somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনৈতিক অঙ্গনে কেন রেফারির প্রয়োজন ?

০৫ ই অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ০১-১০-২০১১ইং তারিখে দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম হলো, "নিরপেক্ষ রেফারি ঠিক করতে সংসদে আসুন"। আমি ভেবেছিলাম বাংলাদেশে মনে হয় আবারো আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার মত কোন আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল টিম খেলতে আসছে। আর সেই খেলার রেফারি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদল কোন ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। তাই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ ওবায়দুল কাদের বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে এমনই বানী ছুড়েছেন। কিন্তু পুরো সংবাদ পড়ার পরে আসল ঘটনা আমার বুঝে আসলো। আমি জনাব ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যে ভীষণ ভাবে মর্মাহত হলাম। আমাদের দেশের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা আজকাল যেসকল রুপক ভাষায় কথা বলা শুরু করেছেন তা রিতিমত ভদ্র ও শিক্ষিত সমাজের কাছে লজ্জাজনক। ওবায়দুল কাদেরের মত প্রবীণ
রাজনিতিবিদের কাছে জাতী এধরনের বাক্য ব্যবহারের বক্তব্য আশা করেনা। তিনি বলেছে,‘ফাইনাল খেলায় নিরপেক্ষ রেফারি এবং খেলার নিয়মাবলি (রুলস অব গেম) ঠিক করতে জাতীয় সংসদে আসুন। এর চেয়ে উত্তম কোনো জায়গা নেই। বাইরে ঝগড়াঝাঁটি না করে সংসদে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে ফাইনাল ম্যাচের প্রস্তুতি নিন। বিশ্বখ্যাত স্থপতি লুই কানের নকশায় নির্মিত নয়নাভিরাম আমাদের প্রিয় জাতীয় সংসদ ভবন কোন রাজনৈতিক দলের খেলার নিয়ম-নীতি নির্ধারণের জায়গা হোক এটা আমারা চাই না। কোন রাজনৈতিক দল জাতিকে নিয়ে খেলাধুলা শুরু করুক এটাও আমাদের কাম্য নয়। জনাব ওবায়দুল কাদের একটি সুদীর্ঘ ও সমৃদ্ধ রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। একজন সংস্কৃতিমনষ্ক, উদার, প্রজ্ঞাবান, বাগ্মী, স্পষ্টবাদী, ত্যাগী ও নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা হিসাবে সমাজের সর্বস্থরে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। আমার মনে পড়ে কোন এক সাংবাদিক সম্মেলনে জনাব ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন,মানুষ যদি বুঝে যায় আন্দোলন দেশের জন্য নয়,পরিবারের জন্য তখন কেউ সাড়া দেবে না। দিন বদল করতে হলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। অ্যানালগ মন-মানসিকতা দিয়ে ডিজিটাল
বাংলাদেশের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। সুতারাং তিনি মানুষের মনের ভাষা বুঝে কর্মসূচি দেওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন নিজ দল আওয়ামী লীগকে। আমার মনে হয় পাঠকগন আমার সাথে একমত পোষণ করবেন,শুধু মানুষের মনের ভাষা বুঝে কর্মসূচি নয় মানুষের মনের মত ভাষা,যুক্তি ও উপমা দিয়ে বক্তব্যও প্রদান করতে হবে। জাতীয় সংসদ হলো জাতীর ভাগ্য উন্নয়নে আলোচনার সবচেয়ে পবিত্র স্থান। সেখানে কিসের রেফারি ঠিক করার আহবান জানালেন জনাব ওবায়দুল কাদের আমার
বোধগম্য নয়। সংসদ নির্বাচনকে কখনো খেলার সাথে উপমা করা চলে না। নির্বাচন কমিশন বা তত্তবধায়ক সরকারকে রুপক ভালে আর যাই বলা হোক না কেন আম্পায়ার বা রেফারি বলে আখ্যায়িত করে তাদের তাচ্ছিল্য করা উচিত না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার নামক একটা কথা আমাদের রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মুখে ইদানীং বেশ শোনা যাচ্ছে। আসলে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বস্তুটা যে কি,তা হয়তো সংশ্লিষ্ট কর্তারা কেউই জানেন না। যদি জানতেন তাহলে হয়তো "চোরের মায়ের বড় গলা" এই জাতিয় বক্তব্য আমাদের শুনতে হতো না ।

০৪-১০-২০১১ইং তারিখে দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত আরেকটি সংবাদের শিরোনাম হলো " ‘ফাইনাল খেলা’র জন্য ছাত্রলীগ-যুবলীগই যথেষ্ট" আর এবারের এই বানী দাতা হলেন,স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু । তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে বলেছেন,ফাইনাল খেলার হুমকি দেখাচ্ছেন! গণতন্ত্রের মাঠে খেলার মতো আপনাদের কোনো কর্মী নেই। আপনাদের খেলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দরকার হবে না। যুবলীগ-ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’ জানি না টুকু সাহেব এই বক্তেব্যের মাধ্যমে কি বুঝাতে চেয়েছেন। আমার মতে অত্যন্ত সত্য কথা বলেছেন মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু। যুবলীগ-ছাত্রলীগ একটা প্রশিক্ষিত দাঙ্গা বাহিনী। যার প্রমান ইতোমধ্যে তারা ভিবিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দিয়েছে । যেই ছাত্রলীগ টেন্ডারবাজি, দখলবাজি,সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজেরা সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে হরদম। মা-বোনদের শ্লীলতাহানি ও উত্যক্তকারী হিসেবে যেই ছাত্রলীগ দেশ ব্যাপী আদালা দুর্নাম কুড়িয়েছে খুব সল্প সময়ে। মানছে না দলের হাই কমান্ডের কোন নির্দেশনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশনার তোয়াক্কা করছে না কোনো ভাবেই। সেই সোনার ছেলেরা ই তো পারবে ফাইনাল খেলায় ফাউল করে দলকে জেতাতে। "বরিশালের গৌরনদীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগ।" এই সংবাদের ভিত্তিতে দৃঢ় তার সাথে বলা যায় পুলিশের থেকে ছাত্রলীগ দাঙ্গা হাঙ্গামায় অনেক বেশি পারদর্শী। তাই হয়তো জনাব টুকু বলেছেন,ফাইনাল খেলা’র জন্য ছাত্রলীগ-যুবলীগই যথেষ্ট। আবার এটাও হতে পারে,বিরধী দল ধমনে পুলিশের চেয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগ অস্রহাতে বেশি ভুমিকা রেখেছে। সেজন্যই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ফাইনাল খেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের উপর বেশি ভরশা রাখতে চাচ্ছেন।


যদি সত্যিই আগামি ফাইনাল খেলায় (টুকু এবং কাদের ভাষায়) যুবলীগ ও ছাত্রলীগ তাদের দায়িত্ব পালন করে তাহলে আবারো মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের মত কোন অপশক্তি আপনাদের কাঙ্ক্ষিত মসনদ দখল করে খেলা বাঞ্চাল করে দিতে পারে। তখন কিন্তু মাঠ থেকে আর ঘরে ফিরে যেতে পারবেন না। সোজা হাত পা বেঁধে জেলে প্রেরন করে দেবে। তখন যুবলীগ-ছাত্রলীগ,সন্ত্রাসলীগ কোন কাজে আসবে না। আমাদের মত সাধারন জনগণকেই আপানদের মুক্ত করতে আন্দলন, সংগ্রাম করতে হবে। কারন আমরা চাই না আমাদের রাজনৈতিক দলের ক্যাপ্টেনরা বন্ধি থাকুক সাব জেলে। জেলে বসে যিনি মেট্রিক ফেল তিনি টিভি দেখুক আর পেপার পড়ুক। আর যিনি অনেক ডিগ্রি ধারি, তিনি আবারো ‘সবুজ মাঠ পেরিয়ে’ জাতিয় বই লিখে সাহিত্যিক হিসাবে সুনাম কুড়াক। আমরা চাই না আমাদের জাতীয় কোন নেতা দেশ পরিচালনায় হাজার ব্যারথতার গ্লানি নিয়ে সাহিত্যিক হিসাবে প্রশংসা কুড়িয়ে সন্তুষ্ট থাকুক। সুতারাং আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ সময় থাকতে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ব্যাবস্থা গ্রহন করুন। প্রয়োজনে নিজেদের ভুল শুধরে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা পুনরায় চালু করে তার অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ঘোষণা দিন। এতে দেশ,জাতী এবং আপনাদের মঙ্গল হলে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×