somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাফিয়া হাসিনার সরকারের সমালোচনা করায় আলীগ এমপিরাও যখন ষড়যন্ত্র বিভেদ সৃষ্টিকারী, তখন বিএনপির সংসদ বর্জনও যৌক্তিক!

২৪ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে হাসিনার সরকার তড়িঘরি করে ফারাক্কার চুক্তি করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে। ঐ সময় বিএনপি জামাততো বটেই জাপাও দাবী করে কি কি শর্তে ভারতের সাথে ফারাক্কা চুক্তি হবে তা সংসদে আলোচনা ও অনুমোদন নিয়ে করা হউক। কিন্তু বাপের বেটী হাসিনা চুক্তির বিষয়াদি না জানিয়েই ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে দিল্লীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার সাথে ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি করেন। সেই চুক্তির পরিণতি আমরা দেখছি যে শুস্ক মৌসুমে চুক্তিবিহীন সময়ের চেয়েও কম পানি পায় বাংলাদেশ। কতবার বলা হয়েছে যে গ্যারান্টি ক্লজ সহ চুক্তি করতে কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয় নি। উপরন্ত হাসিনা বিএনপিকে টিটকারী দেয় যে তারা চায়না পদ্মায় পানি আসুক। এরপর একই ভাবে ৩টি অবৈধ শর্তে সংসদকে না জানিয়ে ১৯৯৭ সালে পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি করা হয়। ঐ সময় বিএনপি বার বার বলেছিল এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের অখন্ডতা হুমকির মধ্যে পড়বে, উল্টো আওয়ামী-বাকশালীরা খালেদাকে টিটকারী দেয়। বস্তত অগণতান্ত্রিক ও বাকশালী আচরণের জন্যই দেশ বিরোধী চুক্তি সমূহ সহ বিনা আলোচনায় এবং বেশীর ভাগ আভ্যন্তরীন উন্নয়নে বিরোধী দলের পরামর্শতো দূর খোদ সরকারী দলে সামান্য আলোচনা করে ঢালাও ভাবে কাজের অনুমতি দেয়। যে স্বৈরাচার এরশাদ ও খালেদার ১৯৯১-৯৬ সালে বাংলাদেশ র্দূনীতির ১-১০ ছিল না হাসিনার ৪ বছরের দু্ঃশাসনে তা এক লাফে ২০০০ সালে বিশ্বের শীর্ষ র্দূনীতিগ্রস্থ দেশে পরিণত হয়। এটাই ছিল হাসিনার প্রথম আমলের সংসদ ও সরকারের একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র।

এরপর ভারতীয় ষড়যন্ত্রে ১/১১ ঘটিয়ে কারচুপির মাধ্যমে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হয়ে আসে। হাসিনা নির্বাচনের পূর্বে বলেছিল দিন বদলের রাজনীতি এবং বিরোধী দল হতে একজন ডেপুটি স্পীকার হবে। কিন্তু যেই ক্ষমতায় আসল হাসিনাকে আর চেনাই গেল না। তখন তামাশা করে বলে কই বিএনপিতো প্রস্তাব দিল না! ইতিমধ্যে বিগত জোট সরকারের ২ বছরের বেশী সময় চলে গিয়েছিল। তারপর যদিও বলেছিল দিন বদল হল অতীতে কি হয়েছিল তার বিষয়ে না গিয়ে তারা কি সুষ্ঠ উন্নয়ন করবে সেটাই হবে মূল এজেন্ডা, কিন্তু দেখা গেল যে জোট সরকার উমুক করেনি তুমুক করেনি। এভাবে করেই ১ বছর কাটিয়ে দিল। একটি সরকারের গোছগাছ করতে ৩ মাস লাগে। সেখানে তারপক্ষে ৩ মাস নয় ৬ মাস বিগত সরকারের সমালোচনা যৌক্তিক। কিন্তু আজকে আড়াই বছর এবং জোট সরকারের বিদায়ের প্রায় ৫ বছর হয়ে এল তারপরেও দেশের বর্তমানে র্দূনীতি, অনিয়ম, অব্যাবস্থাপনা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ইত্যাদি সীমাহীন দূরাবস্থার জন্যও নাকি বিগত জোট সরকারই দায়ী। যেখানে ক্ষমতায় এসেই ৩-৬ মাসে গ্যাস-বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, শিল্পায়ন, দ্রব্যমূল্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে তার তেমন কিছুই এই সরকার করতে পারে নি। স্রেফ ভারতকে দেশের ক্ষতি করে একতরফা করিডোর এবং অন্যান্য সুবিধা দেওয়া এবং নিজেরা শেয়ার বাজার, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ সহ বিভিন্ন খাত হতে লুটপাট ও যুবলীগ-ছাত্রলীগদের টেন্ডারবাজি, চাদাবাজি এবং দখলেরই উৎসব চলছে। আর বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন প্রশাসনিক, বিচারকি এবং এমনকি প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে দলীয় খুনীদের মৃত্যুদন্ড হতে রেহাই দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও হাসিনা, মুহিত, মতিয়া, ফারুক, সাহারা সহ সব মন্ত্রী এবং হাসিনার উপদেষ্টা মন্ডলী সবাই বলছে তারা এই আড়াই বছরে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন করেছে তা নাকি বিগত ৩৭ বছরে হয়নি। দেশে যে বর্তমানে বিভীষিকাময় অবস্থা তা বিবেকবান মানুষ মাত্রই একমত হবেন। এই যখন অবস্থা তখন এই আগষ্ট ২০১১র সংসদ অধিবেশনে আলীগের শতাধিক এমপি অর্থ ও যোগাযোগ মন্ত্রীর ব্যার্থতা, অনিয়ম ও র্দূনীতি, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে প্রবল সমালোচনা করে বলছে যে এভাবে সরকার চললে গণবিস্ফোরণ ঘটবে তখন দলের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ আবিস্কার করলেন গভীর ষড়যন্ত্র;

Click This Link

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। সে চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। যেকোনো সময় সুযোগ পেলে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। কিছু পত্রিকা, কিছু টেলিভিশন চ্যানেল বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন সৈয়দ আশরাফ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে দলের সঙ্গে সরকারের মধ্যে বিভেদ ও দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। কারণ তারা জানে, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা যাবে না। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

আশরাফের কথার অর্থ দাড়াল এই যে সরকারী দলের এই শতাধিক এমপিরা দেশের বিস্ফোরণ মুখ অবস্থার কথা বলছেন তা মিথ্যা বৈ সত্য নয়। সারাদেশে প্রলয় কান্ড চলছে কিন্তু আশরাফ চোখ ও কান বন্ধ করে রেখেছেন। অথচ এই শতাধিক এমপিরা যে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হয়ে কঠোর সমালোচনা এবং গোস্বার মুখে পড়ছেন এটা ঠিক নয়। দেশের এই অবস্থা নাকি কিছু পত্রিকা ও টিভি সৃষ্টি করেছে। তাই আলীগ এমপিরা এভাবে দলে বিভেদ সৃষ্টির চক্রান্তের শিকার। এই ষড়যন্ত্র সফল হলে হাসিনাকে হত্যা করা হতে পারে তাও আশরাফ নিশ্চিত। দেশের জাহান্নামের দিকে যাচ্ছে তাতো শুধরানোর কোন উদ্যোগতো নাই উল্টা কঠোর সমালোচনাকে ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতির ট্যাগ লাগাচ্ছে। অর্থাৎ দেশে যতই বিপর্যয় আসুক সরকারের দোষের সমালোচনা করলে সে হবে ষড়যন্ত্রকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী এবং হাসিনাকে হত্যার চক্রান্তকারী। তারা বলে যে বিএনপি সংসদে এসে কথা বলুক। কিন্তু তারা আসেনি। কারণ সেই ১৯৯৬-২০০১এ তো বটেই এই ডিজিটাল-বাকশাল আমলেও জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা, খালেদা সহ বিএনপির বিরুদ্ধে অশোভন সমালোচনা করে তাদেরকে হাসিনার হত্যা প্রচেষ্টাকারী হিসেবে উল্লেখ করা এবং সংসদে ঠিক মত কথা বলতে না দেওয়াই হল সংসদ বর্জনের কারণ। তবে বিএনপি এই বছরের শুরু হতেই বলে আসছির দেশ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে এবং গণ-বিস্ফোরণও ঘটবে। এটা কি আলীগ কি বিএনপি কারো বানানো কথা নয় বরং জনগণের সত্য ক্ষোভের কথা। আজকে বিএনপি এই কথা সংসদে যেয়ে বললে হাসিনা ও আশরাফ গংরা বলত যে বিএনপি ষড়যন্ত্র ও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করছে। সংসদে যদি সরকারী দলের এমপিরাই দেশের ও মানুষের দূরাবস্থার প্রতিকার চেয়ে কোন কথা বলে তাদের মূল্যায়নতো দূল উল্টা কু-রাজনৈতিক মন্তব্য শুনে তখন বিরোধী দলের কোন ভূমিকা থাকে কি? বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করছে হাসিনা, তার উপদেষ্টা তৌফিক, মসিউর, ইমাম, রিজভী এবং মন্ত্রীবর্গ নামক রাজনৈতিক মাফিয়ারা। তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের এবং মাঝে মাঝে সুরঞ্জিত সরকারকে উপদেশ দিলেও হাসিনা তা আমলে নেন না। কয়েকদিন আগে প্রথম আলোতে দেখলাম এবিএম মুসা সুরঞ্জিতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছেন যে হাসিনাকে এক কথা একবারের বেশী বলতে গেলেই পরবর্তী নির্বাচেনর জন্য দল হতে নমিনেশন ক্যানসেল। এও জানি যে বাঘে ধরলে ছাড়ে কিন্তু হাসনিা ছাড়ে না :)

প্রশাসনতো কোন কথাই নেই বিচার বিভাগও কব্জায় এবং প্রেসিডেন্ট জিল্লুর হুকুমের দাস সেখানে কি জনগণ কি বিরোধী দল কারো পক্ষে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সুবিচার পাওয়া সম্ভব না। এই হাসিনার মাফিয়া চক্রের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে বিএনপির সংসদ বর্জন চলুক এবং রোজার পর দূর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:২৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×