বাংলাদেশে এযাবতকালে শুধুমাত্র রাজনৈতিক সহিংসতায় সাধারণ জনগণের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমার চেনা এক লোক চিকিৎসার জন্য গতকাল ঢাকা মেডিকেল গিয়েছিল সেখানে সে এক বাচ্চা ছেলের নির্মম পরিণতির সাক্ষী হয়ে আসে। ঘটনাটি এরূপ- ছেলেটির বয়স আনুমানিক ১৫ বা ১৬ হবে, সে খুব ধার্মিক, নিয়মিত রোজা রাখে ও নামাজ পড়ে। গতকাল ইফতারের সময় খেজুর ও সরবত খেয়ে মাগ্রেবের নামাজ পরেছে তারপর খেতে এসে দেখে তার গৃহ শিক্ষক হাজির এবং শিক্ষকের তাড়া থাকায় ছেলেটি না খেয়েই পড়তে বসে। পড়া শেষ হতে হতে তারাবির সময় হয়ে যায় তাই সে তার মা কে অনুরোধ করে বলে সে নামাজ শেষ করে এসেই খাবে, মা রাজি হয় না তাই সে মার থেকে ২০ টাকা চায় আর বলে বাহিরে কিছু খেয়ে নেবে। কিন্তু তার আর খাওয়া হয় না। বাংলাদেশের জঘন্য রাজনীতির কোপে সে রক্তাক্ত হয়। তারাবির নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে সে মারামারির মধ্যে পড়ে যায়। তাকে নির্মম ভাবে কোপানো হয়। গতকাল রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল নেয়া হয়েছে, তার অনেক রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। ডাক্তার বলেছে তার অবস্থা আশংকা জনক।তার সাথে আরেক জন নিরীহ পথচারীও আক্রমণের শিকার হয় ও মারা যায়।
এভাবে আর কত রক্ত, কত জীবন গেলে আমাদের হুশ হবে আমি জানিনা। আমরা দিন দিন হিজড়া জাতি হয়ে যাচ্ছি। আমারা সাধারণ জনগণ কেন বারবার বলির পাঠা হব? যেই নিরীহ গাড়ি চালক তার সর্বশেষ সঞ্চয় দিয়ে গাড়ি কিনে তার গাড়ি কেন অকারণে জ্বলবে, কেন তার পেটে লাথি মারা হবে? কেন দোকানির দোকান ভাঙবে? কেন মায়ের সামনে শিশু মারা যাবে? কেন আমাদের হাত বা পা কুলাঙ্গারদের বোমার আঘাতে উড়ে যাবে? কেন প্রতিবাদ হবে আমাদের মেরে? কেন আমরা রক্তাক্ত হব??
আমাদের জাগতে হবে। আমার সন্তান, প্রিয় মানুষটির জন্য। আমাদের জাগতে হবে আমাদের হাত পা ও জীবনের নিশ্চয়তার জন্য। এখনি জাগতে হবে, পিঠ দেয়ালে।
(পূর্বে নকশা ব্লগে প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৯