somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং আমাদের কুটনৈতিক কুটনীতি । রেজা ঘটক

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের কোনো সরকার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নীতি কী হবে তা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঠিক করতে পারেনি। প্রধান কারণ আমাদের জাতীয় রাজনৈতিক মুর্খতা। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন তানরা সবাই সবকিছু ভালো বোঝেন। জনগণ হলো নির্বোধ। জনগণের মতামতের কোনো মূল্য নেই। আমাদের নাগরিক সমাজ আছে। আমাদের বিশেষজ্ঞ মহল আছে। আমাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টারা আছেন। আমাদের এনজিও আছে। আমাদের ব্যবসায়িক নেতারা আছেন। আমাদের সংসদ আছে। আমাদের বিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানরা আছেন। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কী কী বিষয় আমাদের নিস্পত্তি করা প্রয়োজন সেই বিষয়ে কেউ পারদর্শী নন। অথচ আমাদের সবাই মিডিয়ার সামনে গাল ফুলিয়ে কথা বলতে থুব পারদর্শী।
বাংলাদেশের জাতীয় ইস্যুতে সরকার কেন সকল পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক করেন না? ভারতের সঙ্গে আমরা কী কী বিষয়ে নিস্পত্তি চাই সেই বিষয়গুলো কেন সরকার সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেন না? বিষয়গুলো আগে নির্বাচন না করে জনগণকে কিছুই না জানিয়ে সবাইকে পাশ কাটিয়ে গুটিকয়েক দিপুমনি আর গওহর রিজভী দিয়ে যে আসল সমস্যার সমাধান করা যায় না তা আবারো প্রমাণ হলো। কিন্তু আমাদের লজ্জ্বা নেই। আমরা ভবিষ্যতেও এই রকম ভাবেই চালিয়ে যাব।
ভারতের সঙ্গে আমরা কী কী বিষয় নিস্পত্তি করবো তা সবাইকে সঙ্গে নিয়েই ঠিক করতে হবে। এটাই আসল বিষয়। সরকার যদি একটা উন্মুক্ত আলোচনা শুরু করতেন যে ভারতের সঙ্গে আমরা কী কী বিষয় কীভাবে চাই আসুন আমরা আলোচনা করে ঠিক করি। ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করেও এই বিষয় অতি অল্প সময়ে ঠিক করা যেতো। বাংলাদেশে যতোগুলো রাজনৈতিক দল আছে তারা কীভাবে কী কী চায় তাদের কাছে সরাসরি জানতে চাইতে পারতো। যারা সেই আবেদনে সারা দিতেন না, জনগণ তাদের এমনিতেই প্রত্যাখ্যান করতো। তাদের মিথ্যা কথায় জনগণের আর ভুল বোঝার সুযোগ থাকতো না।
ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে পালা করে মিটিং করা যতো।মিডিয়ার সঙ্গে পালা করে মিটিং করা যেতো। বিশেষজ্ঞ মহলের সঙ্গে পালা করে মিটিং করা যেতো। সংসদে পালা করে একটা একটা বিষয়ে আলোচনা করা যেতো। সবশেষে পতিকায় গণ জরীপ চালিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর জনমত যাচাই করা যেতো। এভাবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয় গুলো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আগে ভাগেই ঠিক করাটা খুব একটা ঝামেলার কাজ নয়। আসল ঝামেলা সদ্দিচ্ছায়।
এভাবে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা কীভাবে মিটমাট হবে তা জনগণ আগেভাগে সরকারকে যদি উপায় বলে দিতো, তখন সরকারের পক্ষে ভারত প্রতিপক্ষকে যুক্তি দেখেনা যেতো যে দেখো এটা আমরা বাংলাদেশের সকল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এভাবে ঠিক করেছি। আমরা এর কোনো উল্টাপাল্টা হলে চুক্তি করতে পারবো না। তোমাদের খোড়া যুক্তি আমাদের সচেতন জনগণ মানবে না। আমরা বিদেশ নীতি দেশের সবার মতামত নিয়ে ঠিক করেছি। এটা কোনো একক সরকারের দায় নয়। তখন ভারতীয় পক্ষ সেই বিষয়ে চূড়ান্ত আমলে নিতে বাধ্য। ভারত যদি বুঝতে পারে যে এটা বাংলাদেশের সকল জনগণের কথা। সেটাকে ফেলে দেকার চেষ্টা তারা করলে তাদের সঙ্গে কঠোর অবস্থানে তখন যাবে বাংলাদেশ। তখন আর নতজানু পররাষ্ট্র নীতির তকমা গায়ে লাগবে না। কিন্তু আমরা গুটি কয়েক রিজভী, দিপুমনি আর কায়েস নির্ভর হয়ে চলি। আমাদের সারা বিশ্বে গোয়েন্দা সংস্থার লোক লাগানো। একজন মমতা ব্যানার্জী কার উস্কানীতে সবকিছু এলোমেলো করে দিলো তা কেউ জানলো না। আর এখন সব শেষমেষ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলো।
একজন দিপুমনি বা একজন রিজভী বা একজন কায়েস কী এখন বিগত ১০ মাসে ভারত বিষয়ে রাষ্ট্রের যতো টাকা খরচ করেছেন তা এখন জনগণকে ফিরিয়ে দেবেন? কিংম্বা কেউ এই ব্যর্থতা স্বীকার করে নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন? কিংম্বা প্রধানমন্ত্রী এই ব্যর্থতার জন্যে কাউকে বরখাস্ত করবেন? আমরা জানি না।
বাংলাদেশে জনগণের চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে নেতা বড়। নেতার চেয়ে দলপ্রধান বড়। দলপ্রধানের ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর বাংলাদেশের ভাগ্য ঝুলে থাকে। আর এখানে একদল চামচা সারা বছর সেই ফাঁক গলিয়ে আখের গোছায়। এই চর্চা আর কতোদিন চলবে আমরা জানি না। আমরা বোকা জনগণ শুধু জানি আমাদের বিএসএফ গুলি করে মারবে। আমাদের সীমান্তে কালোবাজারী চলবে। আমাদের সংসদ সারা বছর অকার্যকর থাকবে। আমাদের বিরোধীদল সারা বছর সংসদের বাইরে গলাবাজী করবে। আর বছর ঘুরে নির্বাচন আসলে আমরা মুর্খের দল সেই উৎসবে ঝাঁপিয়ে পড়বো। আমাদের বিদেশ নীতি কোনোদিন সঠিক হবে না। কারণ আমরা তা ঠিক করতেই চাই না। আমাদের দিপুমনিদের মনোমুগ্ধ হাসিতে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৪৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×