somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওষুধের ব্যবসা শুরুটা যেভাবে

২৮ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাধ্যমিক পাসের পর উইলিয়াম কোড়াইয়া আর পড়াশোনা করতে পারেননি। সে জন্য পল্লি চিকিৎসায় ছয় মাস মেয়াদি একটি প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে গাজীপুর জেলার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে চাচার পান্থপথের ওষুধের দোকানে বেচাকেনার কাজ শুরু করেন উইলিয়াম কোড়াইয়া। নয় বছর পরে এখন তিনিই চালান দোকানটি। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে তাঁর গড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানান।
যা-ই হোক, সমাজে মানুষ বাড়ার সুবাদে দিনদিন ওষুধের চাহিদাও বাড়ায় এখন উইলিয়াম কোড়াইয়ার মতো অনেকের জন্যই ওষুধের ব্যবসা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায় নেমে ঢাকার মিটফোর্ডসহ দেশের সব জেলা সদরের পাইকারি দোকান থেকে ওষুধ কেনার পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও নগদ ও বাকিতে নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন ও অভিজ্ঞ কারও সঙ্গে কাজ করতে পারলে তাতে দক্ষতা বাড়বে।
তবে এই ব্যবসায়ে নামতে হলে সরকারি ড্রাগ লাইসেন্স ও প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি। যা নিম্নে তুলে ধরা হল:
ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য: বাংলাদেশ ওষুধশিল্প প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই ব্যবসার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই কিছু কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। সেগুলো হচ্ছে:
১. নিয়োজিত ফার্মাসিস্টের রেজিস্ট্রেশন সনদপত্রের মূল কপি ও সত্যায়িত ফটোকপি। ২. ফার্মেসির নিজস্ব প্যাডে নিয়োজিত ফার্মাসিস্টের অঙ্গীকারনামা। ৩. দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি। ৪. মালিকের নাগরিকত্ব সনদপত্র বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। ৫. দোকান ভাড়ার চুক্তিনামার সত্যায়িত ফটোকপি। ৬. মালিকের ব্যাংক সচ্ছলতার কপি।
পৌর এলাকার জন্য আবেদন ফি বাবদ এক হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে। যা পৌর এলাকার বাইরে ৭৫০ টাকা। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৩৪টি আঞ্চলিক অফিস আছে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি দোকান পরিদর্শন এবং যাচাই সাপেক্ষে ড্রাগ লাইসেন্স দেবে।
ফার্মাসিস্ট কোর্স: বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের যুগ্ম সচিব লিয়াকত আলী চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে দুই মাস মেয়াদি একটি কোর্স পরিচালিত হয়ে থাকে। আগ্রহী প্রার্থীকে ন্যূনতম মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অন্যান্য স্বল্পমেয়াদি কোর্সধারী প্রার্থীকেও এ কোর্স করতে হবে। কারণ, যাঁরা এ কোর্সে উত্তীর্ণ হবেন, তাঁরাই শুধু ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রার্থীরা কোচিং করে বা নিজে পড়েও এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।’
একটি মাত্র বই থেকেই এমসিকিউ পদ্ধতিতে মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। সময় তিন ঘণ্টা এবং ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস। পরীক্ষার ফি এক হাজার টাকা এবং বই ও রেজিস্ট্রেশন ফি ২০০ টাকা।
তবে রেজিস্ট্রেশন প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ২৫০ টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বা আগ্রহী প্রার্থীদেরই এ ব্যবসায় আসা উচিত।
লিয়াকত আলী চৌধুরী আরও জানান, দেশের বিভিন্ন জেলায় ওষুধশিল্প প্রশাসনের সহযোগিতায় এই কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গুরুত্ব ও দায়দায়িত্ব: দোকান বা ফার্মেসির মালিক যিনিই হোন না কেন, যে ব্যক্তি ওষুধ বিক্রির দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর অবশ্যই ফার্মাসিস্ট প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। কারণ একজন ফার্মাসিস্টের মূল কাজ হলো চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুসারে ওষুধ দেওয়া এবং ব্যবহার বা খাওয়ার নিয়মকানুন সম্পর্কে অবহিত করা। অনুমোদন নেই, এমন ওষুধ দোকানে রাখা এবং বিক্রি থেকে বিরত থাকতে হবে বলে জানান লিয়াকত আলী চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করলে ১৯৮২ সালের আইনের আওতায় বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে। এ ছাড়া দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা যাবে না।
ড্রাগ লাইসেন্স না থাকলে: বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমানে ইউরোপ-আমেরিকাসহ প্রায় ৮৫টি দেশে বাংলাদেশ ওষুধ রপ্তানি করছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ওষুধে বর্তমানে আমাদের চাহিদার প্রায় ৯৭ শতাংশ মিটে থাকে। আমাদের ওষুধ গুণগত মানসম্পন্ন। এ ধারা বজায় রাখতে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মনিটরিং ব্যবস্থা পরিচালনা করছি। এ ছাড়া অনুমোদনহীন ফার্মেসির জন্য জরিমানা ও শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ওষুধ ব্যবসা শুধু লাভের জন্য নয়, জনগণের কল্যাণের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
যোগাযোগ: বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল, রাহাত টাওয়ার (৫ম তলা), ১৪ লিঙ্ক রোড, পশ্চিম বাংলামোটর।
ফোন: ০২-৮৬২৯৭৪১
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প প্রশাসন, ১০৫-১০৬ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ, ফোন-৮৮০-২-৯৫৫৬১২৬, ৯৫৫৩৪৫৬, ই-মেইল: [email protected], ওয়ের: http://www.ddabd.org
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×