somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধুর আমার মায়ের হাসি......

০৯ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘মধুর আমার মায়ের হাসি,চাদের মুখে ঝরে-
মাকে মনে পড়ে,আমার মাকে মনে পড়ে।’
‘আমাকে একজন ভালো মা দাও,আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি দেব।’
বাংলা ভাষায় সবচেয়ে মধুর শব্দ হচ্ছে ‘মা’।আমার কাছে মনে হয় আর অন্য কোন ভাষায় মাকে এত আবেগ দিয়ে ডাকা যায় না।মা-মাগো!-আমি যে তোমায় অনেক ভালোবাসি।কত বার প্রান ভরে মাকে ডেকেছি মনে নেই।কিন্তু কখনো একটিবারের জন্যও বলা হয়নি-মা তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।এই ব্যকুলতাও দিন দিন হারিয়ে যাছে।ব্যকুলতা বাড়ছে কেবল প্রেমিক/প্রেমিকার জন্য।উম্মুখ হয়ে বসে থাকে সবাই।কখন কিভাবে প্রেমিক/প্রেমিকাকে চমকে দেয়া যাবে কথাটি বলে।কত হাজার বার প্রেমিক/প্রেমিকার চিঠিতে লেখা হয়েছে,মুঠো ফোনে এ যাবত কয়েকশ বার বলাও হয়ে গেছে-আমি তোমাকে ভালোবাসি।মাকে এত ভালোবাসি,সারাক্ষন মা আমার পাশে তবু মাকে কথাটি বলতে পারিনি।অগোচরে মাকে নিয়ে একটা চিঠিও লেখা হয়নি।অথচ দুদিন আগেও কোন মেয়ে/ছেলেকে বলার জন্য লাল নীল কালি দিয়ে ডায়েরির পাতায় চতুর্থ বা তারও বেশি বারের জন্য লিখে রেখেছি-আমি তোমাকে ভালোবাসি।হয়ত মাকে কাছে পাই বলেই এই আকুলতা কাজ করেনা।
মা,-মাগো-,দুইটা টাকা দাওনা?আইসক্রিম খাব।
মাঃ-কাল না তোকে টাকা দিয়েছি,ঠান্ডা দিয়ে এত আইসক্রিম খায় না।কিংবা আমার কাছে টাকা নেই তোর আব্বুকে বল ……।।ইত্যাদি।
শুনতে হত কত কথা ।হয়ত কড়া শাসন না হয় মন ভালো থাকলে আপসে টাকা বের দেয়া …।
আজ এসব মনে পড়লে মাঝে মাঝে খারাপ লাগে।ইস! সে দিন গুলোই কী মজার ছিল।সেদিনের শাসন আজ আমাদের প্রান ভরে টানে।
এখন আমরা বুঝতে পেরেছি মায়ের এত শাসন এত বারন আসলে আমাদের ভালোর জন্যই।খেলতে যেতে দেয়নি বলে সেদিন মায়ের প্রতি যে বিরক্ত ছিল,আজ তার লেশ মাত্রও নেই।এমন অনেক সময় মা অনেক কাজের জন্য বকা দিয়েছিল।তখন মনে হয়ে ছিল মা বোধহয় একটু বেশিই করছে।অনেক ক্ষোভ জন্মাতো মায়ের প্রতি,কখনো মনে হত সবাইকে বকা না দিয়ে মা শুধু আমাকেই দিচ্ছে।মা,সেদিন আমি অবুঝ ছিলাম।সেদিন আমাদের কতটুকু বুঝ-ই হয়েছে তুমি বল।সেই অবুঝ সময় হলেও আমরা অনেক বড় ভুল করেছিলাম।মা,তুমি আমাদের ক্ষমা করো।তুমি-ই আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল।আমি তো আজো বলি আমি সুযোগ পেলে আবারো তোমার আচলতলে একটিবারের জন্য কিচ্ছুক্ষন লুকিয়ে থাকতে চাই।মা,আমায় আরেকটিবার সুযোগ দাওনা,আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিবে।আমি আরেকটি বারের জন্য স্বাধীন মনে ঘুমাতে চাই।মাগো,মুখ ফুটে হয়ত বলা হয়নি আমি তোমাকে ভালোবাসি।কিন্তু যখনই একটিবারের জন্য তোমার আড়াল হই আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে খুজতে থাকি।ভালোবাসার পূর্ন অনুভুতি বুকে নিয়ে তোমায় স্মরন করি।মা,আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রতিটি পদচিহ্ন তোমাকে সামনে রেখেই।তোমার ছবি চাদ হয়ে আমাদের আলো ছড়ায়,মাগো,তোমার জোছনাতলে রেখো আমায় চিরকাল।মা,তোমার এত ত্যাগ শোধ করার ক্ষমতা কারো নেই,তবু সে পথে যেন চিরকাল হেটে যেতে পারি স্রষ্টার কাছে এ প্রার্থনাটুকু করো।যুগের আধুনিকায়নে আমরা অনেক সভ্য হয়ে উঠছি।দিবসের ছড়াছড়াতে তবু যেন মন হারিয়ে যায়।ব্যস্ত মানুষগুলো এই একটি দিনের কারনে মাকে বিশেষভাবে মনে করে।তারুন্যের মাঝেও আজ মা দিবস অনেক জনপ্রিয়।আধুনিক প্রজন্মের মায়েরা বোধহয় ভাগ্যবান।আগামীর মায়েরা হয়ত আরো বেশি ভাগ্যবান কারন ততদিনে মা দিবস অনেক বড় আকার ধারন করবে।সবাই মাকে মনের কথা জানাবার বিশেষ সুযোগ পাবে।মাগো,যুগ তোমার ভালোবাসা কেড়ে নেয়নি।ভালোবাসা বাড়িয়ে দিয়েছে।যাদের কারনে তুমি কষ্ট পাচ্ছ,তারা মোটেও ভালো নেই।তুমি সৃষ্টিকর্তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ!উনিও বলবে তারা সুখে নেই।বিশালতার আভিজাত্যে তাদের ধন বেড়েছে,মান বেড়েছে,সুখ বাড়েনি।যতই নিজেদের বাহ্যিক ভাবে সুখী মনে করুক।বাবার করা সেই বহু আগের বানানো ঘরে মরিচা পড়া টিনের চালের ফাক দিয়ে পড়া অজস্র বৃষ্টি ফোটার মাঝে তুমি নিজেকে অনেক কষ্টে লুকিয়ে রেখে প্রহর গুনছো ,মনে মনে ঠিকই ভাবছ আমার সোনা মানিকেরা জানি কেমন আছে?বৃষ্টি যেন ওদের ঘুম না ভাঙ্গায় সেজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছো।অথচ অন্যদিকে তোমার ছেলেরা দুনিয়া থেকে বের হয়ে ইটের দালানের বাক্সে বহুস্তর বিশিষ্ট বিছানায় আরামে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।মা,এটা সুখের ঘুম নয়।ওরা নিশ্চিত স্বপ্নে কোন না কোন কষ্ট পেয়ে কাদছে।তোমাকে জাগিয়ে রেখে শান্তির ঘুম কারো আসবেনা।
মায়ের সাথে কথা হয়নি কতকাল!ঝগড়া করে আলাদা হয়ে অন্যত্র চলে এসেছে।মা দিবসে চারপাশের সবাই তাদের মার সাথে কথা বলছে প্রান ভরে,মায়ের জন্য ঘিফট কিনছে।সবাই তার সাথে তাদের মায়ের গল্প করছে।নির্জনে রফিক টেবিলে মাথা ঘুজে কাদছে।কবে মায়ের সাথে শেষ কথা বলেছে তা তার কাছে অস্পষ্ট।লজ্জায় ইচ্ছা সত্তেও মাকে ফোন দিতে পারছেনা।আবার অন্যদিকে আরিফ কাদছে তার মৃত মায়ের জন্য।শেষ বায়না ছিল স্কুল বন্ধ হলে মায়ের সাথে নানি বাড়ি বেড়াবে।স্কুল বন্ধ হওয়ার পাচদিন আগেই তার মা চলে গেছে।আর একসাথে নানি বাড়ি যাওয়া হলনা।মা দিবসে তাই সে প্রান ভরে কাদে আর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।এই মা দিবসে সবাই মাকে একটিবারের জন্য মুখফুটে বলি না হয় মুঠোফোনে ক্ষুধে বার্তায় লিখে পাঠাই-মা তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।আমি জানি সে ছোট বেলার মত এখনো যদি আমার জ্বর আসে তুমি ঘুম ভেঙ্গে মধ্য রাতে এসে কপালে হাত দিয়ে দেখবে জ্বর কমেছে কিনা?তুমি-ই মাথায় পানি ঢেলে দিবে।তীব্র শীত উপেক্ষা করে নিজের কাথা সন্তানের গায়ে জড়িয়ে দেয়া তোমার পক্ষেই সম্ভব ।মা দিবসে পৃথিবীর সকল মায়েদের প্রান ভরে শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই……………।।


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:০০
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×