somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আস্তিকতা আর নাস্তিকতা: সায়েন্সের ধারক ও বাহক

২০ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানিং খুব একটা আলোচিত বিষয় হল নাস্তিকতা। কি ব্লগে, কি পত্র পত্রিকায় বা বন্ধুদের আড্ডায়। হঠাৎ এই বিষয়টা এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ কি? মনে হয় মানুষ এই সময়ে এসে খুব বেশি জ্ঞান বিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে গেছে আর মহাবিশ্বের তাবৎ সবকিছু জেনে ফেলেছে।

এই বিষয়টা নিয়ে কিছু ভাবতে গেলেই প্রথমে যে জিনিষটা খেয়াল করা যায় তা হল নাস্তিকেরা খুব বিজ্ঞানমনস্ক হয়। এই ব্লগেও কিছু পোস্ট খেয়াল করলেও দেখবেন যে তাদের খুব চিন্তা কিভাবে পবিত্র কোরআন কে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখা করা যায়। বিজ্ঞান কি বলে আর আমরা কি কি অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে কোরআন বিশ্বাস করি সেটা প্রমাণ করাই এই বিজ্ঞানমনস্কতার মুল উদ্দেশ্য। জীন জাতিকে যে বিজ্ঞানের কোন সুত্র দিয়ে ব্যাখা করা যায় না, ফেরেশতা বা ওহী নাজিল হওয়াটাও যে বিজ্ঞান ব্যাখা করতে পারে না সেটাই এইসব আলোচনার ভিত্তি। কিন্তু মানুষের মস্তিস্কের সীমাবদ্ধতা দেখলে খুব দুঃখ লাগে। নিউটন আর আইনসটাইন সাহেব কয়টা সুত্র আবিস্কার করেছেন আর কতটা রহস্যই বা সমাধান করেছেন? এখনো বিলিয়ন বিলিয়ন সুত্র আর রহস্য অজানাই রয়ে গেছে যা জানতে পারলে হয়ত মানুষ বুঝতে পারত নিজেকে সবজান্তা ভাবাটা আসলে ভুলই ছিল।

একটা মাছ যখন পুকুরে থাকে তখন তার কাছে মনে হয় পৃথিবীর তাবৎ রহস্য মনে হয় তার জানা হয়ে গেছে, রহিমের বাড়ির কোনা থেকে করিমের উঠান পর্যন্ত হল সব রহস্যের সমাধান। তাকে সমুদ্রে নিয়ে গেলে মনে হয় সে বুঝতে পারবে সবজান্তা ভাবাটা খুব হাস্যকর।

যারা সত্যিকারের বিজ্ঞান বুঝে (না বুঝে যারা বিজ্ঞানের বুলি কপচায় তারা বাদে) একটা জিনিস তারা নিশ্চয় বুঝে, সেটা হল "Scope/Limitation"। একটা ছোট উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা পরিস্কার হবে। যারা "Programming" এ কাজ করেন তাদের কেউ যদি কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এ একটা কোডিং করেন যেখানে শুধু ২টি সংখ্যার যোগফল বের করা যাবে। আপনি হাজার চেষ্টা করলেও সেখানে গুন বা ভাগ করতে পারবেন না। ফোটশপ এ ভেকটর গ্রাফিক্স বা ইলাস্ট্রেটর এ বিটম্যাপ আকতে গেলেও আপনি সমস্যায় পরবেন। যে সেটআপ এর ভিতর আপনি বসবাস করছেন সেটার বাইরের বিষয় নিয়ে যত সুত্রই প্রয়োগ করেন না কেন জানাটা বেশকিছুটা কঠিনই হবে। বেগুন কাটার বিদ্যা দিয়ে নারিকেল কাটা কি ঠিক? আপনি পৃথিবীতে বসে মহাবিশ্বের সব সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন নিউটনের সুত্র দিয়ে, তাহলে তো ভাই ঘরে ঘরেই নাসা তালাশ করত - মহাবিশ্বে না। কেউ কি এখনো বলতে পারবে যে মহাবিশ্বে কি কি ম্যাটেরিয়াল আছে? আল্লাহই জানেন, এন্টিম্যাটার আবিষ্কার না হলে সেটা মানুষ কিভাবে বাংলাদেশের ঘরে বসেই বলে দিত। তাও যদি যা জ্ঞান বা সুত্র আবিষ্কার হয়েছে তাও সব জানতে পারতাম। অল্পবিদ্যা আসলেই ভয়ংকর।

কিছুদিন আগে স্টিফেন হকিন্সের একটা লাইন দেখলাম পত্রিকায়, যেখানে তিনি বলেছেন মৃত্যুর পর কোন জীবন নেই। তার মতে মানুষ মারা যাওয়াটা অনেকটা কম্পিউটার সাট ডাউন এর মত ব্যাপার। তবে বিজ্ঞানের এত বড় একজন লোক হয়ে তিনি যেখানে একটু ভুল করে ফেলেছেন সেটা হল তুলনায়। বিজ্ঞানের যেকোন তুলনায় কিন্তু ব্যাখা জরুরী যেটা করতে না পারার কারণে অনেক বিজ্ঞানীর আবিস্কার গ্রহণ করা হয়নি। কম্পিউটার সাট ডাউন যদি মৃত্যুর সাথে তুলনা করা হয় তবে কথা আসে যে কম্পিউটারের তো একজন প্রস্তুতকারক আছেন, তাহলে তো মানুষেরও তো সৃষ্টিকর্তা থাকা উচিত। এই ধরনের একটা দুর্বল তুলনার কারনে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের কিন্তু পরবর্তীতে সংশোধনের প্রয়োজন হয়েছিল।

মানুষ হিসাবে আমাদের উচিত নিজেদের সীমাবদ্ধতা বুঝে চলা। সাথে এইটাও বুঝতে হবে যে কিছু প্রমাণ করতে হলে প্রয়োজনীয় টুল লাগে। আইনসটাইন "E=MC2" আবিস্কার না করলে তো আজকে আমরা পারমাণবিক শক্তিকেও অস্বীকার করে বসতাম। আবিস্কার নাও হতে পারত। নিজেকে কেন আমরা এত সবজান্তা মনে করি?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×