somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃত্ত

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সময় আসে যখন সবকিছু কেমন করে আপনা আপনি বদলাতে শুরু করে। এই বদলটা হয়তো খানিকটা বাহ্যিক, খানিকটা মানুষিক। বাহ্যিক হয়তো সামান্য, তবে মানুষিকটা জটিল। সবকিছু তো আগের মতোই থাকে, সূর্য তো পশ্চিমেই উঠে, ভুল-ভাল হয় না। তাই হয়তো বাহ্যিক পরিবর্তনটা খুব বেশি পরিমেয় নয়। যাহোক, মানুষিক পরিবর্তনের সাথে সাথে হয়তো দৃষ্টি-ভঙ্গিটারও পরিবর্তন হয়। দেখার প্রার্থক্য ঘটে। একই চোখে এক বছর আগে যা দেখেছি, এখন অন্য কিছু দেখি। ধীরে ধীরে আমাদের জ্ঞান-গরিমা বাড়ে, আমরা প্র্যাকটিক্যাল, রেশনাল হওয়ার চেষ্টা করি। প্রত্যেক কাজে অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা করি। ইমোনশানকে পাত্তা দিতে কম চেষ্টা করি। সবকিছুতে প্রাকটিকাল সলুউশান আশা করি। এটা বেশ ভাল। তবে আমরা মানুষ বলেই কোন না কোন ভাবে ইমোশানের মাঝে আটকা পরে থাকি। যতই রেশনাল হওয়ার চেষ্টা করি না কেন, একসময়, কোন এক মুহূর্তে আমরা আবেগটাকে প্রাধান্য দিয়ে ফেলি। এই বিশেষ মুহূর্তটা এতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, ঐ কাজটা না করলে ফলাফল অন্যরকম হতো। এটাকে কেওস থিওরীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়। অর্থাৎ পৃথিবীতে প্রত্যেকটা ইভেন্ট এর ইম্পেক্ট থাকে। ফড়িং ডানা না ঝাপটালে হয়তো ঝড় হতো না। ধরে নেওয়া যায় সেরকম একটা ব্যাপার। ব্যাপারটা সত্যি হলেও ফড়িং কিন্তু ডানা ঝাপটানো বন্ধ করবে না। এমনকি আমরা সব ফড়িং মেরে ফেলবো না। যাহোক, মানুষের চিন্তা ভাবনার একটা গণ্ডি থাকে। এর বাইরে সে ভাবতে পারেনা। যেমনটা, কেও যদি কোন খাবার পূর্বে কখনো না খায়, তাহলে সেই খাবারের স্বাধ কল্পনা করতে পারবে না।

আমি অনেক ভাবি। এক ভাবনার পরতে অন্য ভাবনা চলে আসে। তারপর ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বট গাছ হয়ে যায়। অদ্ভুত লাগে তখন। একসময় মানুষের কর্মকাণ্ড গুলোকে খুব খেয়ালী মনে হয়। কিছুটা ভাল লাগা আর কিচুটা অবেলার ক্লান্তি মিশে একাকার হয়ে যায়। মনের মধ্যে অদ্ভুত রিনরিন ভাব ঝেকে বসে, তখন শুধু ভাবতেই ইচ্ছে করে। সেই ভাবনা থেকে মন উঠে আসতে চায় না। কিন্তু ভাবনার চ্ছেদ এক সময় পরেই। ঐ যে বললাম, আমরা এখন রেশনাল, প্র্যাকটিক্যাল হওয়ার চেষ্টা করি। এবং স্বাভাবিকভাবেই দৈনন্দিন নিজস্ব কাজ কর্মে আত্মমগ্ন হতে হয় আবার। ভাব আবেগ গুলো ঠায় হয়তো সেখানে খুব কম। আমি মাঝে অবাক বিষ্ময়ে ভাবি আর প্রত্যেকটা কাজ কর্মের সঠিক ব্যাখ্যা বের করতে চেষ্টা করি। কেন আমাদের এতো কোলাহল। কেন আমরা বেঁচে থাকা তাগিদ অনুভব করি। এই কথা গুলো হয়তো অপটিমিস্টিক নয়, তবুও মাঝে মাঝে আমাকে বড় আগলা করে দেয়। কেনই বা এতো ইচ্ছা অনিচ্ছার ভেড়াজ্বালে আমাদের প্রাত্যহিক দিনাতিপাত। এ থেকে বের হওয়ার আদৌ কোন পথ আছে কি? তখনি নানা রকম ভাবনা ঝেকে বসে। মনটা বড়ো পৃথুলা হয়ে যায়। নিজেকে বড় বুড়ো বুড়ো মনে হয়। অথচ কিইবা আমি। এইতো আমার কেবল শুরু। আর কতশত সময়ের স্রোতে অবগাহন করতে হবে । সময়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানি। কিন্তু মাঝে মাঝে এগুলোকে অবহেলা করতে বড় ভাল লাগে। এই ভাললাগাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে হয়তো বেশ বড় রকমের ক্ষতি হয়ে যায়, কিন্তু কি করবো, পারি না। প্র্যাকটিক্যাল হওয়ার যতই চেষ্টা করি না কেন, মনের ভেতর কোথাও একটা শিশু বাস করে, আনমনে সে খেলে যায়। তার এই খেলার মানে নাই যদিও, কিন্তু তাতে তার মাথা ব্যাথা নেই, তার খেলা সামগ্রী, সাথী থাকলেই হলো।

অবেলায় লিখছি, আকাশে বিকেলের রোদ নেই, বরং বেশ গম্ভীর। সন্ধ্যার অনেক আগেই মনে হচ্ছে সান্ধ্য রচনা হবে। আর মেঘ গুলো নীলকে ছেয়ে ফেলছে। রাগী রাগী ভাব নিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভাল লাগছে না কিছুই। মনটা বড়ো বাধো বাধো ঠেকছে। মাঝে মাঝেই মনে হয়, আমি কোথাও যেন আটকা পরে আছি একটা কিছুতে। সেই একটা কিছুকে ঘিরেই আমার যত সব আস্ফালন, ভাব রচনা। নিজেক বড়ো হতাশ মনে হয়। যত বেশি করে মন থেকে সরিয়ে ফেলতে চাই, তত বেশি করে মনের মধ্যে আরো ভাল করে আসন নিয়ে বসে। এখানেই আমার পরাজয়। ভাল লাগে না। নিজেকে নিজের কাছে অসহ্য মনে হয়। কেন এমন লাগে। আমি কেন পারি না জয় করতে। একটা বৃত্তকে কেন্দ্র করে ঘুরছি, অথচ পারছিনা কেন্দ্রে পৌঁছতে, না পারছি বাধন ছিড়ে হারিয়ে যেতে।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×