"stereo love" গানটা শুনতে শুনতে অন্যরকম লাগতে শুরু করল।জীবনের অনেক রকম মানে হয়। সেটা শুধু নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব্য এর উপর।তার জীবনে সে অনেক রকম পরিস্থিতিতে পড়েছে যেখানে তার কোন দোষ না থাকা সত্বেও তাকে দায়ী করা হয়েছে।
বাহিরে থেকে তার জীবনকে অনেক সুখের মনে হলেও ভিতর থেকে তাকে যারা জানে তারা সাদৃশ্য খুজে পায়নি।
তবে একটা জিনিস সে পেয়েছে যা কেউ কখনো পায়নি।"প্রথমে অপর্যাপ্ত ভালবাসা ও তার পড়ে অবহেলা"।
অনেক সময় কষ্ট ভুলার জন্য সে বই পড়ে।
তার সবচেয়ে কষ্ট যখন দেখে তার মাকে সবাই প্রতিটি বিষয়ে দোষি করে শুধুমাত্র ভিন্নধর্মালম্বি হবার কারনে।
মাঝে মাঝে বাবার উপর তার খুব রাগ হয়।কেনো বাবা মাকে বিয়ে করেছিলো, আর তারপর মার সম্মান দিতে পারবে না এটা জেনেও।তাকে সে দেখেছে তার দাদার কোলে অথবা অনান্যদের সাথে।তার মাকে সে খুব কম কাছে পেয়েছে।
দাদু কখনো বাবাকে বাধা দেয়নি, এমনকি বাবা-মায়ের বিয়েতে দাদুই সবচেয়ে খুশি হয়েছিলো।কিন্তু বাদ বাধালো বাবার ফুফুরা, খালারা,আর সব আত্বীয়রা।কিন্তু তখন দেরি হয়ে গিয়েছিলো।ততদিনে নুহার পৃথিবীতে আসার সময় হয়ে গিয়েছিলো।তখন সবাই বলল মাকে ডিভোর্স দিতে হবে অথবা মায়ের পরিবারের সাথে আর মা যোগাযোগ করতে পারবে না।কিন্তু ওরা বুঝল না এর ফলাফল কতটা কষ্টকর হতে পারে দুটো মানুষের কাছে।
আর এটাই বোধহয় যৌথ পরিবারের খারাপ দিক।তার পরিবারের থেকে শুধু বড়দের মতকেই মানা হয়।আর বাবার আত্বীয়রাও তেমন।
পরিবারের প্রতি তাই আজ সে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।এতসব জানার পর কে বিশ্বাস করবে নিজের পরিবারকে। তার মনে হয় তারা শুধু শুধুই বলে ভালবাসা ধর্ম,বর্ণ,জাতি মানেনা। বলে সবাইকে সমান বিচার করতে হয়, কিন্তু তার উধাহরণ?
বাবার সব আত্বীয়রা এখন আর যৌথভাবে নেই।বাবার চাচাত ভাই সাজু চাচা যখন এক আমেরিকান বৌ নিয়ে দেশে ফিরে আসলো তখন থেকেই ভাঙন ধরেছে।সাজু চাচা চাচীকে ডিভোর্স ও দেয়নি, আলাদাও হতে দেয়নি চাচীকে তার পরিবারের থেকে।তাই তার ভালো লাগতো এই জুটিকে। এখন তাই সবার পরিবর্তন হয়রেছে।আজ অনেক দিন সে আবার মনে মনে সাজু চাচাকে ধন্যবাদ দিলো।চাচার জন্যই বাবা আবার মা্যের সাথে এক হতে পেরেছে।
কিন্তু সমস্যা হল তার সবসময়ই সমস্যা থাকে। তার ক্লাসের মেয়েরা তার কেমন যেনো অদ্ভুত আচরণ করে তার সাথে। আর বাবা মার নতুন সমস্যা হল সে।বাবা-মার ভয় দেখে হাসে।ওরা ভাবে নুহার বন্ধু হবে কে, কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো যখন সে আমেরিকা যাবার পর সাধারন হাই স্কুলে ভর্তি হল।বাংলাদেশে সে মেয়েদের স্কুলে পড়ত।যদিও কিছু ব্যাতিক্রমী মেয়েরা ওর বন্ধু হয়েছিলো কিন্তু ওদের পরিবার থেকে সেটা পছন্দ করেনি।
কিন্তু এখানে(আমেরিকায়) অন্যরকম সব কিছু।ওর কিছু বন্ধুও হয়ে গেছে।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং..... ফোনের আওয়াজে চিন্তার সুত্র ছিড়ে যা্য তার।
(চলবে)