somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন উলঙ্গ উম্মাদ এবং কিছু কথা………

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমেরিকায় সাম্প্রতিক ঘটে যা্ওয়া ভুমিকম্পের পরপর ম্যানহ্যাট্টনে এক ব্যক্তি উলঙ্গ উম্মাদ হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাহত করতে থাকে। সে তার এ্যাপার্টমেন্টের চারজনকে আহত করে এবং দুজনকে মেরে ফেলে। শুধু তাই নয়, সে প্রতিবেশীর ঘরে আগুন দিতেও চেস্টা করে। অত:পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এই ধ্বংশলীলার হাত থেকে মানুষকে বাচায়। অতংকিত মানুষ কিভাবে নিজের জন্য এবং চারপাশের পরিবেশের জন্য ভয়ংকর বিপর্যয় নিয়ে আসে এই ঘটনা তার উতকৃষ্ট প্রমাণ।



বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, সীমাহীন বেকারত্ব, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, সড়ক দুর্ঘটনা, সন্ত্রাস, ছিনতাই, চাদাবাজী- এই সব কিছু এমন এক পর্যায়ে চলে গেছে যে, সরকার হয়তো ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতংকিত হয়ে ঐ উলঙ্গ উম্মাদের মতো ধ্বংশাত্নক আচরণ করছে। উম্মাদ ব্যাক্তি যেমন তার সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশীদেরও হত্যা করতে ছাড় দেয়নি তেমনি সরকারও বিবেচনা করছে না যারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে তারা তারই জনগণ। সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যা্ওয়া কয়েকটি ঘটনা দেখে মনে হয় সরকার নিজেদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট কর্তৃক পরপর কয়েকজন ভয়ংকর অপরাধীর মৃত্যুদন্ড ম্ওকুফ, র‌্যাব এবং পুলিশ দ্বারা পুণ: পুণ; মানুষ হত্যা (সব শেষে এ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদের মৃত্যু), আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ছিনতাই, ধর্ষন, অপহরণ, গুপ্ত হত্যা, সর্বত্র দলীয়করণ, দলীয় লোক দ্বারা বিরোধী দলের উপর নির্যাতন- এই সব নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড দেখে মনে হয় তারা বুঝে গেছেন তাদের সরকারের আয়ু শেষের পথে।



সব সরকারই যখন তাদের দিন শেষের ইঙ্গিত পায় তখন ঐ উলঙ্গ লোকটির মতোন পৈশাচিক আচরণ করে। মনে পড়ে এরশাদ তার আমলের শেষের দিকে ছাত্রদের মিছিলের উপর ট্রাক তুলে দিয়েছিল, বিএনপি সরকারও শেষবারে কি করেছিল তা স্মৃতি থেকে কারো মুছে যাবার কথা নয়। কেন জানি না, এবার জনগণ পূর্বের সব বিপর্যয়কে অতিক্রম করে গিয়েছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, পৃথিবীর সব দেশেই সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে জনগণের উপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। সেই মিশর থেকে শুরু করে অধুনা লিবিয়ার দিকে তাকান। শত শত মানুষ উদভ্রান্ত, পতনমুখী সরকারের উন্মাদ কর্মকান্ডের বলি হয়েছে নিজের জীবন দিয়ে। মানুষ যখন উম্মাদ হয়ে যায় তখন তার বিবেচন লোপ পায় এবং ধ্বংশটা অন্যকে দিয়ে শুরু করলেও শেষটা সে নিজেকে শেষ করে সম্পন্ন করে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনগুলো এবং সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের সরকার পরিবর্তনের প্রক্রিয়াগুলো দেখলেই এর সত্যতা মিলবে। মিশরে জনগণ মরেছে। এখন হোসনী মোবারক বিচারের মুখোমুখী। লিবিয়ার সারি সারি মানুষ হত্যা করা হয়েছে। সেই লৌহমানব এখন ইদুরের গর্তে ঢুকে নিজেকে বাচানোর শেষ চেষ্টা করছে।



জনগণকে মারা খুবই সহজ। কিন্তু সেই জনগণের কাছেই যে ক্ষমতার চাবি সেটা পৃথিবীর সব শাসকই (শোষক) ভুলে যায়। সরকার যখন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন তাকে বাচানোর কেউ থাকে না যেটা আমাদের স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো দেখলেই বুঝা যাবে। সেই গণবিচ্ছিন্নতার অভিজ্ঞতা বর্তমান সরকারেরও একটু আধটু বিগত দিনে আছে। কিন্তু আফসোস হচ্ছে, কেউ সেটা উপলব্ধি করে না। নিজের অগণিত ভুলগুলো তারা ভুলে যায় শুধু মনে রাখে হাতে গোণা কয়েকটি সফলতা। সেই স্বল্প সফলতার স্বাদই তাদেরকে বারবার আরেকটি গণ বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয় যেটা শুধু এই সরকারের বেলায় নয়, প্রত্যেকের বেলায় সমানভাবে সত্য।



দেখুন, ম্যানহাট্টানের ঘটনায় মানূষ উম্মাদ ব্যাক্তি দ্বারা বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসার পরে তারা স্বস্তি আবার ফিরে পায়। কিন্তু আমাদের দেশে যারা জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে সেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকরাও তো সেই উম্মাদের মতো সাধারণ মানুষের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাদের হত্যা করে, নির্যাতন করে, তাদের সম্ভ্রম এবং সম্পদ কেড়ে নেয়। আমাদের কে কবে আশার বাণী শোনাবে সেই “বন্ধু পুলিশের” যারা আসলেই বিপদসংকুল জনগণ পুণরায় বেচে থাকার স্বপ্ন ফিরে পায়। পুলিশকে আমরা দেখতে চাই আততায়ী হিসেবে নয়, আমাদের বন্ধু হিসেবে।



আবার শুরুর ঘটনায় ফিরে আসছি। উম্মাদটি ভেবেছিল পৃথিবী আজ ধ্বংশের পথে এবং চিতকার করে বলছিল ”he was the devil during a door-to-door stabbing spree.” চারিদিকে সরকারের ব্যর্থতায় জনমনে অসন্তোষ দেখে বর্তমান সরকার হয়তো ভেবেছে যে, তার দিন ঘনিয়ে এসেছে। তাই উলঙ্গ লোকটার মতো উম্মত্ত হয়ে সরকার তার বিভিন্ন অংশ দ্বারা একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে চলেছে। ঐ ব্যাক্তি ভুমিকম্পের তান্ডব দেখে ভেবেছিল 'It's the end of the world!'. আমাদের সরকার কি তাদের ব্যর্থতার বোঝা দেখে একটু হলেও বুঝতে পারছেন যে, এমনটি চলতে থাকলে অচিরেই তাদের দিন শেষ হবার পথে?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

উপকূলের ভাই-বোনদের প্রতি গভীর সমবেদনা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৭




আমরা ঢাকার পাকা দালানে বসে যখন আয়েস করে চায়ে চুমুক দিয়ে বৃষ্টি বিলাসে বিভোর, ঠিক সেই সময় আমাদের উপকূেলের ভাই-বোনেরা হয়তো কেউ স্বজন, কেউ ঘর, কেউ ফসল, কেউবা গবাদী... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: অশ্লীলতা কি পোশাক দিয়ে নির্ধারণ করা উচিৎ নাকি মানসিকতা ও চরিত্র দিয়ে?

লিখেছেন লেখার খাতা, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫২


ছবিটি -ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

কহিনুরের, ফ্লোরা ওরিয়েন্টাল বিউটি সোপ।১৯৭৮ সালের বিজ্ঞাপন। ছবিটি ফেসবুকে পেয়েছি। ব্লগার সোনাগাজী, ব্লগার কামাল ১৮ সহ যারা মুরুব্বি ব্লগার রয়েছেন তারা হয়তো এই বিজ্ঞাপনটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



কতোজনে ভাসছে জলে
পথ ঘাট সব যে পানির তলে
রেমালের কবলে পড়ে।
কতোজনে আজ দূর্বিপাকে
ভাবছি বসে তাদের কথা
কতৈনা দূর্গতি, বাড়িঘর
ফসলী জমি গৃহস্থালি;
ভাসছে আজ জোয়ার জলে
প্রকৃতির বিষম খেয়ালে।
জেলেরা আজ ধরছে না মাছ,
স্কুল কলেজে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন বেনজীর আহমেদ ও আমাদের পুলিশ প্রশাসন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪২



বৃষ্টিস্নাত এই সন্ধ্যায় ব্লগে যদি একবার লগইন না করি তাহলে তা যেন এক অপরাধের পর্যায়েই পরবে, যেহেতু দীর্ঘদিন পর এই স্বস্তির বৃষ্টির কারণে আমার আজ সারাদিন মাটি হয়েছে তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×