somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার অধিকার আপনাদের কে দিল?

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনারা হরতাল করবেন করুণ। আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলব, আমাকে বাধা দিতে পারবেন না। আমার মা-বাবা-স্ত্রী-পরিজনের ভরন পোষণ আমাকেই করতে হয়। আপনার কোন অধিকার নেই আমার রুটিরুজির পথ বন্ধ করে দেয়ার। আপনার কোন অধিকার নেই আমার দোকানে হামলা চালানোর। গায়ের জোরে আমার দোকান বন্ধ করে দেয়ার।

আমি গাড়ী নিয়ে রাস্তায় বের হব। আপনার পোষা হিংস্র হায়েনাগুলোকে বলুন আমার বা আমার গাড়ীর কোন ক্ষতি না করতে। এটা কারো দান বা কোন রাজনৈতিক দলের দালালি করে আমি পাইনি। এটা আমার কষ্টের পয়সায় কেনা। আপনাদের ডাকা হরতালে যদি আমার গাড়ীটির কোণ ক্ষতিসাধন করা হয় তাহলে আপনাকেই এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদি না দেন নিজেকে নেতা বলে পরিচয় দিতে পারবেন না। স্বীকার করুণ আপনি একজন স্বেচ্ছাচারী। আপনার পোষ্যগুলী সন্ত্রাসী। তাহলে অন্তত আমার সরল সোজা ভাইটি আর আপনার সমর্থনে মিছিলে যোগ দিয়ে লাশ হয়ে ফিরবে না।

আপনারা হরতাল করবেন করুণ। আমার সন্তানকে স্কুলে যেতে দিন। তাঁর শিক্ষককে স্কুলে যেতে দেন। আপনার মত আমার সামর্থ্য নেই সন্তানকে বিদেশে রেখে লেখাপড়া করানোর। আর তাছাড়া আমি আপনাদের মত হিপোক্রেট নই যারা নিজেদের সন্তানদের সামলে রেখে অন্যের সন্তানকে দিয়ে নৈরাজ্য করে বেড়ায়। তাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়। আপনারা হরতাল করবেন করুণ। নিজেদের দেশপ্রেমী বলে জাহির করে হাস্যকর করে তুলবেন না। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক দেশের ক্ষতি করে ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠতে পারে না।

আপনারা হরতাল করবেন করুণ। আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আপনারা প্রয়োগ করবেন করুণ। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার অধিকার আপনাদের কে দিল? ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিবেন না। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটাবেন। মানুষকে নিরাপত্তা হীন করে তুলবেন। গায়ে পেট্রোল ঢেলে মানুষ পোড়াবেন। চিকিৎসককে কর্মস্থলে পৌছুতে দিবেন না। অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করবেন। বাবার কাঁধে ছেলের লাশ তুলে দিয়ে কুম্ভীরাশ্রু ফেলবেন। আর আমরা আপনাদের মাথায় তুলে নাচব এতটা বেকুব কেন ভাবছেন?

আপনারা হরতাল করবেন করুণ। দয়া করে জনসাধারণের দোহাই দিবেন না। এই মিথ্যাচারটা বন্ধ করুণ। ফেলানী নামের এক টুকরো বাংলাদেশ চারটি ঘণ্টা যাবত কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকে। একফোঁটা পানি সে পায় না। তখন আপনাদের দেশপ্রেম মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। পদ্মা সেতুর শোকে আমরা হায় হাসান হায় হোসেন বলে মাতম করি। আপনারা অঘোরে ঘুমান। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যায় আপনারা তুলনামূলক বিশ্লেষণে মাতেন। ক্ষমতার মোহে মত্ত হয়ে যে কোন শক্তির সাথে আঁতাত করতে আপনাদের বাধে না। রাষ্ট্র আক্রান্ত হয় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায় আপনারা তখনো শয়তানের পালে হাওয়া দেন। জনগণের কষ্টার্জিত টাকায় মাসোয়ারা নেন অথচ জনগণের দেয়া দায়িত্ব পালন করেন না। ক্ষমতার মসনদ দূরে সরে যেতে দেখে একেবারে পাগলপ্রায়। ক্ষমতায় আরোহণ আর ক্ষমতা ধরে রাখার খেলায় সাধারণ মানুষের ত্রাহি অবস্থা। এরপরেও আপনাদের মহামানবের কাতারে না ফেলে উপায় কি?

আপনারা হরতাল করবেন করুণ। সেইসাথে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করুণ নির্বাচনে হেরে গেলে সংসদ বর্জন করবেন। কথায় কথায় হরতাল আহবান করবেন। ছাত্রদের উচ্ছিষ্টের লোভ দেখিয়ে ক্যাডার বানাবেন। নিজেদের দুর্নীতিকে দেশ সেবা বলে চালিয়ে দিবেন। ধর্মকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করবেন। দেশের মানুষের প্রতি আপনাদের কোন দায়বদ্ধতা থাকবে না। এরপরেও তো আপনারাই নির্বাচিত হবেন। বিকল্প তো আর কিছু নেই। জনসাধারণকে বলতে তো পারবেন আপনারা মিথ্যাচার করেন নি। কোনরকম প্রতারণার আশ্রয় নেননি। আমরাও আমাদের সন্তানদের সত্যবাদী যুধিষ্ঠির বোঝাতে আপনাদেরই দেখিয়ে দেব।

আপনি কি আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কাজ না করলেও বেতন দিবেন? তাহলে এই শর্তে এ দেশের কোটি বেকারকে চাকুরী দিন। যদি না দেন তাহলে কেন একজন সাংসদ সদস্যের সব সুযোগ গ্রহণ করেও সংসদ বর্জন করেন। জনগণের অর্পিত দায়িত্ব পালন না করেও কোন নৈতিকতার জোরে তাদের শ্রমে ঘামে অর্জিত সম্পদ ভোগ করবেন।

এসব প্রশ্নের জবাব দেয়ার সময় এসেছে মান্যবর। দেশের কত শতাংশ লোক আপনাদের অন্ধভক্ত? আর কত শতাংশই বা পোষ্য? হিসেব কষে দেখুন কতটা বাকী রইল। যারা আপনাদের ক্রিয়াকলাপে চরম বিরক্ত। এরা যদি একবার ফুসে ওঠে, কি করবেন তখন? মোমের আলোয় দেখা জগতটা একান্তই নিজের মনে হয়। আলোটা নিভিয়ে দেখুন সত্যিই কতটা নিজের। যা ইচ্ছে তা না। এবার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটান নয়ত অস্তিত্ব সংকটে পড়বেন জনাব। প্রজন্ম চত্বর তারই পূর্বাভাস মাত্র।

[email protected]
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×