somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুশীল মানুষের গল্পঃ সাগর সাহেবের একদিন ও কোন এক রোকসানা......পর্ব ২

১০ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুশীল মানুষের গল্পঃ সাগর সাহেবের একদিন ও কোন এক রোকসানা।......পর্ব ১
(গল্পের সমস্ত চরিত্র ও ঘটনা কাল্পনিক, বাস্তবের মেলাতে চাইলে নিজ দ্বায়িত্বে মেলাবেন)

১ম পর্বের পর

মিসেস ফারহানা বলে চললেন, “খুব ব্রিলিয়ান্ট মেয়ে, সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যটাও কিন্তু সেই লিখেছে.....মিসেস ফারহানা আরো কিছু বলতে লাগলেন কিন্তু সাগর সাহেব সেসব কিছুই শুনতে পেলেননা। উনি যেন আগুনের স্ফুলিঙ্গের দিকে তাকিয়ে আছেন। রোকসানার ২২/২৩ বছরের ভরা সুগঠিত দেহের দিকে সাগর সাহেব আড়চোখে দেখতে লাগলেন। মনের ভেতর একটা ভয়ঙ্কর জন্তু যেন আস্তে আস্তে যেন আড়ামোড়া ভেঙ্গে ঘুম থেকে উঠছে।

খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে। সাগর সাহেব একটা কাস্টার্ডের বাটি নিজে নিয়ে আরেকটি হাতে নিয়ে রোকসানার দিকে এগিয়ে গেলেন। “তোমাকে যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি।, এই বয়সে এত দারুন পারফর্মেন্স!! স্বাগত বক্তব্যটা আসলেই খুব ভালো হয়েছে। বলতে বলতে রোকসানার দিকে কাস্টার্ডের বাটি এগিয়ে দিলেন, রোকসানা লাজুক হেসে বাটিটি নিয়ে বলল, “দোয়া করবেন স্যার”। তখনই রোকসানার মোবাইল ফোন বেজে উঠল। লজ্জিত কন্ঠে সাগর সাহেবকে বলল, “স্যার...বাসা থেকে ফোন এসেছে............ও শিয়োর কলটা ধর।“ রোকসানা বলে চলল, “ হ্যাঁ আম্মা বল......” সাগর সাহেব কাস্টার্ডের দিকে মনযোগ দিলেও তিনি কান খাড়া করে রোকসানার কথা শুনতে লাগলেন। “তুমি কালকে ব্যাংকে খোজঁ নিও চেক জমা হয়ে গেছে......চিন্তা কোর না। না আম্মা এই সপ্তাহে আসতে পারব না, অনেক কাজ....সামনের সপ্তাহে আসব তিনদিন বন্ধ আছে...........হ্যাঁ, রাকিব বল......ওফ তোর গল্পের বইয়ের চিন্তায় মনে হয় ঘুম হইতাসে না..........স্কুলের পরীক্ষা ঠিকমত দিস তো.............পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলে কিন্তু তোর সব গল্পের বই পানিতে ছুড়ে ফেলব........হুঁ বইগুলা কিনেছি.........চিন্তা করিস না...........সামনের সপ্তাহে আসব......আম্মার দিকে খেয়াল রাখিস”।

সাগর সাহেব মনে মনে হিসাব কসলেন, মেয়েটা টাকা পাঠানোর কথা বলেছে, স্কুল পড়ুয়া এক ছেলের সাথে কথা বলেছে...খুব সম্ভব মেয়েটির ছোট ভাই.........বাবার সাথে কথা বলেনি, তার মানে মেয়েটির বাবা নেই এবং মেয়েটির কাঁধে মা আর ভাইয়ের দ্বায়িত্ব। তিনি মনে মনে বেশ খুশি হলেন, এ ধরনের মেয়েরা পরিবারের প্রতি খুব দুর্বল হয়, আর এদেরকেই ফাঁদে ফালানো সহজ হয়।

রোকনানার ডাকে সাগর সাহেব ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এলেন। সাগর সাহেবের সাথে রোকসানার অনেক কথা হলো। রোকসানা জানালো তার পরিবারের কথা........বাবা ৫ বছর আগেই বাবা মারা গেছেন। তার মা ও ভাই এখন তার সবকিছু, জসীমপুরে তার বাবার নিজস্ব জমি ছিল দেখেই আপাতত মাথা গোজার জায়গা নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয় না। তবুও সংসারের খরচ চালাতে হিমসিম খেতে হয়। তার মা বেশী লেখাপড়া করেননি, তাছাড়া চোখেও দেখে কম তাই তাঁর পক্ষে আয় রোজগারের কোন উপায় নেই। সেজন্য ভাইয়ের পড়ালেখা ও সংসারের অন্যান্য খরচ চলানোর দ্বায়িত্ব রোকসানাকেই নিতে হয়েছে। রোকসানা তার সপ্নের কথা বলল, তার ইচ্ছে ইউনিসেফের মত কোন বড় কোন জায়গায় কাজ করবে। তাহলে মা ও ভাইকে ঢাকায় নিয়ে আসার সামর্থ হবে, ভাইকে ভালো জায়গায় পড়াতে পারবে।......”

সাগর সাহেব নিজেকে মনে মনে তারিফ করলেন রোকসানার কথা গুলো নিজ ভাবনার সাথে মিলে যেতে দেখে। রোকসানাকে দেখেই তার মনের মধ্যে সেই পশুটা জেগে উঠেছে। তাঁর স্ত্রী গত হয়েছেন দশ বছর হলো। একমাত্র ছেলে ভারতে পড়াশোনা করে। বলতে গেলে তিনি এখন নিঃসঙ্গ। তবে সেটা নিয়ে তার কোন সমস্যা হয়না। অবে আজ তিনি কেন যেন মন থেকে সেই ইচ্ছেটা সরাতে পাড়েন না। তাছাড়া এতে অনেক রিস্কও আছে। একটু এদিক সেদিক হলে তার ইমেজের সর্বনাশ হয়ে যবে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। সিমি, অলকা, ত্রিনা, জিনিয়া এদেরকে বেশ কৌশলে ফাঁদে ফেলেছেন, তাদের এখন আর কোন উপায় নেই । সাগর সাহেব তাঁর কামনার আগুন এদেরকে দিয়েই নেভান। রোকসানাকে দেখেই তাঁর সুপ্ত কামনা জেগে উঠলো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হলো রোকসানাকেও একইভাবে প্রভাবিত করতে পারবেন। তবে আজ কেন যেন তাঁর মন একটু বেশী ছটফট করছে।

সাগর সাহেব রোকসানাকে বললেন, “তোমার কথা শুনে আমি খুব প্রাউড ফিল করছি। আসলে তোমার মত মেয়েই আমাদের দেশের জন্য দরকার। আমার প্রতিষ্ঠানে আসলে তোমার মত ব্রিলিয়ান্ট মেয়েই দরকার। তোমার একটা সি.ভি আমাকে দিয়ে যেও। “থ্যাঙ্ক ইউ স্যার.............রোকসানা মনে মনে বেশ খুশি হলো, সাগর সাহেবের রেফারেন্স অনেক জায়গায় কাজে লাগবে। সবাই যখন ফেরার জন্য তোরজোড় শুরু করলো তখনই মুসলধারে বৃষ্টি শুরু হল। অনেকের সাথে গাড়ি ছিল, যাদের ছিল না তারাও লিফট নিল। সাগর সাহেব রোখসানাকে বললেন, তুমি একটু বস, ড্রাইভার এলেই তোমাকে ড্রপ করে দেবে। রোকসানা মানা করতে পারলো না।


বাইরে মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। রোকসানা ড্রয়িং রুমে বসে একটা ম্যাগাজিনের পাতা উল্টাচ্ছিলো, সাগর সাহেব এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস রোকসানার দিকে এগিয়ে দিলেন। “আমার হাতে বানানো স্পেশাল জুস, খুব খারাপ লাগবে না হয়ত!!” সাগর সাহেবের কথা বলার ভঙ্গি দেখে রোকসানা হেসে ফেলল। আস্তে করে জুসে চুমুক দিল। একটু অন্যরকম একটা ফ্লেবার থাকলেও খারাপ লাগলো না।


সাগর সাহেব রোকসানাকে বললেন, “তুমি আমার এখানে জয়েন কর, অনেক উন্নতি করতে পারবে। রোকসানা হেসে বলল “থ্যাঙ্ক ইউ স্যার”। তার মাথাটা কেমন যেন চক্কর দিয়ে উঠলো। সাগর সাহেব বুঝলেন জুসে মধ্যে মেশানো ওষুধের রিএকশন হতে শুরু করেছে। এবার তিনি রোকসানার একদম পাশে বসে তার কাধে হাত রাখলেন। তার গায়ে যেন আগুন জ্বলে উঠল। তিনি রোকসানার কাঁধ পিঠ বুলোতে লাগলেন। রোকসানার ব্যাপারটা ভালো লাগলো না। সে বলল, “আমি এখন যাব”। বলেই সে উঠে দাড়ালো, কিন্তু আবার বসে পড়তে হলো। তার মাথা ব্যাথাটা আরো বেড়ে গেল। সাগর সাহেব বলে চললেন, “রোকসানা, আমার কথা শুন তুমি অনেক উন্নতি করতে পারবে”। সাগর সাহেবের কথা যেন অনেক দূর থেকে আসছে। রোকসানা কিছু বলতে চাইল, কিন্তু পারলনা। তার দেহটা সোফার হাতলে এলিয়ে পরল।

সাগর সাহেব নিজেকে সংযত করলেন। বেল সাইড টেবিল থেকে একটা রিমোট কন্ট্রোল বেল টিপলেন। খানিক্ষন পর একটি লোক এসে হাজির হলো। তিনি শান্ত স্বরে বললেন, “আবুল মিয়া, খবর কি ভাল?”, আবুল মিয়া বলল, “জি স্যার”। আবুল মিয়া সাগর সাহেবের একাধারে বার্টলার থেকে শুরু করে ড্রাইভার, অ্যাসিস্টেন্ট সব, তাছাড়া যেকোন ঝামেলার কাজ সামাল দিতে তার জুড়ি নেই। সিমি, জিনিয়াদের ব্যাপারগুলো সেই খুব সিদ্ধহস্তে সম্পন্ন করেছিল, আর পুলিশ আর মিডিয়াকে সামাল দেয়া যেন তার বাম হাতের খেল। নাম আবুল হলেও তার কাজগুলো হয় নিঁখুত।

“তুমি একে আমার বেড রুমে নিয়ে শুইয়ে দাও।“ আবুল মিয়া রোকসানার অজ্ঞান দেহটা পাঁজকোলা করে তুলে নিয়ে বেডরুমে নিয়ে গেল। আসলে রোকসানাকে প্রথমে দেখেই তার মনের ভেতরের পশুটার জিব লকলক করে উঠেছিল। তার উপর রোকসানার বিস্তারিত জানার পর তিনি তখনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। তাকে দেখেই নিজেকে কেন জানি সামলাতে পারেননি। তিনি বেডরুমে ঢুকে বিছানায় শোয়ানো রোকসানার অজ্ঞান দেহটাকে দেখে বেশ খুশি হলেন। সিমি, জিনিয়াদের চেয়ে মেয়েটার বয়স কম এই ভেবে তিনি একটা প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে তিনি রোকসানার দিকে এগিয়ে গেলেন।

রোকসানা চোখ খোলার পর মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করে উঠল, সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। সে দেখল সম্পূর্ন অপরিচিত এক ঘরের বিছানাতে শুয়ে আছে, ঘরের মধ্যে একটা আবছা আলো ।সে একটু একটু করে মনে করার চেষ্টা করতে লাগল কি হয়েছে। সাগর সাহেবের বাসায় দাওয়াত ছিল..........মা ও রাকিবের সাথে মোবাইলে কথা বলা......সাগর সাহেবের জুস খেতে দেয়া।.......কোমরের কাছটায় ব্যাথা করে উঠলো। সে আশে পাশে চেয়ে দেখতে লাগলো। এমন সময় তার চোখে পরল একটা সালোয়ার কামিজ একটা চেয়ারের উপর রাখা আছে, এটাই কাল অফিসে যাবার সময় পড়ে এসেছিল। ব্যাপারটা মনে হতেই সে চমকে উঠলো। একটা চাদর দিয়ে তার শরীর ঢাকা আছে এবং গায়ে কোন পোষাক নেই। সে বুঝতে পারলো তার চুড়ান্ত সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে এবং কে করলো সেটাও বুঝতে পারলো। সে বিছানায় শুয়ে হুঁ হুঁ করে কাঁদতে লাগলো।

সকাল দশটা বাজে। সাগর সাহেব লিভিং রুমে বসে টিভিতে খবর শুনছেন, হাতে ধূমায়িত কফির কাপ, পরনে একটা স্লিপিং রোব, মুখের মধ্যে যেন একটা প্রশান্তির ভাব। কফি শেষ করে খবরের কাগজটা হাতে নিতেই তিনি দেখলেন রোকসানা বেডরুম থেকে বের হয়েছে, পরনে গতকালেরই পোষাক।


সাগর সাহেব শান্ত স্বরে বললেন, “বোস রোকসানা”। রোকসানা চুপচাপ বসে পরল, বেশ উদ্ভ্রান্ত চেহারা। সাগর সাহেব বলে চললেন, “শোন রোকসানা, যা হয়েছে সেটা একটা অ্যাক্সিডেন্ট বলে ধরে নাও। ধরে নিতে পার গতকাল তোমার একটা ইন্টারভিউ হয়ে গেছে এবং তুমি পাশ করেছ। তুমি আমার প্রতিষ্ঠানেই জয়েন করবে। বেতন নিয়ে কোন চিন্তা করার দরকার নেই, যা পাচ্ছ এর ডবলেরও বেশী পাবে। মা ও ভাইকে ঢাকায় নিয়ে আসতে পারবে। আর যা হয়েছে তা নিয়ে বেশী ঘাঁটাঘাটি করলে তোমারই ক্ষতি হবে।।...যাই হোক তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর..........” সাগর সাহেব কথা শেষ করতে পারলেন না, ঠাশ করে তার গালে একটা চড় পড়ল। তিনি যেন বিশ্বাস করতে পারলেন না! রোকসানা তাকে চড় মেরেছে। এবার রোকসানা কথা বল। এ যেন রক্তজল করা কন্ঠস্বর, “শয়তান....আমাকে চাকরীর লোভ দেখাস....তুই আমার এমন সর্বনাশ করলি.....বেজন্মা কুত্তা...”। রোকসানার কন্ঠস্বর শুনে সাগর সাহেব একটু ভয় পেয়ে গেলেন। একটা শান্ত মেয়ে কিভাবে এরকম বদলে যেতে পারে? সাগর সাহেব বললেন, “দ্যাখো রোকসানা!! চেঁচিয়ে লাভ নেই.........”, রোকসানা যেন আরো হিংস্র হয়ে উঠলো, “চুপ....শুয়োরের বাচ্চা.........আমি তোর শয়তানির মুখোশ খুলে দিব.....তুই যে একটা ভন্ড শয়তান সেটা সবাই জানবে........তোকে মানুষ রাস্তায় ফেলে কুত্তার মত পিটিয়ে মারবে...”, রোকসানা পাগলের মত চেঁচিয়ে কথাগুলো বলতে লাগলো, কথাগুলো যেন সাগর সাহেবের কানে গরম সীসা ঠেলে দিল।

রোকসানা হঠাৎ বের হবার জন্য দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। রোকসানা খেয়াল করেনি যে তার কথা বলার সময় আবুল মিয়া দরজার সামনে এসে দাড়িয়েছে, কিন্তু সাগর সাহেব ঠিকই খেয়াল করেছিলেন। রোকসানা সদর দরজায় পৌঁছা মাত্র তিনি আবুল মিয়াকে একটা ইশারা দিল। একটা নাইলনের রশি দিয়ে আবুল মিয়া রোকসানার গলা পেঁচিয়ে ধরল, ছটফট করে উঠল সে, তার শ্বাস আটকে আসছে, তার কেন যেন মনে পড়ে গেল মায়ের কথা......রাকিবের কথা....ঢাকা ফেরার আগে রাকিব বলেছিল “আপু বইগুলো অবশ্যই আনবে কিন্তু”।তাকে কি বই গুলো দিয়ে যেতে পারবে না? তার চোখের সামনে সাগর সাহেবের হাসিমাখা মুখ ভেসে উঠলো। তীব্র ঘৃণায় যেন তার গলা চেপে ধরতে চাইলো, কিন্তু সবকিছু যেন অন্ধকার হয়ে আসছে।

আবুল মিয়া কাজ শেষ করে বলল, “স্যার, আপনার আরো সময় নেয়া উচিৎ ছিলো। বড্ড, তাড়াহুড়া করে ফেলেছেন।“ সাগর সাহেব বললেন, “আরে, আমি কি জানতাম মাগী এমন করবে? মনে হয়েছিল তো অন্যদের মতই কাজ হয়ে যাবে। আবুল মিয়া আবার বলল, “স্যার কিচ্ছু চিন্তা করবেন না আজ রাতের মধ্যেই সব ঠিক ঠাক হয়ে যাবে, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন, আমার কোন ভুল হবে না। আবুল মিয়ার সাথে কথা বলার সময় একবার রোকসানার লাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন, দেখলেন লাশট জিব বের করে চোখ খোলা অবস্থায় পড়ে আছে, দৃষ্টি যেন তার দিকেই নিবদ্ধ, এই সকাল বেলাতেই তিনি ঘেমে উঠলেন।


(বর্তমান সময়...)

সাগর সাহেব সাত দিন আগের সেই ঘটনা মনে করে ঘেমে উঠলেন। একটানে পেগটা শেষ করে আবুল মিয়ার ঘরের কলিং বেল বাজালেন। প্রায় ১৫ মিনিট পরে আবুল মিয়া এসে হাজির হলো।

সাগর সাহেব তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “রোকসানার ঝামেলাটা কি মিটেছে? আবুল মিয়া উত্তর দিল, “কোন চিন্তা নেই স্যার, লাশটা গভীর গর্তে পুঁতে ফেলা হয়েছে, আর জায়গাটা জনমানব শূন্য, নেশাখোরদের আড্ডাখানা। তার গায়ের কাপড় চোপর সব পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, তাই লাশ আইডেন্টিফাই করার কোন উপায় নাই, আর মোবাইল ফোনটাও নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। আর থানায় এখনো কোন ডায়রি করা হয়নি, হয়ত কিছুদিনের মধ্যেই হবে। আমাপনার কোন চিন্তা নেই স্যার, খোজঁ নিয়ে জেনেছি রোকসানার সাথে একটা ছেলের সম্পর্ক ছিল, পুলিশ তদন্ত করলে সে পথেই আগাবে।“

আবুল মিয়ার কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়ে সাগর সাহেব নিজেকে অনেক হালকা বোধ করলেন। একটু স্ফূর্তির ভাব হলো আবুল মিয়াকে বললেন কালকে জিনিয়াকে খবর দেবে। আগামিকাল রাতটা প্রসন্ন মনে উপভোগ করা যাবে। নাহ, অনেক রাত হয়েছে, আজকে শুয়ে পড়তে হবে। আগামিকাল আবার “মহিলা সমিতির” একটা অনুষ্ঠানে যেতে হবে।

পরদিন বিকেলে যখন অনুষ্ঠানস্থলে পৌছালেন, তখন সেক্রেটারি রাজিয়া সুলতানা তাকে রিসিভ করলেন। “সাগর ভাই, সাদা রঙের পোষাক ও চাদরে আপনাকে বেশ মানায়”। সাগর সাহেব মুচকি হেসে বলল ধন্যবাদ। তিনি যখন ডায়াসে উঠছিলেন তখন শেষ বিকেলের আলোটা তার পোষাকের উপর এসে পরে। সেই আলোতে তাকে খুব পবিত্র লাগছে!

.....সমাপ্ত....



৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×