কয়েকদিন চুপচাপ বসে দেখছিলাম পারসোনার ব্যাপারটি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় । ফেসবুক টুইটার এবং ব্লগাররা যেভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে তা দেখে সত্যিই গর্বে বুক ফুলে উঠছে । ঘটনায় প্রথম আলোর মৌনতা অনেক কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল । এই মৌনতা যে এখন কানিজ আলমাসদের যৌনতাকে উস্কে দিচ্ছে তা কারো বুঝতে বাকি নেই আর । ৪ তারিখের তৌহিদা শিরোপার প্রতিবেদনটি এর বড় প্রমাণ । আমার ঘেন্না লাগছে এই কানিজ আলমাসদের যারা একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের জীবনে কলঙ্ক মেখে পয়সা উপার্জন করে । তারাই আজ ব্যবসায় অবদান রেখে পুরস্কারে ভূষিত হয় । তারা ব্যবসার আড়ালে কী করছে তা আজ উন্মোচিত প্রায়। আর সেই অবৈধ টাকা দিয়ে তারা গনমাধ্যমের মুখ বন্ধ করছে। কানিজ, আপনি কয়টা মুখ বন্ধ করবেন?? চীনা একটা প্রবাদ মনে পড়ে গেল,“বিদ্যমান অস্তিত্বটির প্রকাশ ঘটবেই কাটা হয়ে নয়তো ফুল হয়ে।”আপনি নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং টাকা দিয়ে দেশের সব মানুষের কাছে হয়ত সংবাদ পৌঁছানো আটকিয়ে রেখেছেন কিন্তু যারা পারসোনার প্রকৃত সেবা গ্রহীতা আমাদের মা বোন স্ত্রীরা কিন্তু জেনে গেছেন আপনার কির্তী। একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে কিন্তু পুরা দেশের মানুষের প্রয়োজন নেই । পারসোনার পোশাক পরির্বতনের রুমে স্থাপিত ক্যামেরা যে ইন্টারনেটে পর্ণো ভিডিও সরবরাহকারী সাইট গুলোতে সরবরাহ করা হয় তা কিন্তু সবার কাছে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে।
পারসোনা কর্তৃপক্ষের কথার অসংলগ্নতাই কিন্তু বলে দিচ্ছে অভিযোগের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা কতটুকু । আলমাস খান ঘটনার দিন উপস্হিত না থেকেও কিভাবে বললেন ক্যামেরা ঘুরে গেছে ?? আবার বলছেন,ক্যামেরা নাকি কাস্টমারদের রিকুয়েস্টে রাখা হয়েছে । যদি তাদের রিকুয়েস্টেই রাখা হবে তবে কাস্টমার কেন অভিযোগ করল ? সোমবার দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে কানিজ আলমাস দাবি করেছেন, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মনিটর শুধু তার কক্ষে থাকে। অথচ মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের খবরে দেখা যায় ডেস্কে বসে দুজন পুরুষ কর্মী দুই কম্পিউটারে তা তদারকি করছেন। তিনি আরো দাবি করেছেন, পারসোনার বনানী শাখায় স্পা নেই। তাই সেখানে গোপন ক্যামেরা থাকার কোনো প্রশ্নই উঠে না। তাহলে প্রথমে বললেন ঘুরে গেছে সেটা তবে কী ঘুরেছিল?
গতকাল প্রথম আলোতে এসেছে, চিকিৎসকের স্বামী বলেছেন, পুরো ব্যাপারটি ভুল ভুঝাবুঝি এবং রাগ উত্তেজনার কারনে হয়েছে । মেনে মিলাম উনি উত্তেজিত ছিলেন সেদিন, কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় অভিযোগকারী ওই চিকিৎসকের স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সকালের খবরের প্রতিবেদককে তিনি জানান, ‘আমাদের যে সমাজ ব্যবস্থা তাতে থানায় অভিযোগ করলে নিজেদেরই বরং উটকো ঝামেলায় পড়তে হবে। একারণে তারা থানায় অভিযোগ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টির যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয়। এত বড় একটি প্রতিষ্ঠানের এমন কর্মকান্ড খুবই লজ্জাজনক। এটা যে কারো বেলায় হতে পারত।‘ তবে কি শনিবারও উনার মাথা গরম ছিল ?? উনি উনার আগের বক্তব্য থেকে কেন সরে এসেছেন ? পারসনা কর্তৃপক্ষ নিজেদের কালিমা মুছতে ঠিকই সমঝোতা করে ফেলেছে অভিযোগকারীর সাথে ।
আর এই ব্যাপারে প্রথম আলোর মত প্রভাবশালী কাগজ কানিজ আলমাসকে রক্ষা করতে চাইছে। গতকালের রিপোর্টিই তার প্রমান। যা সর্বত্র নিন্দার ঝড় তুলেছে । তবে কী এটাই প্রথম আলোর ‘বদলে যাও বদলে দাও?’
যখন কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে তখনতো তাদের রিপোর্ট করতে বেশীক্ষন লাগেনা... কিন্তু এই মুখশধারী কানিজ আলমাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন ঢাকতে চায় ? মেনে নিলাম তাদের সাথে আর্থিক ব্যাপার স্যাপার আছে। তারা নকশার স্পন্সর । তাই বলে তাদের অন্যায় ঢাকার উদ্দশ্য কী ? পরিমল কে নিয়ে এত এত নিউজ হল, পরিমলের সাথে নৈতিকতার প্রশ্নেতো কোন পার্থক্য নেই কানিজ আলমাসের.........
দুজনের অপরাধ তো একই। প্রথম আলো কি নিজেদের চিরস্থায়ী ভাবে? আমাদের দেশ সহ বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দৈনিক ছিল,আজ নেই । চিরস্থায়ী কেউ নয় । দৈনিক বাংলা, দৈনিক আল মোজাদ্দেদ, দৈনিক শক্তি প্রভাবশালী দৈনিকগুলি হারিয়ে গেছে। এতদূর কেন যেতে হয়, এইতো কয়দিন আগে বন্ধ হয়ে গেল নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড । মানে কেউ চিরস্থায়ী নয় । জনগনকে তারা ধোঁকা দিচ্ছে । চোখে ধুলু দিয়ে পয়সা কামাচ্ছে । এই ৫ দিনে প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ১/৩ অংশ কমে গেছে। বিশ্বাস না হলে ফেসবুক টুইটার কমিউনিটি ব্লগ গুলোতে মন্তব্য পড়ুন । এইসব বিকল্প মিডিয়া গুলো কানিজের কির্তী তুলে ধরছে । কানিজ দের জনগনই বিচার করবে । জনগনকে অনুরোধ করব অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। গনজাগরনে কোন নেতৃত্ব লাগেনা, গনজাগরনই নেতৃত্ব তৈরি করে।
কাজী জাকির ইমরান