somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

উন্মাদ বালক
পথহারা পথিকের মত আমি খুজে চলেছি স্বপ্নের গলি....স্বপ্নের গলির সন্ধান পেতে ছুটে চলেছি শহরের এ গলি থেকে ও গলি, এমন কি বাদ রাখিনি কানা গলি গুলোও। দিন শেষে বিষাদ আর ক্লান্ত দেহ নিয়ে ফিরে যাই আপন নীড়ে...

তুমুল বিতর্কিত শীর্ষ ১০ বলিউড ছবি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ২৬ আগস্ট তুমুল বিতর্কিত শীর্ষ ১০ বলিউড ছবির বৃত্তান্ত ছেপেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। ছবি গুলো হল-

ওয়াটার
দীপা মেহতা পরিচালিত ছবি ‘ওয়াটার’। ১৯৩০ সালের ভারতীয় বিধবাদের মানবেতর জীবনের কাহিনীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এই ছবিটি। কিন্তু ছবিটি শুটিংয়ের প্রথম দিন থেকেই বিড়ম্বনার সম্মুখীন হয়। গঙ্গা ঘাটে শুটিংয়ের প্রথম দিনেই দুই হাজার বিক্ষোভকারী এসে বাধ সাধে। তাদের ধারণা ছিল ছবিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত করবে। বিক্ষোভের মুখে থেমে যায় ছবির কাজ। এর পর শ্রীলংকায় ছবির শুটিং করা হয়। ছবির প্রধান চরিত্রে দেখা যায় শাবানা আজমি এবং লিসা রে-কে।

কিসসা কুরসি কা
শাবানা আজমি অভিনীত ‘কিসসা কুরসি কা’ ছবিটি ভারতের প্রথম তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা কোনো ছবি। এটি মুক্তি পায় ১৯৭৭ সালে। ছবিতে ভারতের তৎকালীন রাজনৈতিক সমস্যা এবং অনিয়মগুলোকে সরাসরি তুলে ধরা হয়। ব্যঙ্গ করা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে। এই ছবির একটি সংলাপ এমন ছিল যে, “স্যার, এই তরুণকে ছোট গাড়ি তৈরির লাইসেন্স দিয়ে দেয়া হোক, কারণ সে তার মায়ের পেট থেকেই এটা শিখে এসেছে।” এই সংলাপটি সঞ্জয় গান্ধী এবং সে সময়কার মারুতি প্রজেক্টকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল। ছবিটি মুক্তির পরই ফুঁসে ওঠে কংগ্রেস। সঞ্জয় গান্ধীর সমর্থকরা এই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করেই ক্ষান্ত হননি, তারা এই ছবিকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন এবং ছবির সব রিল, প্রিন্ট ও নেগেটিভ আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।

ফায়ার
দীপা মেহতার আরেক বহুল বিতর্কিত ছবি ‘ফায়ার’। ছবির গল্পটি ছিল সমকামী দুই নারীকে নিয়ে। এটিই সমকামীতার ওপর নির্মিত ভারতের প্রথম ছবি। সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে শুধুমাত্র চরিত্রের নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়ে একে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। কিন্তু মুক্তির পররই বাধে বিপত্তি। একটি রাজনৈতিক দল ছবিটিকে পেক্ষাগৃহে বেশি দিন চলতে দেয়নি।এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন শাবানা আজমি ও নন্দিতা।

যোধা আকবর
আশুতোষ গাওয়ারিকার পরিচালিত আলোচিত একটি ছবি ‘যোধা আকবর’। এই ছবিতে হৃত্বিক এবং ঐশরিয়ার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হলেও, ছবিটি চলে আসে বিতর্কিত ভারতীয় ছবির তালিকায়। কিছু ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক দল এই ছবির বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনে। তারা শুরু করে দেয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, এই ছবিতে আকবরের স্ত্রী হিসেবে যোধাকে দেখানো হয়েছে, যা সবচেয়ে বড় বিকৃতি। প্রকৃত অর্থে, যোধা ছিল আকবরের পূত্রবধূ। ছবিটি বক্স অফিসে লাভের মুখ দেখলেও, মাদ্রাস এবং মধ্যপ্রদেশে ছবিটি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

ব্ল্যাক ফ্রাইডে
বিতর্কিত কাহিনী নিয়ে তৈরি যে ছবি, তা বিতর্কিত কেন হবে না? ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ ছবিটি নির্মিত হয়েছে ১৯৯৩ এর ‘বোম্বে বোম ব্লাস্ট’ এর ঘটনার ওপর ভিত্তি করে। ছবিটি তৈরির পর দুই বছর ছাড়পত্রের জন্য পড়ে ছিল সেন্সর বোর্ডে। দুই বছর পর মুক্তির ছাড় পাওয়ার পরও আবার এসে আটকে যায় আদলতে। মুক্তির কিছুদিন আগে ছবিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ছবিটি মুক্তি না দেয়ার জন্য আবেদন করা হয় আদালতে। কিন্তু সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মুক্তি পায় ছবিটি এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া আসে দর্শক মহল থেকে।

আন্ধি
গুলজার পরিচালিত ‘আন্ধি ছবিটি ভারতের প্রথম ছবি যাকে ঘিরে সৃষ্টি সৃষ্টি হয় চরম রাজনৈতিক বিতর্কের। তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের কর্মীরা ছবিটির বিরুদ্ধে শুরু করে বিক্ষোভ। তাদের অভিযোগ ছিল, ছবিতে সুচিত্রা সেনের চরিত্রটি ইন্দিরা গান্ধির সঙ্গে মিলে যায়। এ ব্যাপারে গুলজার জানান, কিছু হলের মালিকরা ছবির প্রচারণার সময় এর বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন “আসুন ইন্দিরা গান্ধিকে পর্দায় দেখে যান।” এরপর ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনে ‘আন্ধি’র একটি দৃশ্যের ছবি প্রকাশ পায়, যা এই বিতর্ককে আরো বাড়িয়ে দেয়। ফলে মুক্তির ২৩ সপ্তাহ পর পুরো ভারতে ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়া হয়। অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয় ছবিটির প্রদর্শন আবার চালু করার জন্য। ছবিটি প্রধান অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন ইন্দিরা গান্ধির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে একটি বক্তব্য দেন, যা ওই ছবির একটি অংশে নতুন করে সংযোজিত হয়। এরপর ছবিটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

ব্যান্ডিট কুইন
ফুলন দেবী, ভারতে আলোচিত ডাকাত, যে কিনা পরবর্তীতে রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার জীবনী নিয়ে পরিচালক শেখর কাপুর তৈরি করেন ‘ব্যান্ডিট কুইন’। ছবিটি মুক্তির পরপরই ওঠে বিতর্কের ঝড়, যা ছিল অপ্রত্যাশিত। খোদ ফুলন দেবী ছবিটির সমালোচনা করেন। একে অসত্য এবং ভূয়া বলে আখ্যা দেন তিনি। তার সমর্থকরা শুরু করে দেন বিক্ষোভ। অন্যদিকে, আরেকটি দল ছবিটির অশ্লীলতা এবং নৃশংসতার প্রতিবাদে শুরু করেন আন্দোলন। বিক্ষোভের মুখে ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়া। পরে, কিছু অংশ কেটে তা আবার নতুন করে মুক্তি দেয়া হয়।

ফানা
২০০৬ সালের সবচেয়ে প্রতিক্ষীত এবং অন্যতম ব্যবসা সফল ছবি ‘ফানা’। এই ছবির মাধ্যমে দীর্ঘ বিরতির পর আবার নতুন করে বলিউডে ফিরে আসেন কাজল। ছবিটির গল্প নিয়ে কোনো বিতর্ক না থাকলেও বিতর্ক সৃষ্টি হয় আমির খানকে নিয়ে। অভিনেতা আমির খান সেসময় নর্মদা বাঁধের উচ্চতা বাড়ানোর বিরুদ্ধে সৃষ্ট আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় ‘ফানা’র জন্য। গুজরাটে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। সেখানে ছবিটিকে বয়কট করা হয়। পরে অবশ্য সরকার গুজরাটের পেক্ষাগৃহগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করলে ছবিটি মুক্তি দেয়া হয়।

সিনস
সিনস ছবিটি ক্যাথলিক অনুসারীদের রোষের মুখে পরে। ছবিটি কাহিনী তৈরি হয়েছে এক ক্যাথলিক ধর্মযাজক এবং এক তরুণীর প্রেমকাহিনী নিয়ে। বিক্ষেভকারীরা অভিযোগ করে, ছবিতে তাদের ধর্মকে নেতিবাচকভাবে দেখানো হয়েছে। পরে ছবির কিছু অংশ কেটে নতুন করে আবার মুক্তি দেয়া হয়।

মাই নেম ইজ খান
হিট টিম ‘করন-শাহরুখ-কাজল’ এর ছবি ‘মাই নেম ইজ খান’। ছবির কোনো অংশ, কাহিনী বা চরিত্র নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু শাহরুখ খানের একটি মন্তব্যে চটে যায় শিবসেনা। পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ‘ইন্ডিয়ান প্রিমিয়াম লিগ’ থেকে বাদ দেয়া নিয়ে একটি মন্তব্য করেন শাহরুখ। যা শুনে গরম হয়ে যায় শিবসেনার দল। তারা ছবির পোস্টার-ব্যানার নামিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়, কুশপুত্তলিকা দাহ করে, মিছিল, স্লোগান- কিছুই বাদ ছিল না। সংবাদের শিরোনাম হয়ে যায় ‘মাই নেম ইজ খান’। এমনকি শিবসেনারা প্রতিটি হলে হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠায়-যদি ছবিটি হলে প্রদর্শিত হয় তবে এর পরিণতি ভালো হবে না। পরে নির্ধারিত তারিখের তিনদিন পর সরকারি সহায়তায় নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে মুক্তি দেয়া হয় ছবিটি। বিতর্ক এবং বিক্ষোভের ঝড় মাথায় নিয়েও ছবিটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে দারুণ ব্যবসা করে। বিতর্কিত ছবির পাশাপাশি ভারতে সর্বকালের অন্যতম একটি ব্যবসা সফল ছবির তালিকায়ও নাম লেখায় ‘মাই নেম ইজ খান’ ছবিটি।

৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীবাদ, ইসলাম এবং আইয়ামে জাহেলিয়া: ঐতিহাসিক ও আধুনিক প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪



আইয়ামে জাহিলিয়াত (আরবি: ‏جَاهِلِيَّة‎) একটি ইসলামিক ধারণা যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী আরবের যুগকে বোঝায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সময়কাল ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×