somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এবার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বললেন ‘মারতে মারতে ওদের মেরে ফ্যাল

০৭ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার ‘এ’ লেভেল পড়ুয়া চার কিশোরকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বললেন ‘মারতে মারতে ওদের মেরে ফ্যাল"

খবর প্রথম আলো থেকে -

পার্কের উল্টো পথ ধরে হাঁটছিল ‘এ’ লেভেল পড়ুয়া চার কিশোর। এ অভিযোগে তাদেরকে বেধড়ক পিটিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত তিন সেনা কর্মকর্তা। তাঁরা ওই কিশোরদের খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। তাদের মুঠোফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নেন। এরপর চোর বলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারার ডিওএইচএসের পার্কে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার শিকার কিশোরদের অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, ডিওএইচএস পরিষদ আজ শুক্রবার এ বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বৈঠক করেছে। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের দুজন বৈঠকে আসেননি। এ ব্যাপারে তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।

জানতে চাইলে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সেনা কর্মকর্তারা ছেলেদের চড় মারার কথা স্বীকার করেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।

এ ঘটনার শিকার স্কলাস্টিকা স্কুল ও কলেজের ছাত্র মুশফিকুর রহমান জানায়, তারা বারিধারার ডিওএইচএসের ১ নম্বর সড়কের বাসিন্দা। গতকাল বৃহস্পতিবার তার বন্ধু ফাহাদ হোসাইন, পৃথু আমিন ও তাসবীর ইসলাম কোচিং শেষ করে তাদের বাসায় এসেছিল। তাদের বয়স ১৭। সবাই স্কলাস্টিকার ‘এ’ লেভেলের ছাত্র। তাদের মধ্যে ফাহাদ ও পৃথুর বাসা উত্তরায়, তাসবীরের বনানীতে।

মুশফিকুর জানায়, সন্ধ্যায় তারা সবাই মিলে ডিওএইচএসের ৫ নম্বর সড়কের পার্কে ঘুরতে যায়। তারা হাঁটতে গেলেই সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাকির হোসেন তাঁদের উল্টো পথে হাঁটার কারণ জানতে চান। তারা নিয়ম না জানার বিষয়টি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। কিন্তু এতে জাকির হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি তাদের বকাঝকা করতে থাকেন। একটু পরে ডিওএইচএসের প্রশাসনিক প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আজিজুল আশরাফসহ আরও একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেখানে আসেন। তাঁরা তাদের হাত ও চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে পার্কের পাশে ব্যারাকে নিয়ে যান। সেখানে রশি দিয়ে তিনজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এরপর লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। কেউ কেউ চড়-থাপড়ও মারেন। খবর পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের তত্ত্বাবধায়ক সার্জেন্ট আবদুস ছালাম ৩০-৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে সেখানে আসেন। এঁদের কেউ কেউ চড়-থাপড় মারেন।

মুশফিকুর বলেন, খবর পেয়ে তার মা মাসুদা রহমান ও প্রতিবেশী এক নারী এলে ওই সেনা কর্মকর্তারা তাঁদেরকে গালমন্দ করেন।
আরেক কিশোর তাসবীর বলে, ‘বাঁধা অবস্থা থেকে কোনো মতে ছুটে আমি মায়ের কাছে ফোন করা জন্য পকেট থেকে মুঠোফোন বের করি। এ সময় আজিজুল ও আবদুস সালাম হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মুঠোফোনটি কেড়ে নেন।’ ফাহাদ বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে আজিজুল হক নিরাপত্তাকর্মীদের বলেন, ‘মারতে মারতে ওদের মেরে ফ্যাল। এটা শুনে আমরা সবাই ভয়ে কুঁকড়ে যাই। তখন আমার চোখের সামনে আমিনবাজারে ছয় ছাত্র মারা যাওয়ার ছবি ভাসছিল।’

ফাহাদ আরও জানায়, এ ঘটনার ৩০ মিনিট পরে পুলিশ আসে। তখন গ্লাস চুরি ও উত্ত্যক্ত করা অভিযোগ দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবার মা-বাবা আসার পর তাঁরা চুপ হয়ে যান। এর একপর্যায়ে আজিজুল হক ছাড়া সবাই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। পরে মা-বাবারা তাদের বাসায় নিয়ে যান।
আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় এ ঘটনা নিয়ে ডিওএইচএসের পরিষদ কার্যালয়ে এক সালিসি বৈঠক করেন পরিষদের কর্মকর্তারা। সেখানে ছাত্র, তাদের অভিভাবক ছাড়াও পরিষদের সভাপতি, কর্মকর্তা, মারধরকারী দুই কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযুক্ত তিন সেনা কর্মকর্তার দুজন ছিলেন না।
সালিসি বৈঠকে কিশোরেরা ও তাদের মা-বাবার অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছাত্ররা মারধরকারী আজিজুল আশরাফ ও জাকির হোসেনকে দেখিয়ে দিয়ে পরিষদের কাছে তাদের শাস্তি দাবি করে।

বৈঠকের পর পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) কাজী আশফাক আহমেদ বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে যাঁরা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অন্য দুই কর্মকর্তার বৈঠকে না আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ওই দুই সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের পাওয়া যায়নি।

বৈঠকের পর তাসবীরের বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা না করার জন্য পরিষদ অনুরোধ করেছিল। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা বৈঠকে বসেন। কিন্তু এ বৈঠকে তাঁরা সন্তুষ্ট হননি। এতে মারধরে জড়িত কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান।

সূত্র: প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:১৪
১৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×