somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাসপোর্ট করার নিয়ম

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাসপোর্টের সাহায্যে বিভিন্ন আইনি সহযোগিতাও পাওয়া যায় দেশে ও দেশের বাইরে। ব্যবসা, চাকরি, ভ্রমণ, লেখাপড়া যে কারণেই হোক না কেন প্রতিদিনের অনেক প্রয়োজনীয় কাজকর্মে ব্যবহার হয় এ পাসপোর্ট। কিন্তু আমরা অনেকেই ভালোভাবে জানি না যে, কীভাবে পাসপোর্ট তৈরি করতে হয়। ভালোভাবে না জানার ফলে অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। তাছাড়া ডিজিটাল যুগের ছোঁয়া লেগেছে পাসপোর্টেও। এসেছে নতুনত্ব। নতুন এ ডিজিটাল পাসপোর্টের নাম এমআরপি যার পূর্ণরূপ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। কী সুবিধা থাকছে এ পাসপোর্টে? কোথা থেকে করবেন এই পাসপোর্ট? খরচইবা কত? জানাচ্ছেন- নজরুল ইসলাম।
পাসপোর্টের আবেদন
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট যার সংক্ষিপ্ত রূপ এমআরপি (MRP)। এমআরপির জন্য বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর নতুন আবেদন ফরম তৈরি করেছে। যা আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া http://www.dip.gov.bd -এই ওয়েবসাইট থেকেও ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর একটি রঙিন ছবি নির্ধারিত স্থানে আঠা দিয়ে লাগানোর পর সত্যায়িত করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্করা তাদের মা-বাবার একটি করে স্টাম্প সাইজ রঙিন ছবি নির্ধারিত স্থানে লাগিয়ে সত্যায়িত করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদের ফটোকপি এবং সাথে থাকবে ব্যাংক টাকা জমা দেওয়া রসিদ।
সাধারণ এমআরপি’র জন্য টাকা জমা দিতে হয় ৩০০০ টাকা। ১৫ দিনে পেতে হলে লাগে ৬০০০ টাকা । আবেদনকারীকেই আবেদন ফরম জমা দিতে হবে কারণ চারটি আঙুলছাপ রাখা হচ্ছে। তোলা হচ্ছে মুখের ছবি, নেয়া হচ্ছে স্বাক্ষর।
আবেদনের সঙ্গে যে সমস্ত কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে
- চেয়ারম্যান/ ওয়ার্ড কমিশনার প্রদত্ত সনদ/ ভোটার আইডি কার্ড/ জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা বিদ্যুৎ, গ্যাস/ পানির বিল/ বাড়ির দলিলের ফটোকপি ইত্যাদি।
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র/পরিচয়পত্র দাখিল করতে হবে।
- ছাত্র/ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র/ পরিচয়পত্র দাখিল করতে হবে।
পাসপোর্ট করার সময় লক্ষ্যণীয়
- আবেদনকারী নির্ধারিত ফরম অথবা আবেদন ফর্মের অবিকল টাইপ, সাইকোস্টাইল, ফটোকপিকৃত ফর্মে আবেদন করতে পারেন।
- আবেদনকারীকে বাংলা বা ইংরেজিতে দু’ কপি আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
- আবেদনকারীর তিনটি পাসপোর্ট সাইজ এবং একটি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি লাগবে। ছবি দু’টি আবেদনপত্রের প্রতিটির প্রথম পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থানে লাগাতে হবে । ছবির উপরে সত্যায়িত করতে হবে।
- পনের বছরের কম বয়সি শিশুদের পাসপোর্ট তাদের মায়ের সাথে একত্রে করতে পারবে।
- পনের বছরের কম বয়সি শিশুদের পৃথক পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মা ও বাবা দুজনের অথবা বৈধ অভিভাবকের স্ট্যাম্প সাইজ দুইটি ছবি আবেদন পত্রের নির্দিষ্ট জায়গায় লাগাতে হবে এবং ছবি সত্যায়িত করতে হবে।
- নতুন পাসপোর্ট বারো বছরের কম বয়সি সন্তানের নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ৪ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি লাগবে।
- পাসপোর্টের আবেদনপত্র ও ছবি সত্যায়ন করতে পারবেন- সংসদ সদস্য, সিটি করর্পোরেশন মেয়র, ডেপুটি মেয়র, কমিশনার, গেজেটেড কর্মকর্তা, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর কমিশনার, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক।
- নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদ অথবা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হলফনামা লাগবে।
- পেশা পরিবর্তন এর ক্ষেত্রে পরিবর্তিত পেশার সপক্ষে সনদ আবশ্যক হবে।
- স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভোটার তালিকা বা ভোটার পরিচয়পত্র অথবা পরিবর্তিত ঠিকানা সম্পর্কে যে কোন নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আবশ্যক হবে।
- সন্তানের নাম সংযোজনের ক্ষেত্রে ওই সন্তানের জন্ম সনদ আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে।
জমা দেয়ার নিয়মকানুন
আবেদনপত্রটির ভেরিফিকেশন করে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আবেদনপত্রে সিলসহ স্বাক্ষর করবেন। এরপর আবেদনপত্রটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিতে হবে। পাসপোর্ট অফিসেই বেশ কয়েকটি বুথ আছে, সেখানেই জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রটি জমা দেয়ার সময় পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত ব্যাক্তি আপনার তথ্যগুলো কম্পিউটারে এন্ট্রি করে রাখবেন। এরপর তিনি আপনাকে একটি টোকেন দেবেন। সে টোকেনসহ আবেদনপত্রটি নিয়ে ছবি তোলার জন্য আরেকজন কর্মকর্তার কাছে যেতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য যেভাবে ছবি তোলা হয়েছিলো, এখানেও একইভাবে নির্দিষ্ট মাপের ছবি তোলা হবে। এছাড়াও দুই হাতের আঙুলের ছাপও দিতে হবে ইলেকট্রনিক মেশিনে। এরপর নেয়া হবে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর। তবে, ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর আবেদনপত্রের স্বাক্ষরের সাথে যেনো মিল থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষে কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি আলাদা ডকুমেন্ট দেবে এবং আবেদনপত্রটি রেখে দিয়ে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার তারিখও জানিয়ে দেবেন।
পাসপোর্ট সংগ্রহ
কর্তৃপক্ষের দেয়া তারিখে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা যাবে। তবে, এই সময়ের মধ্যে অবশ্যই পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হতে হবে। পাসপোর্ট দেয়ার আগে ডিবি পুলিশ বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানায় ভেরিফিকেশন করে। আর পুলিশের রিপোর্ট প্রদানের পরই পাসপোর্ট পাওয়া যাবে।
ওয়ানস্টপ সার্ভিস
ওয়ানস্টপ সার্ভিস পাওয়ার জন্য আপনাকে সাধারণ পাসপোর্টের মতোই ফরম সংগ্রহ করা জমাসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে । এক্ষেত্রে ফি’র পরিমাণ ৬৪ পাতার জন্য ৬০০০ টাকা ৪৮ পাতার জন্য ৫০০০ টাকা। পাসপোর্ট পেতে সময় লাগবে ২-৩ ঘণ্টা। যে কোনো ধরনের ভুল-সংশোধন করতে ফি লাগবে ৫০০ টাকা। নবায়ন করলে ফি লাগে ২৫০০ টাকা। উল্লেখ্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদান করে পুলিশ ভেরিফিকেশনে পাঠানো হয়। যদি বিরূপ প্রতিবেদন পাওয়া যায় তাহলে পাসপোর্ট বাতিল।
যেখান থেকে বানাবেন মেশিন রিডেবল
ক. আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস : ঢাকা শহরের সবুজবাগ, মতিঝিল পল্টন থেকে শুরু করে আশুলিয়া সাভার, ধামরাই মোট ২৮টি থানার লোক এখান থেকে পাসপোর্ট করতে পারবে।
খ. ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় : ঢাকা মহানগরের ও জেলার বাকি ১০ টি থানায় বসবাসকারীরা এখন থেকে পাসপোর্ট করতে পারবেন।
গ. দেশের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলো থেকে পাসপোর্ট বানাতে পারবেন।
ঘ. এছাড়া প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাসপোর্টে আলাদা শাখা থেকে পাসপোর্ট বানাতে পারেন।
ঙ. প্রতিটি জেলার জিপিও থেকে পাসপোর্ট বানাতে পারেন।
সেবার সময়
সাধারণত ফরম বিতরণ ও জমা নেয়া হয় প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১:৩০ মিনিট পর্যন্ত। আর পাসপোর্ট বিতরণ করা হয় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সরকারি ছুটির দিন (শুক্র ও শনিবার) বাদ দিয়ে সপ্তাহের বাকি পাঁচ দিন খোলা থাকে।

৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×