BBAUB 2002 ব্যাচের ছাত্র আমি। খুব ভাগ্যবান মনেহয় নিজেকে। যদি এ ব্যাচে না থাকতাম তাহলে হয়তো এতোগুলো ভালো বন্ধু পেতাম না আমি। থাকা হতো না এতোটা সঙ্গবদ্ধ একটা বন্ধুমহলের সাথে।
আজ জীবন জীবিকার প্রয়োজনে হয়তো আমরা একে অন্যের থেকে দূরে কিন্তু আমাদের শেকড় সেখানেই রয়ে গেছে, যেখানে আমরা একে অন্যের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। জড়িয়ে নিয়েছিলাম বন্ধু বলে একে অপরকে। যত বড়ই হই না কেন সেই স্মৃতিগুলো কখনো ভুলে যাবার নয়।
মেয়েদের ক্লাস ছিল সকালে আর আমরা ছেলেরা দুপরে। আমরা সবাই দুপরের আগে দল বেধে স্কুলের গেইটের বাইরে দাড়িয়ে থাকতাম মেয়েদের ছুটির অপেক্ষায়। (এখন আমদের বন্ধুদের সাথে মেয়ে বন্ধুদের সম্পর্ক অনেক ভালো। কিন্তু তখন হয়তো এতটা ভালো বন্ধুত্ব ছিল না) আমদের মাঝে কেউ কেউ উকি দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া মেয়েদের মাঝে সুন্দরী কারো দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতো। এখন এই বেপারটাকে আমার কাছে ছেলেখেলা মনে হয় কিন্তু ঐ সময়টা আসলেই আমাদের ছেলে বেলা ছিল। আর ছেলে বেলা মানেই ছোট ছোট বিষয়ে উৎসাহী হওয়া।
স্কুলের মাঠে লং পীচ, শর্ট পীচ ক্রিকেট, ক্লাসের মধ্যে টেপ টেনিস বল দিয়ে ফুটবল, হরতালে স্কুল খোলা কিন্তু কেউ নেই ক্লাসে। অনেক সময় টিফিনের পর আমার মতো দু-একজন বলদ ক্লাসে বসে থাকতাম। বাকি সবাই টিফিন পালিয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের ক্লাসের রোল ১ থেকে ১০ পর্যন্ত কেউ নেই ক্লাসে টিফিনের পর। দেখা গেলো টিফিনের পর রাব্বানী (সমাজ টিচার) স্যার ক্লাসে এসে ক্লাসের এই অবস্থা দেখে বলতেছে, কিরে তোরা বইসা আসস কেন? তোরা পলাইলি না কেন?
ক্লাস পরীক্ষাগুলোতে মজা হতো চরম পর্যায়ের। প্রথম বেঞ্চ থেকে শুরু করে লাস্ট বেঞ্চ পর্যন্ত এমন একজন নেই যে নকল করছে না। ফাস্ট বয় থেকে শুরু করে লাস্ট বয়, সবার বেঞ্চের নিচে বই খোলা।
স্কুলের শেষ দিন মন খারাপ হয়েছিলো কিনা ভুলে গেছি কিন্তু এখন স্কুল জীবনের কথা মনে করে ঠিকই আবেগী হয়ে উঠি। কতটা নিষ্পাপ আর বিশুদ্ধ ছিল দিনগুলি। কতটা বাধাহীন ছিলাম আমরা। হয়তো সামর্থ্য ছিল না তখন কিন্তু যা ইচ্ছে তা করার সুযোগ ছিল। আজ এখন সামর্থ্য আছে আমদের কিন্তু জীবনের বাস্তবতা যা ইচ্ছে তা করার সুযোগ রাখে নি আর আগের মতো...