somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্ণবের ভালবাসা

২৫ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২১শে জুলাই, বৃহস্পতিবার
রাত ৯ টা, অর্ণব কেবল মাত্র তার এমবিএ এর ক্লাস শেষ করে বের হল। ক্লাস এ অর্ণব এর সাথে রিমি ও ছিল। রিমি, অর্ণব এর থেকে কয়েক বছরের বড়। অর্ণব এইটা জানে। কিন্তু কিসের টানে বা কিসের জন্য অর্ণব, রিমি কে মন থেকে খুব পছন্দ করে? এইটা সে নিজেও জানে না।অর্ণব মাঝে মাঝে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে তার এই পছন্দ টা কি রিমির প্রতি তার ভালবাসা?অর্ণবের কাছে এইটাই ভালবাসা মনে হয়।কারন সে প্রতিদিন রিমির জন্য অপেক্ষা করে থাকে।

যাই হোক ক্লাস শেষ করে বের হতেই রিমি,অর্ণবকে পেছন থেকে ডাকল- “অ্যাই অর্ণব তুমি কি এখন ফার্মগেট হয়ে যাবে?” রিমির প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য অর্ণব যখন রিমির দিকে তাকাল তখন প্রথমেই অরন্নবের চোখ পড়ল রিমির চোখের দিকে।এই দুটি চোখের দিকে তাকালেই অর্ণব কেমন জানি হয়ে যায়।অর্ণব, রিমির প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলে যে- “হ্যাঁ আপু, আমি ফার্মগেট হয়ে যাব।” রিমি তখন অর্ণবকে বলল যে “চল আজ একসাথে যাই।” রিমির এই কথা শুনে অর্ণব মনে মনে খুব খুশি হল কিন্তু সে তার সেই খুশি প্রকাশ করতে পারল না। সে রিমিকে ভালবাসে।রিমির সাথে বাসায় যাওয়ার কথা শুনে সে তাই খুশিই হল।

ইউনিভার্সিটি এর মেইন গেইট থেকে রিকশা নিয়ে অর্ণব আর রিমি ফার্মগেট এর পথে রওনা হল। তারা দুইজন ক্লাস এর বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে বলতে একসময় ফার্মগেট এ পৌঁছে গেল।রিকশার ভাড়া পরিশোধ করে তারা রাস্তার অপর পাশে এসে বাস এর জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু আজ রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড়। এই অবস্থা দেখে রিমি অর্ণবকে বলল যে- “অর্ণব আজ মনে হয় কপালে বাস নাই, চল রিকশা তে যাই।” রিমির এই কথাই অর্ণবের মন অজানা আনন্দে ভরে উঠল।সে খুব খুশি হল এই ভেবে যে সসে যাকে ভালবাসে তার সাথে সে আরও কিছু বেশি সময় থাকতে পারবে।

তারা দুইজন ফার্মগেট থেকে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রিকশা নেয়।রিকশা কিছুদূর যাওয়ার পর শুরু হয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি।রিমি বৃষ্টিতে ভিজতে চায়।অর্ণবেরও বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করছিল, কিন্তু কয়েকদিন আগেই সে জ্বর থেকে ওঠার কারনে ভিজতে ভয় পাচ্ছিল।কিন্তু সে যখন শুনল যে রিমি বৃষ্টিতে ভিজতে চাচ্ছে তখন সে সিদ্ধান্ত নিল যে জ্বর হোক আর যাই হোক সে আজ বৃষ্টিতে ভিজবেই।রিকশাতে রিমি আর অর্ণব কথা বলছে।কথার মাঝে মাঝে রিমি হাসছে। আর রিমি যখনি হাসছে তখনিই অর্ণবের কানে রিমির হাসি নূপুরের মত বাজতে থাকে।রিমির হাসি অর্ণবের খুব পছন্দ।আসলেই রিমি খুব সুন্দর করে হাসে।রিমির সাথে কথা বলতে বলতে অর্ণবের মনে খুব ইচ্ছা হয় যে সে রিমিকে তার ভালবাসার কথা জানাবে। কিন্তু পরক্ষনেই তার মনে ছিন্তা আসে যে রিমি বিবাহিত, তার বাচ্চাও আছে।রিমি একজন সুখী গৃহিণী।এই চিন্তা করে অর্ণব নিজেকে আটকানোর চেষ্টা করে।এই সব চিন্তা করতে করতে একসময় তাদের রিকশা রিমির বাসার কাছে চলে আসে।অর্ণব চিন্তা করে এখন রিমি নেমে জাবে।তার খুব ইচ্ছা করে রিমির হাত দুটো ধরে বলতে যে, সে রিমিকে খুব বেশি ভালবাসে।কিন্তু কোন এক অজানা কারনে সে এইটা রিমিকে বলতে পারে না।

রিমি নেমে যায় রিক্সা থেকে। নামার আগে সে অর্ণবের দিকে তাকিয়ে একটা সুন্দর হাসি দিয়ে বিদায় চায়।বিদায় বেলায় রিমির সেই সুন্দর হাসিটা অর্ণবের বুকে তীরের মত বিধে।কিন্তু তারপরেও অর্ণব তাকে হাসি মুখে বিদায় দেয়।রিমি নেমে যাবার পর বাকি পথটুকু অর্ণবের কাছে শবযাত্রার মত মনে হয়।এক গাদা দুঃখ এসে ভর করে অর্ণবের মনে।অর্ণবের মনে শুধু একটা কথাই বার বার মনে হতে থাকে,তার ভালবাসা কি সারা জীবন অব্ব্যাক্তই থেকে যাবে?রিমি কি তার প্রতি অর্ণবের এই ভালবাসা কখনই বুঝতে পারবে না???

আসলে কিছু কিছু মানুষের ভালবাসা কখনই সফল হয় না। এই গল্পে অর্ণবের ভালোবাসাও ঠিক সেই রকমেরই এক ভালবাসা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৫৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×