somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-পৃথিবীর প্রাচীন রহস্য যা আজও সমাধান হয়নি (কত অজানা রে পার্ট-৩০)

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রহস্য ভালবাসে না এমন মানুষ দুনিয়াতে নাই। অতি প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ রহস্যের পিছনে ছুটছে। কিছু রহস্য মানুষ উদ্ধার করতে পারে, কিছু রহস্য মানুষ কখনোই উদ্ধার করতে পারে না। আজ তেমনি কিছু রহস্যের কথা বলবো। চলুন আপনাদের ঘুরিয়া আনি কিছু বহুল প্রচলিত রহস্যময় দুনিয়া থেকে।

১) The Lost City of Atlantis


হলিউড মুভিতে "সিটি অফ আটলান্টিস" এর কথা অসংখ্য বার এসেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রহস্য এটি। সময়ের হিসাবে তা প্রায় ১১,৫০০ বছরের প্রাচীন। এতো প্রাচীন রহস্য তাও মানুষ এটি সমাধান করতে পারে নি, তাহলেই বুঝেন কেমন রহস্য এটি।


এই রহস্য উদ্ধারের একটি সুএ আছে, যদি আপনারা কেও আটলান্টিস খুজতে আসলেই যান তারা খুব সহজেই আটলান্টিস পেয়ে যাবেন কারন এটি "in front of the Pillars of Hercules" অবস্থিত। এর আয়তন ছিল লিবিয়া আর এশিয়ার মিলিত আয়তনের সমান। এতো বিশাল একটা শহর মাএ একদিনেই ধ্বংশ হয়ে গেছে লেখকের ভাষায় "in a single day and night of misfortune"। কোন লেখকের কথা বলছি? জী তিনি বিখ্যাত এক্সপ্লোরার প্লোটো/প্লাটো।

(বি.দ্র. খুব অল্প লাইনে এর কথা লিখছি কারন আটলান্টিস নিয়ে একটা মেগা পোষ্টই দিব।)

২) The Bog Bodies


আচ্ছা বগ বডিস জিনিসটা কি আগে তা বলে নেই। মমি আর বগ বডিস কিন্তু এক না। মমি হলো সেই সব বডি যেগুলো বিভিন্ন ক্যামিকালের সাহায্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার প্রিজার্ভ করা হয় আর বগ বডি হলো প্রাকৃতিক ভবে যে সব বডি প্রিজার্ভ হয়ে থাকে।


Damendorf Man, Dätgen Man, Husbäke Man, Jührdenerfeld Man ইত্যাদি নামের হাজারের উপর বগ বডিস ছিল কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া মাটির নিচে যেখাবে প্রিজার্ভ ছিল আবিস্কারের পর সেভাবে আর প্রিজার্ভ করা হয় নাই। ফলে বর্তমানে মাএ ৪৫ টা বগ বডিস টিকে আছে।বগ বডিস মুলত জার্মানী, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও ডেনমার্কে পাওয়া যায়।



(আস্তে, এইটা নিয়েও একটা মেগা পোষ্ট দিব। সবুর করেন।)

৩) Jack the Ripper


“দ্য ফিফথ মোষ্ট অ্যামেজিং ক্রাইমস অভ দ্য লাষ্ট ফিফটি ইয়ারস” বইতে এক মাত্র জ্যাক দ্য রিপারের কোন ছবি নাই, অন্য সব অপরাধীদের ছবি আছে। জ্যাকের ছবির জায়গায় একটা বড় প্রশ্ন বোধক চিহ্ন দেয়া, এই একটা মাত্র কারনই আমকে কৌতুহলী করার জন্য যথেষ্ট। কে ছিলেন জ্যাক দ্য রিপার? অন্য সিরিয়াল খুনীদের চেয়ে এই একটা মাত্র প্রশ্নই জ্যাক কে করেছে রহস্যময়ী চরিত্র। জ্যাক কি ছিল কোন রাজপুরুষ? কোণ ছিচকে চোর? কোন পন্ডিত? এই না জানাই অন্য গনহত্যাকারীদের থেকে রিপার কে আলাদা করে রেখেছে।সে কতগুলো হত্যা করেছিল? এমন কি এটাও বিতর্কের বিষয়। আমরা কেবল এইটুকু জানি যে ১৮৮৮ সালের শেষ ভাগে সংগঠিত হয়েছিল অন্তত পাচঁটি নৃশংস খুন।তার মধ্যে চারটে লন্ডনের হোয়াইটচ্যপেল জেলায়, রাতের বেলায়, শিকারদের সবাই ছিল দেহপপোজীবি, যদিও তারা কেঊ পেশাদার ছিল না। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল পুরো লন্ডনে, রাস্তায় রাস্তায় মিটিং বসল, হোয়াইট চ্যাপেল রাত পাহারা দেবার জন্য দল গঠন করল নাগরিকরা। হাজার হাজার মানুষকে জেরা করে অবশেষে ছেড়ে দেয়া হল, কালো ব্যাগওয়ালা অনেকের ওপর জাপিয়ে পড়ল জনতা, চাকুরীতে ইস্তাফা দিল পুলিশ কমিশনার।


এক মাসের ও বেশি শান্ত থাকার পর আবার আঘাত হানল রিপার, বিশ পেরুনো একটি মেয়েকে কেটে টুকরো টুকরো করে সারা রুমে এমন ভাবে ছড়ানো হল যেন জিগস স পাজল। পরবর্তী বছর ১৮৮৯ সালে হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় আরো দুটি খুন হল দুজনেই পতিতা, কিন্ত আমরা কোনদিনই জানতে পারব না এই দুই হত্যার জন্য রিপার দায়ী কিনা।


১৮৮৮ সালে জর্জ বার্নার্ড শ সাংবাদিকদের কাছে একটা চিঠি লেখেন যে আসলে হত্যাকারী একজন সমাজ সংস্কারক যে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করতে চায় ইষ্ট এন্ডের সামাজিক অবস্থার ওপর। চুপি চুপি বলে রাখি আমদের এই বার্নার্ড শ কিন্ত রিপার সন্দেহে অনেক গবেষকের তালিকায় আছে।

(বি.দ্র. ব্লগার শের শায়রী এর পোষ্ট থেকে পুরোপরি কপিপেস্ট। তার লেখা “মিষ্ট্রিয়াস রেপিষ্টঃ জ্যাক দ্য রিপার” আনসলভড মিষ্ট্রি পোষ্টে বিস্তারিত পাবেন। শের শায়রী ভাই, জ্যাক দি রিপার এর এই তিনটা ছবি একদম জেনুইন। আপনার পোষ্টে ব্যবহার করার অনুরোধ রইলো।)

৪) Stonehenge


এইটা ২৫০০-৩০০০ বছরের পুরান একটা রহস্য। কে বা কারা এটা কেন বানিয়েছে তা আজও অজানা। ধারনা করা হয় এই চক্রটা ব্যবহার করা হতো আহত সন্যদের আরোগ্য লাভের ট্যাম্পল হিসাবে। (বিভিন্ন গেমে কিন্তু এটা দেখা যায়) অনেকে বিশ্বাস করে এটা একটা বিমানবন্দর, অবশ্যই এলিয়েনদের যান নামানোর জন্য। তবে যে মতবাদটি সবচেয়ে বেশী গ্রহনযোগ্য তা হলো এটি একটি সেক্রিফাইস বেদী বা মন্দির মানে এখানে বলি দেওয়া হতো কিন্তু কারা এটা ব্যবহার করতো এই প্রশ্নটা আনসলভ থেকে যায়।


যাই হোক, এবার আসি এর গঠনশৈলীতে, সমতল ভূমির প্রায় ৮ মাইল উত্তরে স্টোনহেঞ্জ অবস্থিত। এতে বৃত্তাকারে বড় বড় দণ্ডায়মান পাথর রয়েছে, সার্কেলের ভিতরে যে কয়টা ব্লুস্টোন আছে তার প্রতিটির ওজন নিখুতভাবে ৬ টন এবং এগুলোর চতুর্দিকে মৃত্তিকা নির্মিত বাঁধ রয়েছে। স্টোনহেঞ্জের গঠন খানিকটা জটিল। এর বাইরের দিকে একটি বৃত্তাকার পরিখা রয়েছে। প্রবেশপথটির কিছুটা দূরেই রয়েছে মাটির বাঁধ। এ বাঁধের ভেতর চতুর্দিকে বেষ্টন করে আছে ৫৬টি মৃত্তিকা গহ্বর। পাথরগুলোর মধ্যে আরও দুই সারি গর্ত বেস্টন করে আছে। পাথরগুলোর গঠনের মধ্যে আছে দুইটি বৃত্তাকার এবং দুইটি ঘোড়ার খুরের নলের আকারবিশিষ্ট পাথরের সারি। এ ছাড়াও কতগুলো পৃথক পাথর রয়েছে অলটার স্টোন বা পূজা বেদীর পাথর বা শ্লটার স্টোন বা বধ্যভূমির পাথর।



৫) King Arthur


কিং আর্থার ছিল উথার পেনড্রাগনের ছেলে, যে গ্রেট ব্রিটেনের উপকথার একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। সেখানে সে যুদ্ধ জন্য এবং শান্তির জন্য একজন আদর্শ রাজার চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। ইতিহাস অনুসারে তিনি ছিলেন একজন রোমান এবং মধ্যযুগের কিংবদন্তির ব্রিটিশ নেতা, যে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর আগের স্যাক্সন আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের প্রতিরহ্মার নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এইটি ব্রিটেনের বিষয়ের প্রধান চরিত্র (ব্রেটোন এবং আর্থারিয়ান চক্র), যদিও আর্থারের সম্বন্ধে মতানৈক্য আছে, ধারনা করা হয়, কিং আর্থার একটি আসল মানুষের জীবনীতে গড়ে ওঠা কাল্পনিক চরিএ, যিনি সত্যিই ছিলেন।" কিং আর্থার" মুভিটা কিন্তু আমরা অনেকেই দেখেছি।


কিং আর্থার, তার মেজিশিয়ান,Merlin ও গোলটেবিলের নাইট- এই নিয়েই মিথ গড়ে উঠেছে। মিথ আরো বলে যে তার সোর্ডটা নাকি পাথরের ভিতর আটকানো ছিল। ৬ষ্ট শতাব্দীতে তিনি ইংল্যান্ড, আইয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও গল রাজ্য জয় করেন। ইতিহাসবীদদের মতে, ২য় শতাব্দীর রোমান কমান্ডার Lucius Artorius Castus ই আসলে কিং আর্থার। টাইম মেশিন তৈরি না হলে এই রহস্যের সমাধান করা সম্ভব না মনে হচ্ছে।



(চলবে...)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৯
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যারিস্টার সুমন দায়মুক্ত , চু্ন্নু সাহেব কি করবনে ?

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ০৮ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৭


দেশে প্রথম কোন সংসদ সদস্য তার বরাদ্ধের ব্যাপারে Facebook এ পোষ্ট দিয়ে জানিয়ে থাকেন তিনি কি পেলেন এবং কোথায় সে টাকা খরচ করা হবে বা হচ্ছে মানুষ এসব বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×