somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ন্যাড়া বেলতলায় একবার ই যায় - সত্য ঘটনা অবলম্বনে

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৫, মঙ্গলবার
আজ আমার জীবনে একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে গেল যা আমি কল্পনাও করি নাই। আজ আমি পুরা সারে আট ঘন্টা হাজত বাস করে এলাম।

*ঘটনার আদ্যপান্ত*
সকাল সারে সাতটায় ঘুম থেকে উঠে অতি প্রয়োজনিয় কাজ সেরে সুজনের বাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করলাম সুজন আমার বন্ধুদের মধ্যে একজন। সুজন ই গতকাল মানে ১৪ই ফেব্রুয়ারী আমাকে ফোনে ওর বাসায় যাওয়ার জন্য বলে রেখেছিল। উদ্দেশ্য ছিল ক্রিকেট ম্যাচ খেলা। তো যাওয়ার আগে দেখি আব্বু ঘুম থেকে উঠে গেছে। এখন কি করি? যাই হোক আব্বুকে কোনরকম ফাকি দিয়ে সুজনের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম কাধে আমার কোচিং এর ব্যাগ:P:P:P(উল্লেখ্য কোচিং, স্কুল ফাকি দেওয়া আমার নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল)। ওর বাসায় যাওয়ার পর সুজনের সাথে কথা বলে টলে খেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। সিদ্ধান্ত হল যে মিরপুর-১২ এর সিরামিক মাঠে খেলা হবে। তারপর আমরা মোত ৭ জন এক সাথে মিরপুর ১১ নং বাসস্ট্যান্ডে গেলাম। বাসে উঠে আমি সুজন, রাজন বসলাম বাসের একেবারে পিছনের সিটে। রাজ এনামুল এবং সজিব বসল বাসের একেবারে পিছন থেকে তৃতীয় সিটে। আর আমদের শ্রদ্ধেয়(!!!!) রিপন ভাই বসেছিল চালকের পিছনের সিটে। বাস যখন পল্লবী সারে ১১ নং বাসস্ট্যান্ড পিছনে ফেলে দূর্বার গতিতে এগুচ্ছে তখন বাসের কন্ট্রাক্টার ভাড়া চাইতে এল। সুজন ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরি মধ্যে আমার সামনের সিটে যে কোবরা-৭ (ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ এর একটি দল) এর দুইজন বসা ছিল তা আমরা বলতে পারব না। একটা কথা তো না বললেই নয় দিনটি ছিল হরতাল, সরকার যানবাহনের অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করেছিল। ফিরে আসি আসল কথায়, বাস যখন মিরপুর ১২ নং এর কাছাকাছি রাজ ফাজলামো করে কন্ট্রাক্টারকে বলল "এই বেটা হরতালে আবার ভাড়া কিসের, বাস ভাইঙ্গা দিলে কি করবা????"। সাথে সাথে আমি তাকে থামায় দিলাম আর হাল্কা ঝারি দিলাম। তো এই কথা কোবরা-৭ এর লোকগুলি শুনে ফেলে। তো এরি মধ্যে বাস আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছে গেছে। আমরা সবাই যখন বাস থেকে নামছি তখন দেখলাম একটা লোক রাজের হাত ধরে আছে এবং তাকে কি যেন জিজ্ঞেস করছে। পরে বুঝলাম এ তার ফাজলামোর পুরস্কার(!!)। আমি আর সুজন কাছে গেলাম এবং পুলিশকে বোঝানোর বৃথা চেষ্টা করলাম এবং এই অনুরোধের পুরস্কার সরুপ আমরাও তাদের কাছে আটক হলাম:((:((:((। দুঃখের বিষয় এই যে কোন দোষ না করেও একমাত্র রাজের কারনে আমাদের পুলিশের পিকআপে ওঠানো হল। ইতিমধ্যে একটা মজার ঘটনা ঘটে গেল, পুলিশরা যখন আমাদের নাম ঠিকানা লিখছিল চখন সুজনের বাবার নাম জিজ্ঞেস করায় সুজন উত্তর দেয় "আমার চাচা মিল্কভিটার সেক্রেটারি" কথাটা বলার সাথে সাথে গাড়িতে বসা কোবরা-৭ এর অফিসার গাড়ি থেকে নেমে তার লৌহের ন্যায় হাতটি সজরে সুজনের গালের উপর নামিয়ে দেন। তারপর যা হওয়ার তাই হল সুজন আর কোন কথা বলতে পারল না। ইতিমধ্যে এনামুল এবং সজিবকে ওরা ছেড়ে দিল, বাকি রইলাম আমরা চারজন/:)/:)। অতপর আমাদের পুলিশের গাড়িতে উঠানো হল, প্রচন্ড খারাপ লাগছিল, খারাপ এর মাত্রাটা আরো বাড়ল যখন দেখলাম একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা আমাদের দিকে তাক করা, বুঝতে দেরি হলনা যে আমরা বিখ্যাত হতে চলেছি/:)/:)/:)/:)। এরপর ওরা আমাদের ১১ নং বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসা হয়। এরপর আমাকে গাড়ি থেকে নামানো হল, আমি ভাবলাম আমকে হয়তবা ছেড়ে দিতে পারে, একটু পরেই আমার ভুল ভাংল যখন আমাকে বলা হল যে সুজন এর অবিভাবককে দেকে আনতে হবে। তো আমি তাদের কথা মত সুজনের আব্বা ও চাচাকে ডেকে আনলাম। তারা এসে সমস্ত ঘটনা জানলেন এবং আমাদের ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করলেন কিন্তু কোন লাভ হলোনা ওরা আমাদের ছাড়ল না। পরে কোবরা-৭ এর ইন্সপেক্টর জানালেন হরতাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেলখানায় থাকতে হবে। পরে আমাদের মিরপুর ২ নং থানায় নিয়ে ১৪ শিকের(১৪ শিক ছিল কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে) ভেতর নিক্ষেপ করা হয়। ভিতরে যা দেখলাম তা বর্নণা করার ভাষা আমার জানা নাই। যাই হোক ঢোকানোর পূর্বে পায়ের জুতা এবং বেল্ট খুলে নেওয়া হল। এরপর ধীরে ধীরে সারে ৮ ঘন্টা পার করলাম। সন্ধ্যা সারে ৬টায় যখন বের হলাম ততক্ষনে আমাদের জুতা এবং বেল্ট উধাও হয়েছে। এরপর খালিপেটে, খালিপায়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম তিক্ত এক অভিজ্ঞতা নিয়ে।
বাসায় যাওয়ার পর যা হয়েছিল তা না হয় পাঠকরা নাই জানলেন:((:((:((:((:((
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×