অফিসে কাজ করছিলাম, নিউজ করছিলাম ফিলিস্তিন নিয়ে। অনেক কিছু ভাবছিলাম , হঠাত করে অনুভব করলাম আমার চেয়ার টা কাপছে। কলিগ চিতকার করে বলে উঠলো ভুমিকম্প ভুমিকম্প । দেখি বিল্ডিঙ কাপছে ধুলছে।আমার অফিস ৯তলা । কি করবো বুঝতে পারছিলাম না । লিফটে নামবো নাকি সিড়িতে ।নাকি নিচে নামবো না । ভাবতে ভাবতে দেখি নিউজ এডিটর দৌড়ে সিড়ির দিকে যাচ্ছে। একজন মহিলা কলিগের দেখলাম চেয়ারে বসে আছে কি করবে বুঝতে পারছেনা মনে হয় । আরেক কলিগ দেখি পিলার ধরে দাড়িয়ে আছে ।আমি সিড়ির দিকে গেলাম । নামছি নামছি তো নামছি মনে হচ্ছে শেষ হচ্ছেনা অনেক লোক এক সাথে নামলে যা হয় কার আগে কে যাবে । আমার সামনে দেখি নিউজ এডিটর ।ভাবছিলাম তাকে অতিক্রম করা ঠিক হবে কিনা, কিসের কি তাকে পিছনে ফেলে সিড়িতে নামতে লাগলাম। কেমন জানি একটা মিশ্র অনুভব আমি কেনো নামছি তা বুঝতে পারছিনা কিন্তু আমাকে নামতে হবে । হা পা কেমন জানি একটু অসাড়তা জড়িয়ে আছে । এর মধ্যে মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে নিজের পিছনের কৃতকর্মের হিসাব নিকাশ, সিদ্ধান্ত মরা যাবে না কারন অতীতের হিসাবের খাতা বড়ই জটিল । সিড়িতে নামছি অনেকের হা হুতাস শুনছি । যে যার মতো নামছে, কেউ কারো জন্য না । নেমে আসলাম, ফাকা জায়গা গিয়ে দাড়ালাম, কিন্তু ঢাকার ফাকা জায়গা কোথায়, ভাবছি বিল্ডিঙ মাথায় পড়ে কিনা । এক তলা একটি বাড়ির সামনে দাড়ালাম, রাস্তায় সব মানুষ। রাস্তায় মানুষ আর মানূষ । পাশে একটা গার্মেন্টস এখনো কেউ নামতে পারে নাই । কলিগদের মুখে চিন্তারন ছাপ সবাই ফোন দিচ্ছে । পকেটে হাত দিয়ে দেখি মোবাইল মানিব্যাগ কিছুই নাই , মনে মনে ভাবছিলাম মৃত্যু কি ? সবকিছু ভুলে গেলাম । আমাদের অফিসের ১৫ তলা থেকে নেমে মোটামুটি বিধ্বস্ত । বলছে ভাই আমার পেরেশার বেড়ে গেছে আমাকে একটু হেল্প করেন। কে কার কথা শুনে। প্রথম কার কথা মনে পড়লো কারো কথা নয় শুধূ ভাবছি মারা গেলে কি হতো । গার্মেন্টস থেকে মানুষ নামছে নামছে চিতকার চেচামেছি। এতো পড়ে নামছে হায়রে বাঙলাদেশ । আশে পাশের সব অফিস থেকে মানুষ নেমে রাস্তায় । কতো কথা, কতো মন্তব্য। .......মনে পড়লো বড় ভাইয়ার কি খবর নেয়া দরকার । কিন্তু নাম্বার মনে নেই । মা বাবা আশা করি ভালো আছে। এর আগে কখনো মৃত্যু নিয়ে ভাবিনি বা অনুভব করার সুযোগ আসে নাই ..কেমন ফাকা ফাকা লাগছে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না ....পাশে একটা বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র......বুড়োদের অবস্থা দেখে আরো নিজেকে একা মনে হলো ........... ...এক কলিগ বললো চা খাই , চা খেলাম, একটু ভয় কাটলো । একজন দেখি বউয়ের সাথে রীতিমতো ঝগড়া করছে কেনো বাড়ির বাইরে নামলো না । এক কলিগের দেখি তার মায়ের সাথে কথা বলছে । আমি পর্যবেক্ষন করছি । আহরে মানুষ এতো ভীতু, কেনো তাহলে আমরা বড়াই করি । রাস্তায় একজন বলছে জাপানের মতো হলে এ ঢাকা কে পরিত্যক্ত ঘোষনা করতে হতো কতো কতো কথা । সবাই বিশেষজ্ঞ । ................যুগ্ন নিউজ এডিটর বলছে সে আর অফিসে উঠবেনা শেষ পর্যন্ত বাড়ি চলে গেলো .............আবার কাজে ফিরে আসলাম,...কাজ করছি ..................হায়রে মানুষ কত জটিল ...............তার চরিত্র
আলোচিত ব্লগ
=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ফিরে দেখা - ১৩ মে
১৩ মে ২০০৬
দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন