নিজের রয়েছে সবকিছু- জায়গা-জমি, খাল-বিল, নদ-নদী, সমুদ্র ,খনিজ সম্পদ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। কিন্তু ঐ সব ব্যবহার করার যদি সুবিধা বা অধিকার না থাকে তা হলে বলুন তো কি মনে হবে? একটি দেশ পরিচালনার মতো ক্ষমতা ও দক্ষতা রয়েছে এবং আরো রয়েছে পর্যাপ্ত সম্পদ। শুধু কি তাই, তাহাদের রয়েছে জাতিগত ঐতিহ্য, সাহিত্যে-সংস্কৃতিসহ সম্পূর্ন একটি সভ্যতার ইতিহাস। মানব সভ্যতা নিয়ে কথা বলতে হলে তাদের অবদানকে স্বীকার করতেই হবে। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত ঐ এলাকা ভ’মিকা রাখছে সমান তালে চারদিকে। ওরা এক এবং একা লড়ে যাচ্ছে, যে লড়াই কয়েক প্রজন্ম থেকেই চলে আসছে। সবকিছু থাকার পরও ওরা উদাস্তু, ওরা নিজ দেশে প্রবাসী। আপন ঘরে সন্ত্রাসী, নিজের কাছে ওরা দেশদ্রোহী, আপন পরিচয় বহনে সক্ষম হওয়া সত্ত্বে ও অক্ষম এখন তাহারা। তাহাদের চোখের সামনে স্বাধীন হচ্ছে দেশের পর দেশ, গড়ে উঠছে স্বাতন্ত্র জাতি সত্ত্বা। বিকাশিত হচ্ছে সভ্যতা ধ্বংস হল স্বৈরাচারী শাসকদের। পতন হল অন্ধকার যুগ সমাজতন্ত্রের। বিপ্লবের পর বিপ্লব হতে হতে সমগ্র পৃথিবী কম্পমান। পুজিবাদী সম্রাজ্য এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থানে। তবু তাদের পক্ষে কোথাও কেউ নেই অবস্থা। অথচ তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বলতে গেলে গোটা মিটিয়া রাজ্যকেই তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের পর দেশকে তাহাদের বিপক্ষে দাঁড় করানো হচ্ছে। কিন্তু তাদের পক্ষ নিয়ে কেউই এগিয়ে আসেনি। এমন কি ভয়ে তাদের আশ্রয় তো দূরে থাকুক কথা পর্যন্ত শুনেনি, অনেকেই ঘরে বাইরে নির্যাতিত। এমন কোন হিংস্র আচরণ নেই যা করা হচ্ছে না তাদের সাথে। মা-বোনদের সাথে আচরনকে কি বলে আখ্যা দেওয়া যায় তা আমি খুঁজে পাই না। ধর্ষণের কবল থেকে পাঁচ বছরের শিশু পর্যন্ত রেহাই পায়নি। তাদের বর্বরতা ইতিহাসের জঘন্যতম নির্মমমতাকেও হার মানিয়েছে। গর্ভবতী মহিলাকে মাঝ রাস্তায় ফেলে দিয়ে পেটের উপর বুট দিয়ে চাপ দিয়ে গর্ভপাত ঘটিয়ে বাচ্চাকে কুকুড় দিয়ে খাইয়েছে। মা ও শিশুকে এভাবে হত্যা করে নিশ্চিহৃ করতেছে প্রজন্মকে। মেয়ে শিশুদের জন্মের পর থেকেই বন্ধ্যা বানাচ্ছে। যাহাতে তাহারা কোনদিনই সন্তান ধারণ করতে না পারে সে জন্য শিশু থেকেই ছেলে হোক বা মেয়ে হোক তাদের ইনজেকশনের মাধ্যেমে পঙ্গু করে রাখছে। দখলদার সৈন্যদের কথা হচ্ছে অন্যতম মিশন। আমার জানা মতে বিশ্বের জঘন্য সৈন্য বাহিনী যে আচরণ করে তা কাশ্মিরে ইন্ডিয়ানদের বর্বরতা। ইন্ডিয়ান সেনা বাহিনীন কুকর্ম যা জেনে এসেছি তাহাকেও হার মানালো ফিলিস্তানি জবর দখলকারী কুখ্যাত ইসরায়েলী সেনা বাহিনী। আমরা ফেইসবুক বন্ধু রাহা ফিলিস্থানের ব্যাপারে অবগত না করালে তা ও জানতে পারতাম না। বিভৎস এইসব ছবি দেখা মাত্রই আতকে উঠতে হয়। কাল্পনিক ভুতের ছবি দেখে যে রকম মজা অনুভব করে কিশোর-কিশোরীরা তেমনি ইসরায়েলেরও পশুসম সৈন্যরা নির্যাতন করে উন্মত্ত্বতায় মেতে উঠে দলগত ভাবে। আমি এ পর্যন্ত ব্যক্তিগত অনুসন্ধানে যতটুকু জেনেছি তাহাতে যে চিত্র ফুঠে উঠেছে তাহাতে আমার মনে হয়েছে ফিলিস্তানের নারী ও শিশুদের উপর তাহাদের জবর দখলকারী কুখ্যাত ইসরায়েলিরা এতই শক্তিশালী যে তাহারা কোন রাজনীতির দ্বার ধারে না। তাহাদের কোন ভাবেই কথা শুনানো যায়নি। বিশ্বমোড়লেল ছত্রছায়ায় ওরা ধরাকে সড়া মনে করে মন যা চায় তাই করে যাচ্ছে। কিন্তু লড়াকো জাতি ফিলিস্তিনিরা হার মানেনি। তাহারা নত হয়ে যায়নি বিশ্ব শক্তিধর হায়েনাদের সামনে। তাদের দমিয়ে রাখা যায়নি কষ্টরোধ করে বিশ প্রয়োগে তাদের নেতা-নত্রীদের হত্যা করেও দাবিয়ে রাখতে পারেনি বিশ্বশক্তি। তাদের একই কথা একই আওয়াজ হয়তো মরবো নয়তো লড়ব। যতদিন একবিন্দু রক্ত শরীরে থাকবে একাই লড়ে যাব। অধিকার ফিরে পেতে তাদের এই আপ্রাণ চেষ্টা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। দখলদারদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে চালিয়ে যাচ্ছে সংগ্রামী জীবন যাহারা তাহারা ধর্ণা দিচ্ছে বিশ্বের দ্বারে দ্বারে। তাদেরকে স্বাধীন জাতি স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে একটি পতাকাকে মর্যাদা দিতে। একটি পাসপোর্টকে সম্মান জানাতে খুবই কাতর ও সভ্যভাবে আবেদন জানাচ্ছে, বলছে বিণীতভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকার করুন, স্বীকৃতি দিন। আমাদেরকে ওরা জবর দখল করে রাখছে, ছিনিয়ে নিয়েছে আমাদের জাতিসত্ত্বা, আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের উদাস্তু শিবিরে থাকতে হচ্ছে দিন ও রাত। আমাদের জাতিসত্ত্বাকে নিশ্চিহৃ করে দিতে চায়। অপপ্রচারে ভুল না বুঝতে তাদের ফরিয়াদ এখন সর্বত্র ঘুরপাক খাচ্ছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর তাদের সেই অঅবেদন জাতিসংঘের অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। এ পর্যন্ত ১১২টি দেশ তাদেরকে খোলাখোলি ভাবে সমর্থন দিবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখন ও কিছু স্পষ্ট করে বলেনি বলে বিশ্বস্ত সুত্রে প্রকাশ। জাতি সংঘের মাধ্যেমে বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। জাতিসংয়ের বিশেষ অনুরুধে শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে ভুমিকা রাখছে। তাছাড়া মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশ এখনো ভাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে পরিচিত। ফিলিস্তানিদের সুখে-দুঃখে ব্যথিত হয়ে পাশে দাঁড়ানো এখণ খুবই প্রয়োজন। বাংলাদেশীদের কাছে যাতনা কি জিনিস তা অপরিচিত নয়। পাকিস্তানের শাসন শোষণ থেকে মুক্ত হতে যে কি কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তার জলন্ত সাক্ষি এখনও বিদ্যামান। এবং আজ-অবদী নিপিড়িত হচ্ছে দানব প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার কাছে হাজার ছড়িয়েছে কবে, ফালানি তারে ঝুলছে লাখে লাখে। সুতরায় অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোই হবে সময় উপযোগী পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে সরকারের ভুমিকা আমরা আশা করছি।
সাথে সাথে আমি বৃটেন সরকারের কাছে অনুরুধ রাখবো (যদিও গ্রেট বৃটেন দখলদার ইসরায়েলীদের দোসর, এবং এখনো ইসরায়েলীদের সাথে রাজনৈতিক, সামাজিক, কুটনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সর্ববিধ বন্ধুত্ব বিদ্যামান) তথাপি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করুন। এবং স্বরণ করুন বৃটিশ এম্পায়ারের একে একে ধ্বংসের কথা। শত শত বৎসর জুলুম, শাসন, শোষণ, নির্যাতন চালিয়েও আপনাদের শেষ রক্ষা হয়নি। আপনারা পারেনি আপনাদের দখল দায়িত্ব ঠিকিয়ে রাখতে। আপনাদের দুনিয়াজোড়ে কুকর্ম এখণ সভ্যতার জগতে দৃষ্টান্ত, তাই এখনো সময় আছে ভুল স্বীকার করে ফিলিস্তিনিদের স্বীকৃতি দিন। নতুবা দুনিয়া জুড়ে আন্দোলনের যে প্রসব ব্যথা শুরু হয়েছে তাহাতে আপন ঘরেই কিনা জন্ম হয় অগ্নিপাত। তাই অনেকদিক বিবেচনা করেই জোড়ালো ভাবে বলছি ফিলিস্তিানিদের স্বীকৃতি দিন, স্বীকার করুন অন্তত তাদের অস্তিত্ব।
বিনীত
চৌধুরী হাফিজ আহমদ
কভেন্ট্রি
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ ভোর ৫:৩৭