কয়েকদিন ধরেই কথাটা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বশীর তালুকদার। কিন্তু সাহসে কুলোচ্ছে না। এমনিতে সে সাহসী মানুষ। তবে এই বিষয়টাতে সে কেমন যেন দুর্বল বোধ করে নিজের ভেতর। কথাটা শোনার পর সুমিত্রার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা একবার ভেবে নেয়। না, সেখানেও কোন আশার আলো দেখা যায়না। তবু সে বলবে। তাকে আজ বলতেই হবে। এই ছোট্ট কথাটার দুঃসহ ভার সে আর বইতে পারছে না।
একটা সার্কাসের দলে কাজ করে বশীর। বেশ কঠিন একটা খেলা সে দেখায়। ছুরি ছোঁড়ার খেলা। তার খেলা দেখানোর সময় দর্শক যেন রুদ্ধশ্বাস হয়ে থাকে। কাঠের পাটাতন পেছনে রেখে দাঁড়িয়ে থাকে একটা মেয়ে। আর চোখ বাঁধা অবস্থায় কিছুটা দূরত্বে ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে থাকে বশীর। মেয়েটার গা বাঁচিয়ে বশীরের হাতের ছুরিগুলো একটা একটা করে গিয়ে বেঁধে কাঠে। সাত বছর ধরে সে এই ভয়ংকর খেলা দেখাচ্ছে। কখনও তার ল্যভ্রষ্ট হয়নি। দলে তাই তার বেশ সুনাম রয়েছে।
কিন্তু সেসবের কিছুই এখন তার ভালো লাগছে না। তার মনে বয়ে চলেছে অদৃশ্য এক ঝড়। এই ভোর বেলাতে ঘুম ভাঙ্গার পর আবারও সেই কথাটাই তার প্রথম মনে এসেছে। এই অদ্ভুত ব্যাপারটার মাথামুন্ডু সে নিজেই খুঁজে পায় না। লোকজনকে কিভাবে বোঝাবে। খেলার সময় কালো কাপড়ে শক্ত করে তার চোখ বাঁধার পরও সে কাঠের পাটাতন পেছনে রেখে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটা মানে সুমিত্রাকে স্পষ্ট দেখতে পায়। অথচ চারপাশের আর কোন কিছুই তার চোখে পড়েনা। মাস ছয়েক আগে সে প্রথম ব্যাপারটা আবিস্কার করে। তার যতদূর মনে পড়ে, আগে কখনও এমন হয়নি। তাহলে হঠাৎ কেন এমন হতে শুরু করল? বিষয়টা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তার মাথাটা আরও এলামেলো হয়ে যায়। এখন সে যেখানে আর যে অবস্থাতেই থাকুক চোখের সামনে সুমিত্রাকে দেখতে পায়। মনে হয় সুমিত্রা যেন তার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
[আমার একটা গল্পের শুরুর অংশ। কেমন হচ্ছে বলুন তো? মত ধনাত্নক হলে বাকি অংশ পোস্ট করা যাবে।]
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৫