ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা কোনো একক দেশের সমস্যা নয়। সারা বিশ্বের জন্যই এটি এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৌলবাদ বিকশিত হলে মানুষের স্বাধীনতা, মানবতা—সব ভুলণ্ঠিত হবে। তাই সারা বিশ্বকে এক হয়েই মৌলবাদকে ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মেলন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে। রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, ইরান, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধচলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের পক্ষে ইউরোপ। ১৯৭১ সালে যারা বর্বরতার শিকার হয়েছে, তারা যেন ন্যায়বিচার পায়, ইউরোপ সেটাই চায়। ২০০১ ও ২০০৫ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব পাস করেছে। এসব প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গণহত্যা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
গত দুই দশকে বিশ্ব অনেক দিক থেকে এগিয়েছে। কিন্তু এই সময়ে ধর্মীয় মৌলবাদ শান্তিপ্রিয় মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৌলবাদ আজ সারা বিশ্বকে গ্রাস করে ফেলছে। আমাদেরকে আর বিলম্ব না করে মৌলবাদের বৃক্ষকে উত্খাত করতে হবে। নইলে মানবতা ভুলণ্ঠিত হয়ে যাবে।’
মৌলবাদ মোকাবিলায় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পাকিস্তানে ইসলামী মৌলবাদের উন্মেষ হলে ভারতে হিন্দু মৌলবাদের বিকাশ হবে, আর ভারতে হিন্দু মৌলবাদের বিকাশ হলে বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদের জন্ম হবে—আমরা এটা রুখতে পারব না। কাজেই মৌলবাদ মোকাবিলায় আমাদেরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মৌলবাদের চেয়ে আমাদের সংস্কৃতি অনেক শক্তিশালী। আমরা মৌলবাদকে আসতে দেব না। আমাদের কৃষক সংস্কৃতি কখনো উগ্রবাদকে প্রশ্রয় দেয়নি। যদি আমরা একে ধরে রাখতে পারি, তাহলে আমরা মৌলবাদকে প্রতিহত করতে পারব।