somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যারা যারা মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীর শ্রেস্ঠ সন্তান বলে মুখে ফেনা তুলেন তাদের জন্য X((X((X((X((X((

১৯ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি তেমন পড়াশোনা করতে পারেননি , মোটামুটি মানের শিক্ষিত বলতে পারেন।

উনার আত্নসম্মানবোধ প্রখর ছিল, উনি নিজের এবং তার স্বজাতিকে বৈষম্মের শিকার হতে দেখে কষ্ঠ পেতেন, হায়েনারা বাঙালীকে মানুষের মত মূল্যায়ন করে না বলে উনার খারাপ লাগত। উনি সবসময় বৈষম্মহীন গর্বিত এক বাঙালী জাতির স্বপ্ন দেখতেন।

উনি বিশ্বাস করতেন একমাত্র স্বাধীনতাই সব সমস্যা দুর করতে পারে। তাই মাত্র ১৮-২০ বছর বয়সে শত্রু খতম করে দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলেন। নয় মাস ধরে প্রতি মূহুর্তে নিজের জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে বাঙালীদের স্বাধীনতা অর্জনে ভুমিকা রেখেছিলেন।

উনি তার বিনিময়ে কিছুই আশা করেননি, অভাব অনটন বিহীন সম্মানীত জীবন যাপন করার স্বপ্ন ছিল তার মধ্যে।

দেশ স্বাধীন হয়েছে বহু বছর, এতদিনে বাবা বহুকিছু দেখেছেন। আমিও বাবার বড় সন্তান হিসেবেও বহুকিছু দেখেছি। এতদিনে আমার উপলব্ধি হয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শেস্ঠ সন্তান শুধু বইয়ের পাতায়। তাদেরকে সবসময় লিখিত ভাবে সম্মান দেয়া হয় আর বাস্তবে শুধু অপমান ছাড়া আর কিছু করা হয় না। যাই হোক এগুলা বিশাল ঘঠনা সামনে হয়ত ধারবাহিক ভাবে লিখব।

গতকালের একটা ঘঠনা বলি

দেশে আবার মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন করে সনদ দেয়া হচ্ছে। আর এ জন্য ২ কপি ছবি জমা দিতে হবে, আর সেই ছবি প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করাতে হবে। বাবা গতকাল সকালে সেই ছবি সত্যায়িত করানোর জন্য মতিঝিলস্থ রাজউক ভবনে গিয়েছিলেন।

এ ভবনে তিন তলায় সর্বমোট ৪০ টারও বেশী কক্ষ আছে আর সব কক্ষ মিলিয়ে এ ভবনে গেজেটেড কমকর্তা রয়েছেন আমার ধারনা মতে প্রায় ৩০ জনেরও বেশী।

আর এই রাজউক ভবনে আমার বাবাকে ২ কপি ছবি সত্যায়িত করার জন্য প্রতিটা রুমে রুমে যেয়ে সম্মানীত গেজেটেড কর্মকর্তাদের অনোরোধ করতে হয়েছে। সম্মানিত গেজেটেড কমকর্তারা একজন মুক্তিযোদ্ধার ছবি সত্যায়িত করতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা তার এই অনোরোধের প্রেক্ষিতে তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে একপ্রকার তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। X((X#

আমার বাবা তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেখানোর পরও অনেক সম্মানিত গেজেটেড কর্মকর্তারা জিজ্ঞেস করেছেন, আপনাকে ত আমার চিনি না আমার কোন আপনার ছবি সত্যায়িত করব? X((X((X((

আমার বৃদ্ধ বাবা প্রায় দুই ঘন্ঠা ধরে দুই কপি ছবি সত্যায়িত করার জন্য রাজউকের ৩ তলার প্রায় সব রুমের কর্মকতাদের অনোরোধ করার পরও তার ছবিতে কোন সম্মানিত গেজেটেড কর্মকর্তাদের সাইন আর সীল জোঠেনি।
[ X((X((X((

শেষমেষ এক কমকর্তা আমার বাবাকে সিলেটের এক গেজেটেড কমর্তার রুম নাম্বার বলে তার কাছ থেকে যেয়ে সত্যায়িত করাতে বলেন কারন আমাদের গ্রামেরবাড়িও সিলেট। যাই হোক সিলেটের ওই কর্মকর্তার রুমে যাওয়ার পরে ঘঠে আরেক বিপত্তি, ভদ্রলোক আজ অফিসে আসেননি এখন কি হবে।

বাবা আবার পাশের রোমের সম্মানিত গেজেটেড কমকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলী, মোঃ শাহজাহান এর কাছে যেয়ে অনোরোধ করেন কিন্তু প্রথমে তিনিও দিতে রাজী হননি। তারপর তাকে বহু কষ্ঠে বুঝিয়ে এবং বহুবার অনোরোধ করে অবশেষে পেলেন সেই বহুল কাঙ্খিত গেজেটেড কর্মকর্তার সীল।

বাবার মুখে এই ঘঠনা শুনার পর আমি বিব্রত হইনি কারন বোঝ হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এরকম বহুবার দেখেছি। একসময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে গর্ব বোধ করলেও এখন কেমন জানি মনে হয়। :( :( :(

এসব ঘঠনা শুনার পর শুধু বাবার সেই স্বপ্নগুলার কথা মনে হয়।
---------------------------------------------------------------------------
উনি নিজের এবং তার স্বজাতিকে বৈষম্মের শিকার হতে দেখে কষ্ঠ পেতেন, বাঙালীকে মানুষের মত মূল্যায়ন করে না বলে উনার খারাপ লাগত। উনি সবসময় বৈষম্মহীন গর্বিত এক বাঙালী জাতির স্বপ্ন দেখতেন। উনি বিশ্বাস করতেন একমাত্র স্বাধীনতাই সব সমস্য দুর করতে পারে।
---------------------------------------------------------------------------

হ্যা বাবা তোমার স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে, বাঙালী আজ বৈষম্যহীন গর্বিত এক জাতী। তারা আজ সমঅধিকার পায়। তাদরেকে আজ আর শাষক বাহিনী বন্দুকের নলের ভয়ে মাথা নত রেখে কথা বলে না। তাদেরকে আজ আর কেউ নির্বিচারে হত্যা করে না। বাঙালীরা আজ তাদের যোগত্যা অনুষারে চাকুরী পায়।

হ্যা বাবা বাঙালীরা আজ গেজেটেড কর্মকর্তা,

তারা আজ আর সেদিনের মুক্তিযোদ্ধাদের অর্জনের কথা মনে রাখে না,

লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন, তার মাঝে তোমার মত সমান্য এক মুক্তিয়োদ্ধাকে অপমান করলে কার কি আসে যায় ?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৩৬
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×