somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উদ্ভট সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত মধ্যবিত্ত বাংলাদেশ

২৫ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রিকেটারদের জুতা ও ঝাড়ু দেখানোর জন্য ২৫-৩০ জন বাংলাদেশী মাঝরাতে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিল।

বিষয়টা নানাভাবে দেখা যায়। কে কিভাবে দেখবে এটা ব্যাক্তির উপর নির্ভর করে।

আমি দেখছি জাতিগত অন্যায় আচরন হিসেবে বা নিদৃষ্ট করে বললে, মধ্যবিত্তের অসভ্য আচরন। প্রচন্ডরকমের পরনির্ভরশীল আমরা নিজেদের আবেগ-অনুভুতি সামলে চলতে জানি না। বাস্তবতা ও স্বপ্নের পার্থক্য জানি না। কোন বিশ্লেষন বা চলতি ভাষার "হিসাব" ছাড়াই আমরা অনেক কিছু আশা করি। স্বাভাবিকভাবেই এমন দুর্বল পরিকল্পনা কারনে এবং সাধ্যের বাইরে চেষ্টা করতে যেয়ে আমরা প্রতিটি জায়গায় ব্যার্থ হই। এই নিয়মিত ব্যার্থতা আমাদের জাতিগতভাবে হতাশ করছে।

ক্রিকেটারদের প্রতি যেই অসন্মান ঐ ছেলেরা দেখিয়েছে এটা রুপক মাত্র।হয়তো সাকিব বিরোধীদেরও কাজ হতে পারে। সে যাই হোক, আসল কথা হলো আমাদের অতি তরুন জাতীয় দল যেকোন একটা খেলায় বিদেশের মাটিতে হেরেছে। তাই বলে অসভ্য সমর্থকদের মত খেলোয়াড়দের উপর চড়াও হবো? এসব তো ভারতে হয়! বাংলাদেশ কি শেষপর্যন্ত ভারতের সাথে অসভ্যতার কাতারে দাড়াবে নাকি?

তরুন খেলোয়াড়রা যেন এই ঘটনার প্রভাব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারে সেটাই দোয়া করি। ওরা আমাদের যথেষ্ঠ গর্বিত করেছে তাই শুধু এটাই কামনা করি কোন অসভ্য যেন ওদের ঝাড়ু-জুতো দেখিয়ে পুরো জাতির গর্বকে অপমান করতে না পারে। এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে তার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান করা। নইলে বেয়াদবরা মাথায় উঠবে।



কিন্তু এটার সাথে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু বিষয় ভেবে দেখা দরকার,

এই অসভ্যতা ছড়াচ্ছে কিভাবে?

এক কথায় উত্তর দিতে হলে বলা যায়,পত্র-পত্রিকার কল্যাণে!

তাদের কল্যাণে আমরা জানি দলের ভেতর চরম অস্থিরতা। নতুন নির্বাচকরা দায়িত্ব নেবার পর পরই অধিনায়কের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রস্তুতির অভাব ছিল। নতুন কোচ এলো, আবার সে আসার পর পরই সাকিব অনুমুতি ছাড়াই ছুটিতে গেছে! তামিমের আচরন ঔদ্ধতপূর্ণ , হেনতেন কত কাহিনী! মনে হয় যেন যজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে বিসিবি আর কাওরান বাজার থেকে! দেশের সংবাদমাধ্যম জাতীয় দলের অলিখিত অভিবাবক হবার চেষ্টায় অনেক অন্যায় এবং অতি প্রচারনা করে যাচ্ছে যার কারনে খেলোয়াড়দের ব্যাক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়ছে।


কেন এমন হচ্ছে?

সংবাদমাধ্যম তাদের নিজ স্বার্থে আমাদের বাজে প্ররোচনা দিচ্ছে। রিপোর্টার গরম রিপোর্ট করে নিজের ক্যারিয়ারে পদক চায়। পত্রিকা মালিক চায় গরম খবর দিয়ে কাটতি বাড়াতে। পণ্য ব্যাবসায়ীরা চায় বেশী গরম খবরের সাথে সাথে নিজেদের প্রচারনাটাও চালিয়ে নিতে। এ এক বিরাট আয়োজন। এটা ক্রিকেটের চেয়ে অনেক বেশী রোমাঞ্চকর খেলা। এবং এটা প্রায়ই নিজ গন্ডি ছাড়িয়ে সাধারন পাঠকরুপী জনগনকে বিভ্রান্ত ও মানসিকভাবে উত্তেজিত করছে।

যত যাই হোক, যত বানিজ্যই হোক আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন এটা একটা খেলা মাত্র। এর বেশী না! ১৬ কোটি মানুষের জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবার জন্য ক্রিকেট বা সংস্কৃতি কোনভাবেই অবলম্বন হতে পারে না।



শুধু ক্রিকেটই নয় এমন অসভ্যতা সবখানেই ছড়াচ্ছে ওরা,

এখানে শুধু ক্রিকেট নিয়েই বলা হয়েছে কিন্তু প্রায় একই ধরনের অরাজকতা সমাজের প্রায় সব ক্ষেত্রেই চলছে। কিন্তু ফ্যাশন, সংস্কৃতি, বিনোদন, খেলাধুলা এসব "ফান হাউস" মানে হালকা সামাজিক উপকরন নিয়ে একক ভাবেই খেলছে আমাদের কর্পোরেট সংবাদমাধ্যম আর "পাওয়ার হাউস" মানে অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজনীতিতে খেলছে অন্য এক শ্রেণীর ব্যাবসায়ীরা।

পার্থক্য শুধু পাওয়ার হাউসে অনেক নিয়মনীতি প্রনয়ন করে অপকর্মগুলো করা হয় আর ফান হাউসে যাচ্ছেতাই ভাবে।



শেষকথা বলি,

আমাদের কেউ বাঁচাতে আসবে না এমন বিপদে। এখানে নিজ সচেতনতাই বেশী প্রয়োজন। নিজে ও আশেপাশের মানুষকে বিভ্রান্তি ও মানসিক অস্থিরতা থেকে বাঁচানো প্রয়োজন মনে করলে বিষয়টা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। কর্পোরেট সংবাদমাধ্যমের প্রভাব থেকে নিরাপদ দুরুত্বে বেঁচে থাকার জন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের উপর ভরসা বাড়াতে হবে। যেখানে মুক্ত আলোচনার প্রসার বাড়বে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:২০
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেন্ডার ও সেক্স

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫২

প্রথমে দুইটা সত্যি ঘটনা শেয়ার করি।

২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে জেলা পর্যায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মৌখিক পরীক্ষার ঘটনা। দুজন নারী প্রার্থী। দুজনই দেশের নামকরা পাবলিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামীলীগে শুধুমাত্র একটি পদ আছে, উহা সভাপতি পদ!

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৪ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১


বাঙ্গালীদের সবচেয়ে বড়, পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দলটির প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে। মানুষ এই দলের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছে। ৭০ এর নির্বাচনে এই দলটিকে নিরঙ্কুশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×