somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি না বুঝলে কে বুঝবে? আমরাতো মুর্খ জনতা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনাটা ঈদের আগের দিনের। ঈদের দিনেরও। সিকোয়েন্স ধরে রাখতে প্রথমে আগের দিনের রেফারেন্সটাই দিচ্ছি। ঘটনাস্থল পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার। আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বললেন, ঈদের দিন শহীদ মিনারে ফ্যাসাদ না করে জনগেণর পাশে দাঁড়ান।
ঈদের দিন ঘটনাস্থল-১: শহীদ মিনার। হাজার দুয়েক ছাত্র-শিক্ষক, পেশাজীবী-জনতার সমাবেশ। তারা সরে আসলেন যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি থেকে। নতুন দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। পদচ্যুত করতে হবে ওই অকর্মার ঢেঁকিটাকে। ঘটনাস্থল-২: গণভবন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, যারা শহীদ মিনারে ঈদ করছে, তারাতো নিজেরাই বাড়ি যাননি। তাহলে কীভাবে জানবেন, মানুষ বাড়ি যেতে পারছে না?
এবার সিকোয়েন্সটা উল্টো করে শেষ থেকে শুরু করি। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন। মানুষতো এবার ঈদে বাড়ি যেতে পেরেছে। ঝক্কি ঝামেলা খুব একটা হয়েছে বলেও শোনা যায়নি। আমাদের করিতকর্মা (!) যোগাযোগমন্ত্রী অসাধারণ পার্ফমেন্সে মহাসড়কগুলো ঈদের আগেই যান চলাচলের উপযোগী হয়ে যায়। যদিও এনিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। আমি বিতর্কে যেতে চাই না। শুধু বলতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যারা শহীদ মিনারে ঈদ করলেন, আপনি বোধকরি তাদের দাবি বা বক্তব্য বুঝতে পারেননি। তারা যোগাযোগ মন্ত্রণালেয়র দুর্নীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ চেয়েছেন। সেসঙ্গে মন্ত্রিসভার অযোগ্য সদস্যদেরও বাদ দিতে বলেছেন। তাদের এই দাবি যে মোটেও অযৌক্তিক না, তাতো সংসদে আপনার দলের এবং জোটের বাঘা বাঘা এমপিদের বক্তব্যেই বোঝা যায়। আফসোস, পুরো জাতি বুঝলেও শুধু বুঝলেন না আপনি! না বোঝার জন্য আপনাকে দোষ দেই না। সে দুঃসাহসও আমার নেই। সবাইকে সব কিছু বুঝতে এমন দাসখততো আর দেয়া হয়নি। শুধু মনে ব্যাথা লাগে, আপনি প্রধানমন্ত্রী হয়েও অতি সাধারণ বিষয়গুলোও বুঝতে পারছেন না।
মহাসড়কগুলোর দুরবস্থা বুঝতে ওই মহাসড়কে গাড়ি চড়ে যেতেই হবে- এমন দিব্যি কেউ দিয়েছে কি না তাও জানা নেই আমার। শুধু জানি, সংবাদ মাধ্যমগুলোতে মহাসড়কগুলোর যে বর্ণনা এবং ভিডিও ছবি ও স্থির ছবি দেখানো হয়েছে তাতে দুরবস্থার মাত্রা বুঝতে কারোরই বেগ পেতে হয়নি। ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে, প্রধানমন্ত্রী কেন তা বুঝতে পারছেন না। দুঃসাহসিক না হলেও কিছুটা সাহস নিয়ে জানতে চাইছি, প্রধানমন্ত্রী কি তবে বুঝতে চাইছেন না? না কি তার আশপাশে যারা আছেন, তারা এমন কোনো আবহ তৈরি করে রেখেছন যাতে প্রধানমন্ত্রী কিছু বুঝতে না পারেন। সেটি হলে আমাদের জন্য, প্রধানমন্ত্রীর জন্য হবে দুর্ভাগ্যজনক। কারণ ওনাকে আমরা জননেত্রী হিসেবেই জানি। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্যই নিজের জীবনের বড় একটি সময় কাটিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আজ তিনিই যদি জনগেণর দুর্ভাগ্যের কথা বুঝতে না পারেন সেটি তার জন্য দুর্ভাগ্যই বটে। জনগেণর জন্যও।
আর শহীদ মিনারে যারা ঈদ করলেন। যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসে চাইলেন পদচু্যতি- তারা কারা? কি তাদের পরিচয়? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা কি একবার ভেবে দেখেছেন আপনি? নাকি তুচ্ছ এসব নিয়ে আপনি ভাবার সময় পান না? প্রগিতশীল কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর, প্রতিয়াক্রিয়াশীল নয় পুরোপুরি প্রগতিশীল ধারার রাজনীতিক, অভিনয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক- এরাইতো ছিলেন ঈদের দিন শহীদ মিনারে। এই মানুষগুলোর জীবন দর্শন, রাজনৈতিক মতাদর্শ কারোরই অজানা নয়। মোটা দাগে এদের আমরা প্রো-আওয়ামী লীগ হিসেবেই জানি। যদিও তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন না। দেশের রাজনীতিকে যদি আমরা দু'টি ধারায় ভাগ করি, প্রগতিশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল, তবে আওয়ামী লীগকে আমরা প্রগতিশীল ধারার ধারকই বলবো। সে হিসেবে প্রগিতশীল এই মানুষগুলোর আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন- তাতে দোষের কিছু নাই। এজন্য তাদের আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আর সুশীল সমাজ নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মীর ভূমিকায় কখনো নামেনও না। দু একটি ব্যতিক্রম যা আছে সেগুলো পঁচা শামুকে পা কেটেছে। তারা উদাহরণ নয়। তো প্রগতিশীল মানুষগুলো সরকারের নানা ভুলভ্রান্তি তুলে ধরবেন, সমালোচনা করবেন- এটাইতো স্বাভাবিক। এতো কেবল সমালোচনা নয়, দলীয় কর্মী না হয়েও সরকারকে সাহায্য করারই নামান্তর মাত্র। এই প্রগতিশীলন মানুষদের সমালোচনা শুনতে বাধা কোথায়? নাকি সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সমালোচনা শুনতে রাজি নন? সমালোচনা শুনতে অবশ্য কারোরই খুব একটা ভালো লাগে না। আর আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সমালোচকদের বাঁকা চোখে দেখেন ক্ষমতাশীনরা। মুহুর্তেই তাদের বানিয়ে দেন বিরোধী দলের এজেন্ট। আর বাংলাদেশের ক্ষমতাশীন নেতাদের কাছে এটাতো রীতিমতো প্যাশন এবং ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নেতাদের কড়জোরে মিনতি করছি, দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান। সমালোচককে বন্ধু হিসেবে নেন। আখেরে আমপনাদরেই লাভ হবে। ভুলভ্রান্তি স্বীকার করে সেগুলো সংশোধন করে নিলে জনগণ বাহবা দেবে। বাহবার সঙ্গে ভোটটাও পাবেন। নয়তো ক্ষমতা চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখতে পারবেন না। সে চেষ্টা ভুলেও করতে যাবেন না দয়া করে। কারণ তিন দশকের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, এ দেশের মানুষ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কোনো কিছুই শুনতে চায় না। প্রবল পরাক্রমশালী রাষ্ট্র নায়ককেও চেয়ার থেকে টেনে নামায়। কাজেই এখনো সময় আছে সাবধান হওয়ার। জনগণের মনের ব্যাথা বোঝার।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×