মিশরের রাজধানী কায়রোয় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিক্ষুব্ধ সমর্থকদের সঙ্গে রাতভর নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ।
Published : 16 Jul 2013, 06:07 AM
মিশরের জরুরি সেবা সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ সুলতান মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন।রয়টার্সকে তিনি জানান, কায়রোর কেন্দ্রস্থলে একটি ব্রিজের কাছে নিহত হয়েছে দুইজন।আর রাজধানীর গিজা এলাকায় নিহত হয়েছে আরো ৫ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম বার্নসের মিশর সফরকালে এ সংঘর্ষ হল।মিশর কর্তৃপক্ষ এ লড়াই-সংঘর্ষে ৪০১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।আবার নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় দেশটিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা গঠনের প্রক্রিয়া।
মঙ্গলবার ভোরে মুরসি সমর্থকরা নীল নদের সেতু অবরোধের চেষ্টাকালে স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় মুরসি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশেরও সংঘর্ষ হয়।
এর আগে, সোমবার রাত ৯টার পর থেকে মুরসি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বিক্ষপ্ত সংঘর্ষ চলছিল।
গত ৩ জুলাই মিশরের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মুরসিকে সেনাবাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করে। পরবর্তীতে এর জের ধরে সৃষ্ট ব্যাপক সংঘর্ষে ৯২ জন নিহত হয়।
এরপর এক সপ্তাহ মোটামুটি শান্ত থাকার পর আবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। কায়রোর অন্যতম পর্যটন এলাকা মিশরীয় জাদুঘরের সামনেও সংঘর্ষ হয়েছে।
কাঁদুনে গ্যাস থেকে রক্ষা পেতে মুখ বেঁধে তরুণ-যুবকরা পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে মুরসির পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল, মাঝে মাঝে “আল্লাহু আকবর”ও বলছিল তারা।
৩০ জুনের মুরসিবিরোধী যে সমাবেশের জের ধরে সেনাবাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাতে অংশগ্রহণকারী অনেকেই চলমান পরিস্থিতিতে হতাশ।
সেনাবাহিনীর দাবি, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে; এর বিপরীতে মুরসি সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুডের দাবি, পরিস্থিতির সুযোগে সেনা অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ৩৪ বছর বয়সী কম্পিউটার প্রকৌশলী আলা আল দিন বলেন, “সেনাবাহিনী জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”
রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে মিশর ক্রমেই গভীরভাবে পরস্পরবিরোধী শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি বিষয়ে ইসলামপন্থী ও উদারপন্থী-বামপন্থী শিবির একই জায়গায় অবস্থান করছে, যুক্তরাষ্ট্রকে গভীরভাবে অবিশ্বাস করছে তারা।
প্রতি বছর মিশরকে দেড়শ’ কোটি ডলারের সহায়তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রধান সুবিধাভোগী মিশরের সেনাবাহিনী।