somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অমিমাংসিত গল্প ....

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে রাখি এই কাহিনীর সাথে বাস্তবের সম্পূর্ন মিল আছে।
গল্পের নায়ক, অভ্র। অংক করতে গেলে যেমন কিছু ধরে নিতে হয়, এখানেও আমাদের কিছু ধরে নিতে হবে। প্রথমেই যা ধরতে হবে তা হলো, মাউস। যা গল্পের বাকী অংশ পড়তে কাজে লাগবে। তারপর মনেকরি, অভ্রের ফেসবুক দক্ষতা খুব বেশী নাহলেও একেবারে কম না। এবং ফ্রেন্ডস লিস্টে ফ্রেন্ডদের সংখ্যাও মোটামুটি।
এখানে অভ্রের চার জন বন্ধু আছে, আসিন, মনিকা, জেসমিন। আর একজন অনামিকা হয়েই থাকবে, কার তার কোন ভুমিকা এখানে নাই। নাম দেখেই বোঝা যায়, এরা সবাই মেয়ে।
অভ্রের সাথে এদের বন্ধুত্ব ফেসবুক থেকেই। তবে মনিকা অভ্রের সাথে একই ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, ভিন্ন ডিপার্টমেন্টে। বাকিরা মনিকার বাল্য বন্ধু। মনিকার মাধ্যমেই বাকিদের সাথে পরিচয়।
পড়ালেখার জন্য আসিন বিদেশে থাকে। মাঝে মধ্যে দেশে আশে। অভ্রের বাড়ি থেকে আসিনের বাড়ি খুব বেশী দূরে নয়। সে প্রায়ই ওখানে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যায়। তো, একবার আসিন দেশে ফিরল। সে অভ্রের সাথে দেখা করার ইচ্ছা পোষন করল। যেদিন সে অভ্রের সাথে দেখা করতে চাইল তখন অভ্রের ইউনিভার্সিটিতে তার জুনিয়র ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন হচ্ছিল। অভ্রের মনে তখন অন্যরকম আনন্দ। নিজেকে তখন প্রথম সিনিয়র সিনিয়র ভাবছে সে। তাই আরও বেশী সিনিয়র দেখানর জন্য কিছু আজব পোশাক পড়ে গেল। তার ধারনা এই রকম অদ্ভুত পোশাক পড়লে তাকে আরো বেশী সিনিয়র মনে হবে।
ওরিয়েন্টেশন নিয়ে যখন দৌড়াদৌড়ি তখন আসিন ফোন করল। অভ্র ইছা করেই ফোনে মিথ্যা বলে দিলো। সে বলল সে তখন বাসায়। আসিন বেচারি কষ্ট পেয়ে তাকে আর ফোনই করল না। অনেক্ষন আসিনের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে অভ্রই ফোন দিল। আসিন তাকে জানালো যদি সে তাদের সাথে ঘুরতে চায় তাহলে তার বলে দেওয়া জায়গায় যেন অভ্র যায়। কিন্তু অভ্র ঠিক করল যে সে ইউনিভার্সিটি থেকে বের হবে না। তাই তাদেরই ফোন করে আসতে বলল। তবে আসিন ইউনিভার্সিটিতে আসতে চাইল না। এটা শুনে অভ্র রাগে তার দুইটা ফোনের একটা বন্ধ করে রাখল। কিছুক্ষন পর তার অন্য ফোনে মনিকা ফোন দিল। অভ্র হঠাত মনিকার ফোন পেয়ে একটু অবাকই হলো। সে ফোনে জানালো তারা তখন ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীতে অবস্থানরত, যদি অভ্র চায় তাহলে দেখা করে আসতে পারে। অভ্র কিছুক্ষন ভেবে লাইব্রেরীর দিকে গেলো। অপরিচিত কারো সাথে দেখা করতে গেলে তাকে দূর থেকে চিনে তাকে না জানিয়েই পাশে বসে তাকে অবলোকন করাটা অভ্রের পুরান অভ্যাস বা কুঅভ্যাস। এই পদ্ধতিতে সে একবার মনিকার বয়ফ্রেন্ডকে চরম লজ্জা দিতে সক্ষম হয়ে ছিল। আসলে অনেকক্ষন ধরে কারো দুর্নাম করার পর যদি দেখা যায় লোকটি তার পাশেই বসে, তাহলে যা হয় আর কি।
তো লাইব্রেরীতে ঢুকেই সে চারজন মেয়েকে দেখতে পেল। মনিকার সাথে যেহেতু, তাই এদের সাথেই দেখা করার কথা অভ্রের। তবে মনিকা বাদে বাকি তিন জনই অপরিচিত। তাই এতগুলো অপরিচিত মুখ একবারে চিনতে হবে ভেবে একটু ধাক্কা খেলো মনে মনে। তারপর আসতে করে মনিকাকে কিছু না বলার ইশারা করে উপরে চলে গেল। মনিকা সেটা দেখেছিল কিনা কে জানে। উপর থেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে পাশে বসতেই জেসমিন আচমকা “হাই অভ্র” বলে উঠল। অভ্রও হাসি মুখে ধাক্কাটা সামলে নিলো। অবশ্য আসিন পুরো সময়টাতেই অন্যদিকে মুখ করে ছিল। তাই তাকে দেখতে পারেনি অভ্র। হঠাত সেও উঠে অভ্রকে হাই বলে দিল। তারপর উদ্ভোদনী কিছু কথা হল। তবে একটা ছেলে আরর কয়েকটা মেয়ে এক জায়গায় হলে মেয়েগুলা নিজেদের মধ্যে কথা বলে, আর ছেলেটা আকাশ, পাখি এইসব দেখে, সেটা হয়ত অভ্রের জানা ছিল না। সেখানে কিছুক্ষন থাকার পর সিদ্ধান্ত হল তারা সবাই নিউমার্কেটে যাবে। অভ্র যেতে চাইলে না। তবে আসিনের কথা ফেলতেও পারল না। তাই তাদের সাথে যেতে রাজি হল। ঠিক হল তারা নিউমার্কেটে তাদের পুর্বপরিচিত এক দোকানে খাবে। কিন্তু নিউমার্কেট কয়েকবার ঘুরেও তারা দোকানের হদিস করতে পারল না। কয়েকবার ঘোরার পরে পেল সেই দোকান। সেখানে খাবার অর্ডার করা হল। খেতে গিয়ে অভ্র পড়ল বিপাকে। চারজনের টেবিলে পাঁচজন বসায় তার প্লেটটি যে প্রায় পড়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়ালই করে নি। তাই কাটাচামচের জোর গুতোয় প্লেট উল্টিয়ে পড়তে গিয়েও পড়ল না। এতে চরম লজ্জায় পড়ে গেল বেচারা। তবে জেসমিনের সহজগীতায় প্লেটটা ঠিক করে নিল। সেখান থেকে বের হয়ে অভ্র ঠিক করল চলে যাবে। কিন্ত ওই আবার আসিনের কথার খোচায় থেকেই গেল। পাশে একটা বড় শপিংমল ছিল। এখন তাদের গন্তব্য ওখানেই।
শপিং মলে যাবার পথে কিছু ভিখারী ওদের ঘিরে ধরলো। তাদের একটার হাইট প্রায় অভ্রের অর্ধেক। বাচ্চাটি অভ্রের কাছে এসে আঙ্গুল ফুটানোর ছলে এমন জোরে আঙ্গুল ধরে টান দিল, যে আঙ্গুল ভাঙ্গে ভাঙ্গে অবস্থা। ওদের অবস্থা দেখে মনিকা আর অনামিকা এগিয়ে আসে। অনামিকা এসে অদের সাথে কথা শুরু করে দিল। কি করে? কেন করে? এই সব প্রশ্নে ওদের ব্যস্ত করে দিতেই আসিন ও জেসমিন, অভ্রকে নিয়ে ওখান থেকে সরে পড়ল। গন্তব্য মল।
কিন্তু যেতে যেতে অভ্র খেয়াল করল তার সাথে শুধু আসিন আর জেসমিন আছে। মনিকা আর অনামিকা নেই। তারা নিজেদের মত নিউমার্কেটের ছায়া যেখানে যেখানে পড়েছে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই বিষয়টা অভ্রকে ভাবিয়ে তুলল। যেন তার এই আসা টা মনিকা আর অনামিকার ভালো লাগছে না। মনিকা হয়ত ভাবতে পারে নি যে তাদের চারজনের মধ্যে এই রকম একটা দুর্যগের আগমন হবে। তবে আসিন ঐ দুই জনের সাথে অভ্রকে কথা না বলার জন্য অনুরোধ করল। যদিও সেটা নিতান্তই ইয়ার্কির ছলে। জেসমিন ও সেটাতে সায় দিল।
তারপর মল এ ঢুকল ওরা তিনজন। ঢুকতেই বেচারা অভ্র আরেকবার লজ্জিত হলো। মলের ভেতরে ব্যাগ নিয়ে ঢোকার নিয়ম নেই সেটা তখনও টের পায়নি। পরে গার্ডের কথা মত ব্যাগ জমা দিয়ে স্লিপ নিয়ে মলে ঢুকলো ওরা। মলের এইদিক ওইদিক ঘোরাঘুরি শুরু হলো। প্রায় দোকানেই ওরা এইটা ওইটা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখছিল। কোন কিছু কেনার ইচ্ছা ওদের কারো ছিল না। তবে এত বড় মলে এসে তো অন্যদের তা বুঝতে দেওয়া যায় না। তাই কোন দোকানের জিনিসই যেন পছন্দ হচ্ছে না, এমন একটা ভাব করতে লাগল। তবে জিনিসপত্রের চাইতে তার দামটাই বেশী নজরে আসছিল। পুরো মলটা কয়েক বার চক্কর দেবার পরে আর থাকা গেলো না। তাই বের হয়ে আস্তে হলো।
বের হয়ে অভ্র দেখল মনিকা আর অনামিকা তখনও রাস্তায় ঘুরছে। অবশেষে একত্রিত হলো ওরা পাঁচজন। এবার যাবার সময় হয়ে আসছে। আসিন অভ্রকে বাসায় যাবার অনুরোধ করে বিদায় জানালো। অনুরোধটা এমন ভাবে করল যেন, ও জানে অভ্র ওর বাসায় যাবে না তাও বলল। এরপর অভ্রও সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল আর বাকিরা তাদের নিজ বাড়ির দিকে রওনা হলো।
বিঃ দ্রঃ উপরের সব লেখাই সম্পূর্ন কাল্পনিক। এবং প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সকল লেখাই গল্পের অন্তর্গত। যদি কারো সাথে এর কোন অংশ মিলে যায়, তা সম্পূর্ন কাকতালিয়( মানে যা শুনে কাক তালি দেয় :P)।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×