এই ঈদে অনেক আট ঘাট করে আয়োজন করে ঈদ করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম ।এত্ত এত্ত এনিম, গত একবছর না পড়া সব গল্পের বই আর এক গাদা মুভি। গিগা গিগা এনিম, কিন্তু সারাদিন পিসির সামনে বসে বসে যে ঈদ করা যায় না তা গত পরশু রাতেই টের পেলাম। একদিকে সারাদিন বসে থেকে কোমর মনে হয় ক্ষয় হয়ে গেল অর্ধেক, ওদিক আম্মু সকাল থেকে চিল্লাচিল্লি করছিল যে আমার নাকি কাছে আসা যায় না :-< :-< s
আমিও একটা ছুতো খুজছিলাম যে বাইরে বের হবার। এমনিতেই এর আগে সিলেটে ত্রিনিত্রি আপুর আসার সংবাদ পেয়ে অপেক্ষায় ছিলাম কখন আপুর ডাক আসবে আর আমার বাসা থেকে বের হতে পারবো। তবে একটা জিনিস এই জীবনে প্রথম জানলাম যে আপুরাও এতো পাংচুয়াল হতে পারে। ঠিক কাটায় ৪ টায় আপুর ফোন যে আমি বাসা থেকে বের হইসি তুমিও বের হও , আমি তো আম্মুরে বলে বের হইসি আম্মু আড্ডা মারতে
যাই। আম্মু কি ভাবসে কে জানে! যদিও এখন সিলেটে তেমন কেউ নাই যে আড্ডা দিবো ।যাই হোক আপুকে বলসি যে উপশহর পয়েন্টে সপ্ন তে আমি আছি তুমি আসো কিন্তু উপশহরের ২ মাথায় যে ২ টা সপ্ন এর আউটলেট তা কে জানতো (মেজাজ বিলা হইবার ইমো সেই সাথে ইজ্জত খানিকটা পাংচার হইবার ইমো ও দেয়া যায় ) তারপর আপুরে আবার পুরো উপশহর ঘুরিয়ে আনলাম শিবগঞ্জ পয়েন্টে।
তবে একটা প্রবাদ অতি পরীক্ষিত না হলেও সত্য
“ব্লগারে ব্লগার চেনে”আমার ও চিনতে কোনো সমস্যা হয় নি ,পরে শুনি আপুর ও না।
এরপর বাসা খুঁজা নিয়েও কিঞ্চিত ঝামেলা হয়েছিল, যদিও তা সামান্য । এরপরের কয় ঘণ্টা কিভাবে পার হয়ে গিয়েছে তা আর বলতে পারি না । আমি হলাম সবার পিচ্চি, ত্রিনিত্রি আপু আমার অনেক সিনিয়র আর সুরঞ্জনা আপু আরো সিনিয়র বলা যায় পুরো ২ জেনারেশন এর মিলনমেলা এর মাঝেও অনেক ব্যাপার নিয়ে আড্ডা। সমসাময়িক পরিস্থিতি ঈদের সেকাল একাল এর মাঝে আরেকটা ব্যাপার নিয়ে আমি একটু সংশয়ে ব্যাপার টা হল ত্রিনিত্রি আপু সুরঞ্জনা আপু কে নানু ডাকে আমিও নানু ডাকি। কিন্তু বাসায় এসে আম্মুর কাছে আপুর বিখ্যাত পেপের হালুয়ার কারিশমার কথা বর্ণনা করছি তখন একবার আপু একবার নানু ,পুরাই কনফিউজড অবস্থা
তবে এখানে আগে ব্লগ তাই না
এরপর আসলো খানা – পিনার পর্ব ………
এবার যারা মিস করেছেন তাদের একটু লোল ফেলার সুযোগ করে দিলাম আর কি
প্রথমে এক নজরে আপুর আইটেম গুলা যাতে আপনারা চুপি চুপি হাত দিয়ে টেস্ট করতে না পারেন
এরপর আপুর স্পেশাল শাহী সেমাই
আপুর হাতের তৈরি চটপটি সব গুলাই স্পেশাল কারন একটার না খেয়ে থাকতে পারি নি এতো মজা ছিল
পুডিং
স্পেশাল পরটা(ত্রিনিত্রি আপুর সাথে কম্পিটিশন করে আমি ২ টা খাইসি কিন্তু আপু একটাই খাইসে হা হা )
আমার সবচেয়ে প্রিয় পেপের হালুয়া আম্মুকে বলসি না বানাইতে পারলে এরপর থেকে ঈদ আপুর বাসায় করবো !হুম
কোরমা
পায়েশ
আপুর বই এর বিশাল সংগ্রহ দুর্লভ বই অনেক আছে
বিখ্যাত পানের বাটা
সেই বিখ্যাত পিসি যেখানে বসে আপু তার সব বিখ্যাত পোষ্ট লিখেন
কিছু অতি দুর্লভ বই যা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার
আরো কিছু দুর্লভ বই এর ছবি
এভাবে আড্ডা চলতে থাকলো। কতক্ষণ চলতো বলা যায় না, কিন্তু আমার আর ত্রিনিত্রি আপুর মাতৃমহোদয়া উভয়ের ই ফোনের একের পর একের এক ক্রমাগত তাড়া দেয়ায় আড্ডার মুলতবী করতে হল বাধ্য হয়েই কিন্তু আড্ডা শেষ হলে কি হবে, সেই রেশ এখনো মনে হয় লেগে আছে। কখন যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা আর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত ছুঁই ছুঁই করছিলো, টেরই পাইনি। ভার্চুয়াল জগত আর বাস্তব জগত মিলে মিশে একাকার করেই কাল আরেকটি চমৎকার ব্লগীয় আড্ডার সমাপ্তি ঘটলো।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৩