পরীক্ষার আগের রাতে আশেপাশে এই গানটা বাজছিল, তখন খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম,কিন্তু এখন শুনলে হাসি পায়।
আমার রুমমেট খুব ভাল লালন গীতি গাইত, আমরা এক রুম এ তিনজন থাকতাম, তো একদিন ও গান ধরেছে “তিন পাগলে হইল মেলা” ...... হঠাত গানের মাঝখানে আরেক রুমমেট চিল্লায়ে উঠছে, আরে এ তো আমাদের তিন জনের গান......
“আয় খুকু আয়” গানটা শুনে বাবার কথা মনে পড়েনা এমন কেও কি আছে? আল্লাহর রহমতে আমার বাবা বেঁচে আছেন,তবুও গানটা শুনলে বাবা ক ভীষন ভাবে মিস করি......
“আমি মেলা থেকে তালপাতার বাঁশী” গানটা এখনও ছোটবেলায় নিয়ে যায়...... ছোটবেলায় খেলার সাথি দের সাথে ঈদ গাহ এ যাওয়া,পুজো বা নববর্ষের মেলায় গিয়ে রঙ্গিন চকলেট এ মুখ রাঙ্গানো সব যেন বায়স্কোপের মত চোখের সামনে চলে আসে...
এরকম আর হাজার গান আছে,অনেক সুন্দর, মিষ্টি ,দুঃখ,হাসি, আনন্দ কান্নার স্মৃতি কে হৃদয় গভীর থেকে চোখের সামনে এনে হাজির করে.........