somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘বউয়ের ভালবাসায় মুগ্ধ’

০২ রা আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন আগে “প্রথম আলো” ব্লগে একই শিরোনামে লেখাটি দিয়েছিলাম। Somewhereinblog এ নাম লিখিয়েছি ও অনেকদিন। পড়তে ভালবাসি খুব। লেখা হয় না অলসতায় । ভাবলাম আজ একটু লিখি। লিখতে বসে দেখি মাথায় আসছেনা কিছু। তাই আগের লেখাটি এখানে দিয়ে দিলাম।

‘বউয়ের ভালবাসায় মুগ্ধ’

বিয়ে করবোনা করবোনা করেও বিয়েটা করতে হলো। কারণ বাবা-মায়ের তর্জন গর্জন + চোখের পানি (শুধু পায়ে ধরা বাকি)। এ কারণেই করে ফেললাম বললাম না। আমার জন্ম ১৯৭৯ তে। বয়স পঁচিশ ছুতেই বাবা-মায়ের ঘ্যানর ঘ্যানর শুরু। ইনিয়ে বিনিয়ে বিভিন্ন ভাবে বোঝাতে থাকে। মূল কথা বিয়ে কর। আমিও না করে বসে আছি। ‘আরেকবার সাধিলে খাইব’ এ টাইপের না। একেবারে শক্ত না। না করার কারণটা ছিল –এই নুরুল হুদা, একদা ভালবেসেছিল (ভাল ফেসেছিল)। সে অনেক অনেক কথা। অনেক কথার মাঝে সামান্য কিছু কথা হলো - মেয়েদের পটানোর মতো চেহারা-সুরত আমার নেই। তাই ক্ষরায় ক্ষরায় কাটে জীবন। স্কুল পেরিয়ে কলেজের শেষ সিড়িতে পা দিয়ে ফেলেছি। হৃদয়ের কথা শুনিতে ব্যাকুল হইলো না কেউ। এভাবে যখন কাটছিল সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে একদিন, এক পার্বতী আমার হৃদয়ের সামান্য কিছু জায়গা চাইলো। আমি কিছু না ভেবে কিছুটা নয় হৃদয়ের পুরোটা তাকে দিয়ে দিলাম। কথায় বলে ‘ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না’। না ভাবার ফল পেলাম কিছুদিন পর। যেদিন পার্বতী চলে যায়। অবাক হয়ে ভাবি আর ভাবি কি কারণে পার্বতীর সহসা উদয় ও অস্ত যাওয়া। ব্যাপক গবেষণার পর, তার কিছু ঘনিষ্ঠজনের সাহায্যে যা বোঝতে পারলাম- ক্ষুধা লাগলে কিছু না পেলে বাঘও নাকি ঘাস খায়। পার্বতীরও হয়তো এমন দশাই হয়েছে। মনের পালে হাওয়া লাগতে শুরু করায় কাউকে না পেয়েই হয়তো আমার ঘাটে নৌকা ভিড়ানো। তারপর অন্যএকজন পেতেই...। যাক সেসব কথা।
আমি পার্বতীর বিরহে দেবদাস দেবদাস ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াই। মনে মনে শপথ করি, বিয়েই করবনা কোনদিন। যার ফলে আমার না আর বাবা-মায়ের চাপাচাপি। দিন যায়, বাবা-মায়ের সাথে যোগ হয় নানী মামী-খালা, বোন-দুলাভাইয়ের আক্রমণাত্মক বোলিং। আমিও রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করি। মনে মনে ভাবি যতই তোমরা আক্রমণাত্মক বোলিং কর আমি অপরাজিত ইনিংস খেলে যাব। খেলছি, খেলছি, না আর পারা গেলনা। ২০০৮ এর ৩১ অক্টোবর বোল্ড হয়ে গেলাম। বিয়ে হলো। বিয়ের আগে কনে দর্শন এর ক্ষণটি ছাড়া বউকে কোনদিন দেখিনি। দু’জনের বাড়ী একই থানায়, ভিন্ন ইউনিয়নে। আমি বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। আমার বউও তাঁর বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। দু’জনই দু’ পরিবারের কনিষ্টতম সদস্য। বিয়ে পরবর্তী জীবন শুরু হলো। অবাক হয়ে দেখি- পার্বতীর মতো বউ আমার (চাঁদমুখ!) নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামায় না। এমন মানুষই তো চাচ্ছিলাম যে আমার চেহারা নয় মন ভালবাসবে। স্ত্রী শব্দটা আমার কাছে কেমন যেন কর্কশ কর্কশ লাগে। আবার উচ্চারণগত কারণে স্ত্রী উচ্চারণ করলে ইস্ত্রি ইস্ত্রি লাগে। সেকারণে ওকে আমি বউ বলে ডাকি। বউ আমি দু’জনই চাকরি করি। বউ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, আমি আছি প্রাইভেট কোম্পানীতে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বউয়ের প্রচন্ড রকমের ব্যস্ততা । এই ব্যস্ততার মাঝেও বউয়ের গভীর ভালবাসায় সিক্ত থাকি সারাক্ষণ। কোনটা খাব কি পরব। সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হবার সময় বউয়ের বিভিন্ন সাবধান বাণী। দুপুরে ফোন করে খোঁজ নেয়া, খেয়েছি কিনা। বিকেলে অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে অস্থির অপেক্ষা বউয়ের আর ঘন ঘন ফোন। আর আমি ঘরকুনো ব্যাঙের মতো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বউয়ের সীমাহীন আদর যত্নে বিয়ের আগের শুকনো পাটখড়ি দেহটা বেশ নাদুস নুদুস হয়েছে এখন। একটা গান শুনেছিলাম ‘বিয়ের পরে প্রেম ভালো গুণীজনে কয়, বিয়ের আগে প্রেম নিয়ে লুকোচুরি নয়’। বিয়ের পর গানের কথার সত্যতা বোঝতে পারছি। বাউন্ডুলে আর অলস আমি। বউয়ের গভীর ভালবাসায় বাউন্ডুলেপনা যদিও বাদ দিতে পেরেছি কিন্তু অলস এর খোলস ছেড়ে বেরোতে পারছিনা। আমার ভালবাসায়ও অলসতা ভর করে। স্বার্থপরের মতো ভালবাসা না দিয়ে কেবল ভালবাসা নিয়েই যাচ্ছি। মাঝে মাঝে ভাবি, সৃষ্টিকর্তা আমার মতো সামান্য মানুষের ভাগ্যে এত ভালোবাসা রেখে দিয়েছে

নতুন কথা হচ্ছে - ফেব্রুয়ারির তিন তারিখে আমাদের একটি ছেলে হয়েছে। নাম রেখেছি “আবরার হাসিন”। ওর বয়স এখন ছয় মাস। দোয়া করবেন সবাই আমাদের আবরার হাসিন এর জন্য। আবরার হাসিন এর দু'টি ছবি দিলাম। ধন্যবাদ সবাইকে।





সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১২:০১
১৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×