somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপকথা-বুদ্ধিমান পাদ্রী (প্রথম পর্ব)

২৪ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক অনেক কাল আগে এক দেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম।সেই গ্রামে ছিলেন এক পাদ্রী।গ্রামের একমাত্র যে গির্জাটি ছিল সেটির দায়িত্ব ছিল তার উপর।মূল কাজ গির্জা সংক্রান্ত হলেও গ্রামের সবার সঙ্গেই তার খুব সদ্ভাব ছিল।গ্রামের যে কারো বিপদে আপদে আর কাউকে পাওয়া না গেলেও তাকে পাওয়া যেতো।মোটের উপর ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায় তিনি তাই ছিলেন।

প্রচণ্ড শীতের এক রাত।বাইরে কনকনে ঠাণ্ডা পড়েছে।পাদ্রী রাতের খাওয়া সেরে ঘুমানোর আয়োজন করছেন।এমন সময় বাইরে থেকে কেউ দরজায় নক করল।“এতো রাতে আবার কে এলো” ভাবতে ভাবতে তিনি দরজা খুলে দেখলেন বারোজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।তাদের মধ্য থেকে একজন পাদ্রীকে উদ্দেশ্য করে বলল,”আমরা অনেক দূর থেকে আসছি।দয়া করে যদি আজ রাতের জন্য একটু আশ্রয় দেন তাহলে আমাদের খুব উপকার হয়।”পাদ্রী যথেষ্ট অবাক হলেও মুখে বললেন,”অবশ্যই।আপনারা সবাই ভিতরে আসুন।“

ভিতরে আসার পরে তিনি অতিথিদের বললেন,”আপনারা সবাই বিশ্রাম নিন,আমি আপনাদের খাবারের আয়োজন করছি” বলে তিনি ভিতরের ঘরে চলে এলেন।তাকে যথেষ্ট চিন্তিত মনে হল।কারন খাবারের আয়োজন করছি বললেও ঘরে অর্ধেক রুটি আর অর্ধেক বোতল মদ ছাড়া আর কিছুই নেই।কিন্তু এতো গুলো লোককে তো না খাইয়েও রাখা যায় না।তিনি ভাবলেন,”যা আছে সেটুকু দিয়েই আপ্যায়ন করার চেষ্টা করি”।তিনি তার ভাঁড়ার ঘরের দিকে পা বাড়ালেন।

ভাঁড়ার ঘরে যাওয়ার পরে তিনি দেখলেন,কোথায় অর্ধেক রুটি আর অর্ধেক বোতল মদ।সেখানে বারোটা বড় রুটি আর বারো বোতল উন্নতমানের মদ রাখা।তিনি বেশ অবাক হলেও তখনকার জন্য ব্যাপারটা চেপে গেলেন।তিনি রুটি আর মদ দিয়ে তার অতিথিদেরকে খুব ভালমতো আপ্যায়ন করলেন।বাকে রাতটুকু এভাবেই কেটে গেল।

পরের দিন সকালে অতিথিদের বিদায় নেওয়ার সময় তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য পাদ্রী কে জিজ্ঞেস করল,”আপনি কি জানেন আমরা কারা?”পাদ্রী উত্তর দিলেন,”আমি জানি না আপনারা কারা,তবে এটুকু বুঝেছি যে আপনারা সাধারণ কেউ নন।”সর্বকনিষ্ঠ সদস্য বললেন,”আপনি ঠিকই ধরেছেন।আমাদের বারোজনের দলের যিনি নেতা,তিনি হলেন স্বয়ং ঈশ্বর।”আমরা সবাই আপনার উপরে খুব খুশি হয়েছি।আপনি এখন ঈশ্বরের কাছে যেই বর চাইবেন,ঈশ্বর আপনাকে সেটাই মঞ্জুর করবেন।আমরা একটু পরেই আপনার কাছ থেকে বিদায় নেব,তার আগে আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনার বর টা চেয়ে নিন।“

পাদ্রী ঈশ্বরের কাছে গিয়ে বললেন,”হে প্রভু।আমার বসার ঘরে যে টুল আছে,ওটাতে কেউ বসলে আমি না বলা পর্যন্ত যেন সে উঠতে না পারে”।ঈশ্বর বললেন,”তথাস্তু”।

বর চেয়ে ফিরে এলে সেই সর্বকনিষ্ঠ সদস্য বললেন,”আপনি এটা কি বর চাইলেন?আপনি আবার ঈশ্বরের কাছে যান,আবার বর চান।”

পাদ্রী আবার ঈশ্বরের কাছে গিয়ে বললেন,”হে প্রভু।আমার বাড়ির উঠানে যে আপেল গাছ আছে,ওটাতে কেউ উঠলে আমি না বলা পর্যন্ত যেন সে নামতে না পারে”।ঈশ্বর বললেন,”তথাস্তু”।

বর চেয়ে ফিরে এলে সেই সর্বকনিষ্ঠ সদস্য বললেন,”আপনি আবার এটা কি চাইলেন?আমরা চাচ্ছি যেন আপনি,আপনার জন্য ভালো হয় এরকম কোনও বর চেয়ে নিন,আপনি তা না করে কি অদ্ভুত সব বর চাচ্ছেন?আপনি আবার যান,গিয়ে ভালো কোন বর চেয়ে আনুন।আর মনে রাখবেন,প্রভু একবারে তিনটার বেশি বর কিন্তু কখনই দেন না।“

পাদ্রী আবার ঈশ্বরের কাছে গিয়ে বললেন,”হে প্রভু।আমি যেন কখনও তাস খেলায় না হারি”।ঈশ্বর বললেন,”তথাস্তু”।

পাদ্রীর এই বর চাওয়ায় সর্বকনিষ্ঠ সদস্য এবং অন্যান্যরা খুব বিরক্ত হলেন।সর্বকনিষ্ঠ সদস্য বেরোনোর আগে বললেন,”আপনি মানুষ হিসেবে খুবই ভালো কিন্তু অনেক বকা।নাহলে ঈশ্বরের কাছ থেকে বর পাওয়ার সুযোগ পেয়েও যে কেউ এরকম অদ্ভুত বর চাইতে পারে,আজ না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।যাই হক,ভাল থাকবেন।”



(চলবে...............)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:০৩
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×