somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা, কিছু সমস্যা যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জানা দরকার

১২ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মতে বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হচ্ছে এদেশের মোটামুটি ৭০% তরুন ছেলে মেয়ে লেখাপড়ার প্রতি খুবই আকৃষ্ট। (পড়তে কারোর ভালো লাগে না, সে কথা আলাদা।) এই সময়ের প্রায় সবাই চায় সর্বচ্চো শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো কোনো অবস্থানে পৌঁছুতে।কিন্তু আমাদের দেশের পড়াটা এমন হয়ে গেছে যে দেশে এখন সাধারন গ্রেজুয়াশন করে কিছু হয় না। কোন কোন বিষয়ে তো দেশ থেকে মাস্টার্স করলেও চলে না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে বা শখের বসে বা নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য আজকের এই পরজন্মের একটা বড় অংশ বিদেশে পড়তে যেতে চাইছে। আগে যেখানে শুধু বাইরে গিয়ে থেকে যাবার চিন্তা ছিলও, সেটা এখন অনেক কমে বরং বাইরে পড়ে দেশে ফিরে আসার চিন্তায় স্থানান্তর হয়েছে।

আমার নিজের ইচ্ছা আছে বাইরে পড়তে যাবার। আমি যেহেতু environment, sustainable development, public policy, environmental change ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছি তাই এর আলোকে আমি যেসব সমস্যা দেখছি সেশব নিয়েই এখানে আলোচনা করছি।

বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি চায়

আমি ইউ.কে আর এমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব ঘেঁটে যতটুকু দেখলাম
--মুলত এদের সেমেস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর থেকে।
--কিছু কিছু ইউনিতে অবশ্য মার্চ এপ্রিলের দিকেও কিছু কোর্স অফার করে।
--মটামুটি ৮/১০ মাস আগে থেকেই এরা এদের পরবর্তী বছরের শিডিউল ঠিক করে রাখে। কোন কোন ইউনি ২/৩ বছরেরটাও তাদের ওয়েবে দিয়ে দেয়।
--ইউকে এর জন্য আইল্টস আর আমেরিকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টোফেলটাই ওরা চায়।
--দুঃখজনক ভাবে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ইউনির ই সোজা কথায় বেইল নাই।
--আমাদের দেশের ইউনিগুলোতে এম্নকি প্রায় সব পাব্লিকেও যে সেমিস্টার সিস্টেম চলে এটা ওরা জানেনা।( ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো)।

এপ্লায়ে কি কি সমস্যা আমাদের শিক্ষার্থীরা ফেইস করেন

--এক নম্বর, ৮০% ছাত্র জানেনই না যে কি ভাবে কি করতে হয়।
--ওয়েবসাইট এ গুতাগুতি করে কিছু সাধারন জ্ঞান আহরন ছাড়া অনেকেরই আর কোন লাভ হয় না।
--আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোন মন্ত্রনালয় বা অফিস নেই যারা পুরো প্রক্রিয়া ইত্যাদি দিয়ে আমাদেরকে সাহায্য করতে পারবে।
--অজস্র স্টুডেন্ট কাউন্সিলর অফিস যাদের কোন মানদণ্ড নেই, যা ইচ্ছা ফি রাখে কোনো জবাবদিহিতা নেই।
--অনেক সময় বাইরের ইউনিগুলো বিভিন্ন স্পট এডমিশনের মাধ্যমে ছাত্র নেয় বটে কিন্তু তাদের মান সম্পর্কে ছাত্রদের জানার কোন বাস্তবসম্মত উপায় থাকেনা। অনেককে আবার তত্থের অভাবে গ্রেজুয়াশন করার পর ও বাইরে গিয়ে গ্রেজুয়াশন করতে হয়।
--পড়ার খরচ খুবই বেয়বহুল। পুরোটাই বলতে গেলে ছাত্রদেরকে নিজেদের খরচে পড়তে হয়,( অল্প কিছু ছাত্র হয়তো স্কলারশিপ মেনেজ করতে পারেন।)
--আর্থিক ভাবে কিভাবে সাশ্রয়ী হওয়া যায় বা স্কলারশিপ পাওয়া যায় ছাত্ররা জানেন না। অনেক সময় বিভিন্ন ইউনিতে ছাত্রদের জন্য বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ পাঠালেও দেখা যায়, শিক্ষকরা সেই স্কলারশিপে বাইরে পড়তে চলে যান।
--সময় মত রেজাল্ট না দেওয়ার কারনে অ্যাপ্লিকেশন রিজেক্ট হওয়াও খুব সাধারন বিষয়।
--আমাদের দেশের পাস করে বের হবার সময় আর বাইরের আপ্লায়ের সময়ের অমিল।(যেমন কারো গ্রেজুয়াশন ডিসেম্বরে শেষ হলে সে সেপ্টেম্বর সেশন ধরতে চাইলে প্রায় ৯ মাসের গ্যাপ পরে যায়)

শিক্ষা মন্ত্রনালয়
--দক্ষ জনশক্তির জন্য শিক্ষার বিকল্প নেই।আপনারা প্লীজ যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী তাদের জন্য যথাযথ তত্থের বেবস্থা করেন। ঠিক মত তথ্য পেলে বাকিটা বাঙালি এম্নেই মেনেজ করে ফেলতে পারবে।
--জিম্বাবুয়ে ও তাদের দেশের ছাত্রদের জন্য অসংখ্য স্কলারশিপ রাখে, কিন্তু আমাদের দেশে এমন কোন সিস্টেম এখন পর্যন্ত আমি দেখি নাই। আমাদের বাজেটের একটা ছোট্ট অংশ কি আমরা এই খাতে রাখতে পারি না?
--যেসব বাইরের স্কলারশিপ আসে, সেগুলো সম্পর্কে তথ্য ছাত্রদের কাছে পৌঁছুতে হবে।
--বাইরের দেশের ইউনিগুলোকে জানাতে হবে আমাদের দেশের শিক্ষাদান সম্পর্কে। আমাদের ইউনিগুলো যে অনেকটাই উন্নতি করছে, আমাদের এখানে যেসব রিসার্চ হয় সেশব তাদেরকে জানাতে হবে।
--পরিবেশগত ভাবে আমরা এখন অত্যন্ত দুর্বল একটি দেশ হিশেবে পরিচিত। আমরা এটাকে কাজে লাগাতে পারি। আমরা উন্নত দেশগুলো থেকে compensation হিসেবে ছাত্রদের জন্য scholarship চাইতে পারি। অদেরকে আমাদের দেশ থেকে কম খরচে/ বিনা পয়সায় শিক্ষার্থী নেওয়া এবং তাদের যথাযথ থাকা খাওয়া নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারি।



পরিশেষে বলবো, ছোট্ট একটা দেশ। কিন্তু অগুনতি মানুষ। আমরা যদি manpower কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা চিন কিংবা ভারতের মত জায়গায় অনায়সে পৌঁছুতে পারবো। আমাদের দেশের students অনেক পরিশ্রমী। আমাদের সরকারের একটু সাহায্য আর সদিচ্ছা দেশকে নিতে পারে অনেকদুর।
২৪টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×