somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিরক রাজ্যের রাজা ও সবুজদেশ রাজ্যের গল্প। ( এই গল্প ছুচিলদের জন্য নিষিদ্ধ)

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(গল্পের সমস্ত ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে মেলাতে চাইলে নিজ দ্বায়িত্বে মেলাবেন)

হিরক রাজ্য, বিশাল এক রাজ্য। এতই বড় রাজ্য যে একমাথা থেকে আরেক মাথায় “বাষ্পিয় যানে” যেতেও কয়েক দিন লাগে। একদিনের ঘটনা, সেই রাজ্যের রাজার কাছে এক আমন্ত্রন পত্র এল, আমন্ত্রন পত্রটি এসেছে তার প্রতিবেশি রাজ্য সবুজদেশ থেকে। আমন্ত্রন পত্র পেয়ে রাজা খুবই বিরক্ত হলেন, কিছুটা অপমানিত বোধ করলেন, একটা পিচ্চি রাজ্য কিনা আমাকে আমন্ত্রন জানায়!!

তিনি তার সভাষদদের নিয়ে এক সভা ডাকলেন। তিনি সভাষদদের চিঠির বিষয়বস্তু বর্ননা করলেন। হিন্দুকুশ রাজ্যের সাথে বঙ্গদেশের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা ও তাদের বন্ধুত্ব আরো সুসংহত করা।

রাজা সভাষদের মতামত জানতে চাইলেন। সভাষদরা সব শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন।

“কি!!! এতবড় আস্পর্ধা.....ওদের সাথে আবার কি সমস্যা, রাজামশাই যা বলবেন তারা তাই করবে।”। আরেকজন বললেন, “রাজামশাই ওদেরকে একদম পাত্তা দেবেননা, এত স্পর্ধা যে আমাদের রাজামশাইকে ওখানে যেতে বলে।”, আরেকজন চোখে আতশী লাগিয়ে বলল, “রাজামশাই... আপনি সমস্যা সমাধানের জন্য ওই দেশে যাবেন করব এরচেয়ে অপমানের আর কি কিছু আছে??”

এরপর রাজা তার সভাষদদের নিয়ে দীর্ঘ সভায় বসলেন। তারপর সেখানে সিদ্ধান্ত হলো সবুজদেশ রাজ্যের সাথে সমস্যা চিরকালের জন্য সমাধান করে ফেলা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত ৬ মাস পর তিনি সবুজদেশে দুই দিনের জন্য সফর করবেন।

সবুজদেশ রাজ্যে সাজ সাজ রব পরে গেল। সবুজদেশ রাজ্যের রাজার সভাষদদের মুখে বিভিন্ন আশার ফুলঝুরি শোনা যেতে লাগল ৬ মাস ধরে। তারা বলতে থাকলো সবুজদেশে আর কোন সমস্যা থাকবে না, দেশ শস্য শ্যমলা হয়ে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আস্তে আস্তে দিন ঘনিয়ে আসল। হিরকরাজ যখন আসলেন তখন বঙ্গদেশের মন্ত্রী সান্ত্রী সবাই মিলে রাজাকে সবুজদেশের রাজ প্রাষাদে নিয়ে গেল। সেইদিন দারুন ভোজ হলো। পরদিন সবুজদেশের রাজার সাথে হিরকরাজ সভায় বসলেন।

প্রথমেই হিরকরাজ বললেন “আমার রাজ্যের পূর্বাংশে যাবার জন্য আমার প্রজাদের এখন অনেক ঘুরে যেতে হয়, আমি চাইছি তারা তোমাদের মহাসড়ক ব্যাবহার করুক, তাদের জন্য যেন কোন সমস্যা না হয় সেই ব্যাবস্থা করবে। বঙ্গদেশের রাজার কাছ থেকে উত্তর আসলো “কোন সমস্যা নেই”। সবুজদেশের রাজার সভাষদরাও সেটার সমর্থনে মাথা নাড়লেন। আর আমার রাজ্যের বণিকরা তোমাদের এখানে এসে ব্যাবসা করবে, তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটাও তোমরা দেখবে। তোমাদের নদীর পানি নিয়ে মাথা ব্যাথার দরকার নেই, তোমাদের যতটুকু দরকার, ততটুকুই পাবে।“ সবুজদেশের রাজা ও সভাষদরা তা বিনা প্রতিবাদে মেনে নিল। কেননা বন্ধুর কথায় প্রতিবাদ করতে হয় না। হিরকরাজকে সবুজদেশে আসার জন্য অনেক উপহার দেয়া হলো, এতে সবুজদেশের রাজকোষ অর্ধেক খালি হয়ে গেল।

হিরকরাজের যাবার সময় হয়ে এল। “তোমরা যা করলে তা আমি কোনদিন ভুলব না...........এর বিনিময়ে আমি তোমাদের কে কিছু দিয়ে যেতে চাই। যা দেব তা তোমাদের কল্পনা করারও ক্ষমতা নেই।

হিরকরাজ চলে যাবার পর হিরকরাজের সেই উপহার সবুজদেশের রাজা ও তার সভাষদদের সামনে নিয়ে আসা হলো। একটা বাক্সের ভেতরে উপহার রাখা আছে। সভায় কানাঘুষা শুরু হয়ে গেল কেউ মনে করল হয়ত পরশ পাথর আছে, আমাদের রাজ্যে আর কোনই অভাব থাকবেনা আর কেউ মনে করল সেখানে কোন বিশাল গুপ্ত ধনের ভান্ডারের নকশা আছে। সবাইকে চুপ হতে বলে রাজামশাই সেই বাক্স খুললেন এবং স্তব্ধ হয়ে গেলেন।

সবাই অবাক হয়ে দেখলো বাক্সের ভেতরে আছে এককাঁদি “কাঁচকলা”। সবাই কিছুক্ষনের জন্য একদম চুপ হয়ে গেল। একটু পরে রাজাই মুখ খুললেন। এই কে আছিস এই কলার বীজ রাজ্যের সবখানে লাগানোর ব্যাবস্থা কর। আর মন্ত্রীরা প্রজাদেরকে জানিয়ে দাও সবুজদেশ রাজ্যের প্রজাদের পুষ্টিসমস্যার সমাধান হয়ে গ্যাছে!!

সমাপ্ত
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×