somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোবেল শান্তি পুরস্কারের ইতিহাসে এ বছর প্রথম একসঙ্গে তিনজন নারী হলেন নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই তিনজনের সম্পর্কে একটু বলি - একজন হলেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ। লাইবেরিয়ায় দীর্ঘ ১৪ বছর গৃহযুদ্ধ চলার পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আফ্রিকার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট সারলিফ দেশে শান্তি ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় নিরসনভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্যে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার সুবাদে শুরু থেকেই তিনি শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নের দৃষ্টিতে পড়েন। তার সঙ্গে শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অপর দু'জন হলেন লেমাহ জিবোয়ি ও তাওয়াকুকুল কামান। লেমাহ নিজেও লাইবেরিয়ার অধিবাসী এবং তাওয়াকুকুল কামান ইয়েমেনর। এরা তিনজনেই পুরস্কারের অর্থ দশ মিলিয়ন নরওয়েজিয়ান ক্রোনার পাবেন সমান ভাগে। বাংলাদেশী টাকার অংকে এই এক কোটি ক্রোনারের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় বারো কোটি টাকা। এই পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হবে বরাবরের মতো আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের মৃতু্যদিবস ১০ ডিসেম্বর। একটি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে।
এদের তিনজনকে কেন এই পুরস্কারে ভূষিত করা হলো তার ব্যাখ্যায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বলেছে অহিংস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নারীদের নিরাপত্তা বিধান এবং শান্তি প্রক্রিয়ার কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণ অংশগ্রহণের অধিকার অর্জনে তাঁরা প্রভূত অবদান রেখেছেন। আরও বলা হয়েছে সমাজের সর্বস্তরে স্থায়ী শান্তি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র অর্জন সম্ভব নয় যতৰণ পর্যন্ত পুরুষের মতো সমান প্রভাব বিস্তারের ৰমতা নারীদের দেয়া হবে। এরই আলোকে সশস্ত্র সংঘাতপূর্ণ অবস্থায় নারীর বিরম্নদ্ধে সন্ত্রাস ও তা থেকে রৰার জন্যে প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদে নারীর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে গৃহীত হয়। '১৩২৫' নামের প্রস্তাবটি। এতে বলা হয়েছে পুরুষের মতো সমান অধিকার সম্পন্ন হয়ে সকল শান্তি প্রক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনের শানত্মিপূর্ণ কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণের কথা। এই ৰেত্রে প্রেসিডেন্ট সারলিফ তার দেশের অর্থনৈতিক ও সমাজিক উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রভূত অবদানের মাধ্যমে দেশে শানত্মি স্থাপন এবং নারীর ৰমতায়নের অবস্থানকে সংহত করেছেন ২০০৬ সাল থেকে তার কর্মকা-ে নিমগ্ন থেকে। তারই মতো লেমাহ জিবোয়ি দীর্ঘদিন গোত্রীয় ও ধমর্ীয় জীবন ধারা বিভক্ত শ্রেণী ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘাতে লিপ্ত সকল নারী সম্প্রদায়কে অসাম্প্রদায়িক ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে অবসান ঘটিয়েছেন দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকা লাইবেরিয়ার সশস্ত্র সংঘাত। তিনি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের অধিকার। যুদ্ধ চলাকালে এবং যুদ্ধোত্তরকালে পশ্চিম আফ্রিকায় নারীদের ৰমতা ও প্রভাব বৃদ্ধি করেছেন।
ইয়েমেনের তাওয়াকুকুল কামান সাম্প্রতিক সময়ে আরব স্প্রিং (অৎধন ংঢ়ৎরহম) নামে অভিহিত গণতন্ত্রকামী মানুষের গণজাগরণের আগে এবং আন্দোলনরত সময়ে নারীর অধিকার অর্জন এবং শানত্মি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পালন করেছেন নেতৃস্থানীয় ভূমিকা। এই তিন নারীকে পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে নোবেল কমিটি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই পুরস্কার- পৃথিবীর যেসব দেশে নারীরা তাদের অধিকার বঞ্চিত তারা যে শানত্মি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কতটা গুরম্নত্বপূর্ণ এই বোধটা জাগিয়ে তুলতে এবং নারীর প্রবঞ্চনার ইতি টানতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
এবারের এই তিনজন নোবেল বিজয়ীকে নিয়ে এ পর্যনত্ম শানত্মিতে নোবেল বিজয়ী নারীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট বারো জন। একই সংখ্যা বিরাজ করছে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী নারীর ৰেত্রেও। আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু শানত্মি প্রতিষ্ঠার জন্যে আত্মনিবেদিত অস্ট্রিয়ার মনীষা নারী বার্থা ভন সাতনার এ দেয়া প্রসত্মাবে ১৯০৫ সালে প্রবর্তিত নোবেল শানত্মি পুরস্কারের প্রথম বারের পুরস্কারটি প্রদান করা হয় বার্থা ভন সাতনারের দেয়া প্রসত্মাবে ১৯০৫ সালে প্রবর্তিত নোবেল শানত্মি পুরস্কারে প্রথমবারের পুরস্কারটি প্রদান করা হয় বার্থা ভন সাতোয়ারকে। এরপর যারা পান তারা হলেন- জেন এ্যাডামস ১৯৩১ সালে, এমিলি গ্রীন বাল্ক ১৯৪৬ সালে, বেটি উইলিয়ামস ও মেরিড কোরিগান ১৯৭৭ সালে, মাদার তেরেসা ১৯৭৯ সালে, আলভা মিরদশ (সুইডেন) ১৯৮২ সালে, আউং সান সুচি ১৯৯১ সালেম বিগোবার্তা মেন্চু তুম ১৯৯২ সালে।
৩৮৮টি পেটেন্টের আবিষ্কারক সুইডেনের আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের নামে নোবেল পুরস্কার ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯০৫ সালে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ নরওয়ে সুইডেন থেকে আলাদা হওয়ার পর শানত্মি পুরস্কারটি সে দেশ থেকে প্রদান করা হয়। নরওয়ের সংসদ স্তুর থিং (ঝঃড়ৎ ঃরহম) এর প্রাক্তন সংসদ সদস্য নিয়ে গঠিত নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি প্রতিবছর শানত্মি পুরস্কারটি ঘোষণা করে। এই নোবেল কমিটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট হলেন যুর বিওর্ন ইয়াগলান্দ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×