somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কমেডি নাকি ট্রাজেডি !! ১৫ :| :|:|:|:| :-/:-/:-/

১১ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(এই কাহিনীতে কমেডি হবার কোন চান্সই নাই। এইটা পুরাই ট্রাজেডি। তবুও শত্রুপক্ষের লোকের কাছে কমেডি হলেও হতে পারে। সেই চিন্তায় উল্লেখ করা হল। )

পার্ট ১

আম্মু যখন অফিস থেকে আসে, বাস ১০ নাম্বারে নামিয়ে দেয়ার পর বাকি রাস্তা আম্মা হেঁটেই আসে। এটার মূল কারণ হল, রিকশাওয়ালার পায়ে ধরে যদি বলা হয় ভাই দুপুরে আমার বাসায় লাঞ্চ কইরেন, ৫০ টা টাকা বেশি নিয়ে যাইয়েন, তবু আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন – তাও উনারা রাজী হন না। উলটা এমন চোখে তাকান যেন কী এক গভীর চিন্তার মাঝে তাঁকে বিরক্ত করা হল। :|:|

ত, হাঁটার পথে আম্মু বেশির ভাগ সময় টুকটাক বাজার করেও নিয়ে আসে। আসতে আসতে সাড়ে ৫ টা বা ৬ টার মত হয়। সাধারণত আমি বাসায় থাকলে এমন রুটিনই দেখি।

কয়েকদিন আগের এইচএসসির রেজাল্ট দেবার মৌসুমের ঘটনা। আমার ক্লাস শেষ হয়ে গেল দুপুর ২টায়। বাসে উঠে জায়গা পেলাম রোদের দিককার জানালায়। সেই অবস্থাতেই পড়লাম জ্যামে। বাস নামিয়ে দেয়ার পর শুরু হল রিকশাওয়ালার পায়ে ধরা। নাহ, উনারা কেউ রাজি না। X( হাঁটতে হাঁটতে বাসায় যখন এসেছি তখন ৫ টা। ক্লান্তির চূড়ান্ত। কোনমতে ঘরে ঢুকেই দেখি হায়রে, ইলেক্ট্রিসিটি নেই, আইপিএস এর চার্জও নেই। কুঁ কুঁ করতেছে। ওটা অফ করে দেয়ার পর ভরসার জায়গা একটাই। বাথরুম, শাওয়ার। তাড়াতাড়ি ড্রেস খুলে বাথরুমে যাওয়াটাই তখন মাথায় ঘুরতেছে। এমন অবস্থায় দরজায় নক।

নক নক। আমি ভাবলাম আম্মু আসছে। অতক্ষণে আমি পাগল হয়ে গেছি শাওয়ারের নিচে দাঁড়ানোর জন্য। X( ত এত কিছু না ভেবে সামনের টাওয়েলটাই কোমড়ে পেঁচিয়ে নিয়ে গেট খুলে দিলাম। চুল পুরা এলোমেলো, গরমে ঘামে আমি পুরা ভর্তা।

কিন্তু না !!!!!!!!!! আম্মা না !!!!!!!

পার্ট ২

এইচএসসির রেজাল্ট দিছে তার আগে দিন। জিপি ৫ পাওয়ায় খুশিতে মিষ্টি নিয়ে আসছে নিচের ফ্লাটের মেয়েটা !!!! ওহ নো। :((:((:(( ইন্টারপাশ মেয়ে। মেয়ে সুন্দরী হওয়ায় তার মা সবসময় তার সাথে থাকে। গত দু তিন বছরে তার সাথে আমার বড়জোর ২-৩ বার কথা হয়েছে (আমাকে সিড়িতে বলছিল, “একটু সাইড দিন প্লিজ।” B-) )। সেই মেয়ে এসেছে এবার একা, তার হাতে ট্রে; সেখানে কয়েকটা পিরিচ। তার মধ্যে একটা আমাদের জন্য। এক হাতে কষ্ট করে ট্রে ধরে আরেক হাতে কোন মতে পিরিচ টা এগিয়ে দিল।
এখন ত আমি ফেরত যেয়ে প্যান্ট শার্ট পড়ে আসতে পারি না। এগিয়ে ধরা পিরিচ রেখে দরজা লাগিয়ে ফেরত যাবো ? বললাম, “ওয়েইট, আমি আমাদের বাটিতে রেখে দিচ্ছি। তুমি এখনই পিরিচ নিয়ে যাও।” বলে পিরিচ হাতে নিলাম।

এই সময় মনে পড়ল আমার বডি সাইজ আর টাওয়াল সাইজের রেশিও টা যুতসই হয় নি। এমনিতেই খালি গা, খালি পা, তার মাঝে নড়তে যেয়ে যদি মাঝের অংশটাও খালি হয়ে যায়, এই জীবনে তাহলে থাকবে টা কী? :-/:-/:-/:-/ ঢাকায় নাকি ভূমিকম্প হবে ! তখন ভাবতেছিলাম হয় না কেন, হউক। আমি লুকাই। পিরিচ হাতে নিছি কিন্তু আমি ত আর নড়াচড়া করি না। ঠায় দাঁড়িয়ে আছি।

নড়লেই যদি খুলে যায় !!! X((

পার্ট ৩

আমার বয়স যখন ৫ বছর ছিল, তখন আমি হর্লিক্স খেয়েছিলাম একদিন। সেই জোরে আমার তখন ব্রেইন খুলে গেল। B-) পিরিচ যেহেতু নিয়েই ফেলেছি, এখন দরজা লাগানো যায়। কিন্তু দরজা লাগাতে হলে আমাকে একটু পিছে সরতে হবে। ভাবলাম, আমি যেহেতু হিরো আর হিরো থাকলে যেহেতু রিস্ক নাই, তাই লাফ দিয়ে পিছে সড়েই দরজা লাগিয়ে দিলাম। অতক্ষণে আমার টাওয়েল প্রমাণ করে দিল, রেশিওর অংকে আমি খারাপ না। B-) আমার ধারণাই সঠিক ছিল। এটা একটু নড়লেও কোমড়ে থাকবে না।


এরপরে এখন পিরিচ কোথায় রাখি !! আরেক পিরিচে সেটা রেখে খালি পিরিচ কী খালিই ফেরত দিব? তখন মনে পড়ল ইফতারের সময় প্লেট ফেরত দেবার সময় ভরে দেয়া লাগে, ইন্টারের রেজাল্টের বেলায় লাগে না। এদিকে সময় বয়ে যাচ্ছে। একবার ভাবলাম মিষ্টি রাখার দরকার কী, সব খেয়ে খালি পিরিচ ফেরত দেই। পরে মনে হল, অনেক সময়ের ব্যাপার। আমি খাদ্যপ্রিয় হলেও মিষ্টি প্রিয় না তেমন।

যখন আমার বয়স ৫ ছিল তখন আমি একবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়েছিলাম B-) । সেই জোরে সেদিন আমার চোখে খুলে গেল। আমি দেখি আরে সামনেই ত এত্তগুলা পিরিচ। পরে এগুলাতে মিষ্টি রেখেই খালি পিরিচ ফেরত দেবার মিশন নিলাম।

এসব চিন্তা করতেছি, টাওয়েল গিট্টু দিতেছি আর সেই ইন্টারপাশ মেয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে। টাওয়েল রেশিওর অংক অনুযায়ী এমনিই কম, এর উপর গিট্টু দিলে আর থাকে কী ! এখন আবার প্যান্ট পড়ে আসব? কতক্ষণ লাগবে? অনেক এংগেলে চিন্তা করেও অংক মিলছে না। “এংগেল” !! :-/:-/ এটাই আমার সমাধান হয়ে গেল। টাওয়েল আমার যেই অংশে নেই, সেই অংশ থাকবে দরজার একপাশে। মেয়েটা তার এংগেল থেকে দেখতে পাবে না। বাকি দিক দিয়ে পিরিচ ফেরত দিব। :D:D

ত দরজার এক পাশে দাঁড়িয়ে গেট খুলে দিলাম। দেখি ইন্টারপাশ মেয়েটা একটু পিছে সড়ে দাঁড়ালো। আরে, সে এমন করে ক্যান X( । আমি বললাম, “এদিকে আসো।” সে খুবই ক্যামন ক্যামন করে যেন আসল। পরে আমি তার হাতের ট্রের উপর পিরিচ রেখে দিলাম। এ দেখি তাড়াতাড়ি চলে গেল। X(


ফাইনাল পার্ট

আমি ভাবছিলাম এই ক্যামন ক্যামন ভাবটা করল ক্যান? তবে কী সে আমার সাথে ভাব দেখালো ? হঠাৎ বুঝলাম তাড়াহুড়ায় এংগেল ভুল হয়ে গেছে। টাওয়েল উন্মুক্ত অংশ দরজার বাইরে; উলটা ঢাকা অংশই দরজার ভিতরে। ও মাই গড। :-/:-/:-/:-/:-/

ইন্টারপাশ মেয়ে না জানি কী মনে করছে, ভাবছে হয়ত যে ভিতরে আরও সময় নিয়ে এই রকম গিট্টু দিছি যেন এমন একটা সিন ক্রিয়েট হয়। হায়রে !! নাকি ভাবছে আমি ঘরে এভাবেই থাকি !! :((
আমার এখন শিক্ষা হইছে, নিজের রুমেও আর খালি গায়ে থাকি না। X((X((

এই সিরিজের নিয়মিত পাঠক যারা, তারা জানেন, সাধারণত এই সিরিজটা সত্য কাহিনীর উপর বেইজ করে লেখা হয়।


একই সাথে আমার পার্সোনাল ব্লগ সাইটে প্রকাশিত। সবাইকে আমন্ত্রণ।
http://wings.rizvanhasan.com


আমার ব্লগ সাইটের ফ্যান পেইজ। এখানে লাইক দিলে নতুন যে কোন লেখার লিংক পেয়ে যাবেন।
Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:০১
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অলীক সুখ পর্ব ৪

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৫

ছবি নেট

শরীর থেকে হৃদয় কে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে চেয়েছি
তুমি কোথায় বাস করো?
জানতে চেয়েছি বারবার
দেহে ,
না,
হৃদয়ে?
টের পাই
দুই জায়গাতে সমান উপস্থিতি তোমার।

তোমার শায়িত শরীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় জেনে নেই!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫১

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় তা জেনে নেই৷ এবার আপনাদের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঘটনা শেয়ার করবো৷ আমি কোরিয়ান অর্থনীতি পড়েছি৷ দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১৯৭০ সালের পর থেকে প্রায় আকাশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৮

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪


আজকের গল্প হেয়ার স্টাইল ও কাগজের মোবাইল।






সেদিন সন্ধ্যার আগে বাহিরে যাব, মেয়েও বায়না ধরল সেও যাবে। তাকে বললাম চুল বেধে আসো। সে ঝটপট সুন্দর পরিপাটি করে চুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×