আমার জীবন এর একটি বড় অংশ হিসাবে জড়িয়ে আছে একটি মেয়ে যে ছিল আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ।আমাদের প্রথম কথা হয়ে ছিল একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে।তখন আমরা ক্লাস ৯ এ পড়তাম একই স্কুলে ।সেই দিন আমি আগ বাড়িয়ে আমার পরিচয় দিয়েছিলাম।এর পরে কখনো বারান্দায় কখনো গেটে আমাদের দেখা হতো।দুজন মিশুক ছিলাম বলে দেখা হলে ভদ্রতার খাতিরে কথা হতো।এর পর আমরা ক্লাস ১০এ উঠলাম তখন সাইন্সফেয়ারের কারনে আমাদের বন্ধুত্ব আরো গভীর হয়।আমাদের চিন্তা ধারা ছিলো একই ধরনের তাই আমরা দুইজন খুব কম সময়ে দুজনকে এত ভালো করে বুঝে ফেললাম যে আমাদের দেখলে মনে হতো আমরা হাজার বছরের পুরানো বন্ধু। আমাদের সাথে আরেকটা ছেলে পড়তো নিবিড়।নিবিড় একটি কারনে ভেঙ্গে পড়েছিল তাই শ্রাবনী চাইতো নিবিড় কে সাহস দিতে।এভাবে এক সময় তারা দুজন দুজন এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেল।এ্তে আমার কোনো দুঃখ ছিলো না।কারন শ্রাবনী আমার ভালো বন্ধু অন্য কিছু না।ওদের মধ্যে সম্পর্ক থাকার পরও আমাদের দেখে সব শিক্ষকরা সহ সবাই মনে করতো যে আমাদের মধ্যে কিছু আছে।এর কারণ আমরা সব সময় জোড়া বেধে ঘুরতাম।একদিন তো খেতে গিয়ে স্যারদের হাতে ধরাও খেয়েছি।......
দেখতে দেখতে এস এস সি চলে এল আর আমরা দুজনই পড়াশুনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম ।এখানে বলে রাখা উচিৎ যে আমি খুব খারাপ ছাত্র ছিলাম এমনকি আমি টেস্ট পরিক্ষা থেকে মডেল টেস্টে অনেক কম নম্বর পাই এবং ও ৬ বিষয়ে এ প্লাস পায়।সেই দিন বাসায় যাওয়ার সময় আমাকে দাড় করিয়ে বলে তোকে এ প্লাস পেতে হবে।ওর সেই কথার জন্য আমি বাকি ১৪ দিন খুব খেটে পড়াশুনা করি।পরীক্ষার দেড় মাস আমি কোনো কথা বলি না। কিন্তু আমার সাথে ওর মাঝে সমাজ পরীক্ষার দিন কথা হয় ঐ দিন আমার মনের অবস্থা খুব খারাপ ছিল পরীক্ষা দেওয়ার মতো না আমি ছোটোবেলা থেকে সমাজ এ দূর্বল ভেবেছিলাম ফেলও করতে পারি তাই আমি ওকে ডাকি ও ছিল আমার জন্য লাকী।পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত ভালো হয়।...পরীক্ষার পর ও নিবিড় কে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।আর আমি আমি আমাকে নিয়ে।মাঝে মাঝে কথা হতো কারন আমরা সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিলাম। আমার জন্মদিনে আমি ওর বাসার নিচে গিয়েছিলাম ওকে ১ নজর দেখার জন্য মাত্র ৫ মিনিটের সিদ্ধান্তে সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে..। আমি এমন ছেলে যে মাগরীবের আজানের পর বাসা থেকে বের হতো না। সেই আমি ওর নাটক [ওর জীবনের ১ম মঞ্চনাটক যেটা আমার দেখা জীবনের শ্রেষ্ঠ্য] দেখার জন্য আমার বন্ধুর সাথে রাত ১১ টা পর্যন্ত বাহিরে থাকি। কলেজ এ ভর্তি হওয়ার সময় আমি কাউকে না জানিয়ে আমার কলেজে ভর্তি হই।পরে দেখি যে ও আর আমি একই কলেজে একই রুমে ।নিবিড় ও আমাদের সাথে একই ক্লাসে।ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি ওর সাথে কথা বলা কমিয়ে দেই ও ডাকলেও সাড়া কম দেই।একদিন নিবিড় আমাকে ছুটির পর দাঁড়াতে বলেছিল আমি গুরুত্ব না দিয়ে কিছুটা দুরে দাড়াই ওদের সাথে দেখা করি না।পরের দিন নিবিড় কে জিজ্ঞাসা করলে ও বলে ও শ্রাবনী কে আংটি পরিয়েছে শ্রাবনীর সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসাবে ও আমাকে ডেকেছিলো এবং আমার জন্য ওরা আপেক্ষাও করেছিলো । এটা শুনে আমি খুব খুশি হই কারণ শ্রাবনী খুব খুশি এবং কষ্ট পাই কারন ওর পক্ষ থেকে আমার সেখানে উপস্থিত থাকা দরকার ছিলো এবং আমি না থাকায় ও আনেক কষ্ট পায়।তাই আমি পরের দিন ওদের জন্য উপহার নিয়ে যাই যা দেখে শ্রাবনী খুব খুশি হয়।
আমি সবার সামনে এখোনো বলি যে আমি শ্রাবনীকে ভালবাসী। এ ভালবাসা বন্ধুত্বের . . .
আপনারা আনেকে বলেন ছেলে-মেয়ে বন্ধুত্ব হয় না কিন্তু আমরা বন্ধু খুব খুব খুব খুব ভালো বন্ধু...
ছিলাম .......... আছি............... থাকবো...............
[ আর আমি অন্য একজনের সাথে থাকার চেষ্টা করছি.... এবং বন্ধু হিসাবে শ্রাবনী এর সহচার্য মিস করছি..........]
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৩:০৬