কবি এবং গঞ্জিকা; ইহাদের গুঢ় সম্পর্ক লইয়া ইতোমধ্যে গুণীজনেরা নানান কথা বলিয়াছেন। বলা হইয়া থাকে- পতিতা এবং কবিরা তাহাদের কর্মের জন্য একই সাথে আনন্দ লাভ এবং অর্থ উপার্জন করিয়া থাকেন। ইহারা সবই পারেন।
গরমে ঘামিয়া এক খিলি জর্দা দেওয়া পান চিবাইতে চিবাইতে ইহারা লেখেন বর্ষা বিলাস জাতীয় কবিতা। বর্ষার পানিতে ভিজিয়া লেখেন লেপ-কাথা মুড়ি দেওয়া রোমান্টিক কবিতা। ইদানিং, ঢাকা শহরে কবি এবং কাকের সংখ্যা উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাইয়া চলিতেছে।
বাচিয়া থাকুক কাক, বাচিয়া থাকুক কবিকুল।
নিশুতি রাত,
জানি এসময় আমার দরজায় কলিংবেল,
কেউ বাজাবে না।
রাতজাগা কুকুরগুলোও ঘুমুচ্ছে ছাইগাদায়;
কুন্ডুলি পাকিয়ে, মৃত আগুনের তুলতুলে কাফনের ‘পর।
গাছগুলো অভিমানী মেয়ের মত দাঁড়িয়ে চুপচাপ,
আধারের ঘনিষ্ঠতায়, জোসনার লুকোচুরিতে।
উন্মাদ মানুষগুলো ঘুমুবে আরও অনেকক্ষন, জানি,
তারপর থকথকে রৌদ্দুর উঠলে
ছুটে যাবে নগরীর হোমাগ্নিতে ঝাপ দিতে।
জীবন, কাম-কলা, প্রেম ডাস্টবিনের আবর্জনার মত
মিলে মিশে ধূপধোয়া ছড়াবে- জানি।
তারচেয়ে... ওরা বরং আরও একটু ঘুমোক,
স্বপ্ন দেখে কেদে উঠুক অথবা
সবুজ প্রান্তর পেরিয়ে খুজে আনুক শৈশব।
পাহারাওয়ালার হলদেটে লন্ঠনের মত চোখে
আমি বরং চেয়ে দেখি আরও অনেকটা-
রাতের পাখিগুলো ঘুমিয়ে পড়ুক,
ভোরের পাখিরা আজ দেরিতে
জাগলেও ক্ষতি নেই।
আকাশের পটভূমিতে আমার চোখদুটো খুজে পাক
দালানের মাথায় বসে থাকা কোন “কাক” কে;
অন্ধকারে বড্ড বেমানান, রাতের চেয়ে কালো;
আমার মত অভিশাপ বয়ে বয়ে
ও নিশ্চয় বড্ড ক্লান্ত।
ধ্রুব তারাটি নাহয় থাকুক,
ওর ছায়াস্পর্শ থেকে অনেক দূরে।
ভোরের আলোয় আমার মত ও নিশ্চয়,
খুজে পাবে কোন ডাস্টবিন।