গতকাল আমার এক সুইডেন প্রবাসী বন্ধু কে কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম আমি এত সহজে ভুলে যাই না।
আজ সকালে যখন বাস এ উঠলাম, প্রথমেই সামনের একটা মেয় কিছুটা চিতকার করে বলে উঠলো
“আপু, ভাল আছেন? কথায় যাচ্ছেন?”
আমি কিছুক্ষন মেয়টার দিকে তাকিয়ে চেনার চেষ্টা করাতে মেয়ে টা বুঝতে পারে আমি তাকে ঠিক চিনতে পারিনি। তাই আবার নিজেই বলে উঠলো
“আপু আমাকে চিনতে পারেন নাই? আমি কে.বি.দোভাষ এ পড়তাম। আমাকে না চিনলেও আপনাকে আমার ঠিকই মনে আছে। আপনাকে আমার খুব ভাল লাগত তখন”
বলে রাখা দরকার, আমাদের স্কুলের নাম খান বাহাদুর আব্দুল হক দোভাষ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। যার সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা হয়, ক.বি.এ.এইচ দোভাষ স্কুল।আর কথ্য ভাষায় তো আর ছোট হয়ে নাম হয়েছে ক.বি.দোভাষ।
আমি একটু হেসে উত্তর দিলাম-“ ওহ! হুম । তখন ভাল লাগত, আর এখন ভাল লাগছে না? আচ্ছা যাই হোক তুমি এখন কি পড়ছ?”
“আমি মহসিন কলেজে অনার্স ভর্তি হয়ে এখন রিলিজ স্লিপ নিয়ে সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হব”।
টুক টাক কথা বলার পর আমরা চুপ হয়ে গেলাম। নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছে গেছি। বাস থেকে নেমে গেলাম।
দিনের শেষের দিকে টিউশনি টা শেষ করে যখন বাসায় ফিরছি তখন ঘরিতে ৪ টা ৩৫ মিনিট।
চোখের সামনেই একটা লোক আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি কিছু বলব আশায়। উনাকে দেখেই চেনা চেনা লাগছিল। কিন্তু বহু কষ্টে ও মনে করতে পারছিলাম না উনি কে। উনি নিজ থেকে আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল “ মা, ভাল আছ?”
বাধ্য মেয়ের মত বললাম, “জী ভাল। আপনি?”
এর মধ্যে আমি আমার মেমরি তে খুজচ্ছিলাম উনি আসলে কে?অনেক হাতরেও উনাকে আমি আমার স্মৃতিতে খুজে পেলাম না।
হঠাত পিছন থেকেই দেখি একজন ভদ্র মহিলা সামনে এসে আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলেন। উনাকে দেখে বুঝতে পারলাম লোক টা কে। আমার স্কুল বান্ধুবি সঙ্গিতা।ভদ্র মহিলা টি ওর মা। আর লোক টি ওর বাবা।
২ একটা বাক্য বিনিময় করে যখন বাসায় চলে এসেছি তখন হঠাত অবাক হলাম এই ভেবে, আমি আংকেল টা কে চিনলাম না কেন?
আমি কি সত্যি সব ভুলে যেতে শুরু করলাম নাকি? এটা তো আমার সভাব সুলোভ আচরন নয়। তাহলে?
খুব খেয়াল করে দেখলাম আমি গত এক-দেড় মাস ধরে প্রচন্ড রকমের পরিবর্তন হয়ে গেছি। আমি খুব বেশি রকম ছন্নছাড়া হয়ে গেছি। অগোছালো আমি আগেও ছিলাম। কিন্তু অন্তত এতোটা পাল ছাড়া নৌকার মত ছিলাম না। কিন্তু এখন দিনের পর দিন জনে জনে ঝগড়া বিবাদ হয়। কিছুই আর ধর্য্য ধরে সয্য করতে পারি না।কিছুই ভালো লাগে না। দিন গুলো এক-একটা যেনো আমার নির্বাসিত সময়। আদৌ আমি এই চক্র থেকে বের হতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না।মাথায় হাজার টা চিন্তা নিয়ে মুহূর্ত পার করছি।আজ-কাল বলার মানুষ ও খুজে পাই না। আর যে দু-একজন শুনতে চায়, কেমন যেনো বলতেও ইচ্ছা করে না।এ যেন অস্থিরতায় আসক্ত আমি।