বিশ্বজুড়ে প্রতারণা' শীর্ষক খবর প্রকাশের পর উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান নিউ ৭ ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশনের এদেশীয় বাণিজ্যিক অংশীদার জিজিবিকে তলব করেছে সরকার। প্রকাশিত রিপোর্টের ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ফাউন্ডেশন স্বীকার করে নিয়েছে জাতিসংঘের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আরও দাবি করেছে, এটা আমেরিকান আইডল ও ইন্ডিয়ান আইডল প্রতিযোগিতার মতো একটি প্রতিযোগিতা
বিস্তারিত:
'বিশ্বজুড়ে প্রতারণা' শীর্ষক খবর প্রকাশের পর উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান নিউ ৭ ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশনের এদেশীয় বাণিজ্যিক অংশীদার জিজিবিকে তলব করেছে সরকার। প্রকাশিত রিপোর্টের ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ফাউন্ডেশন স্বীকার করে নিয়েছে জাতিসংঘের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আরও দাবি করেছে, এটা আমেরিকান আইডল ও ইন্ডিয়ান আইডল প্রতিযোগিতার মতো একটি প্রতিযোগিতা। কিন্তু অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, আইডল প্রতিযোগিতাগুলো একটি বাণিজ্যিক উদ্যোগ। তাহলে সপ্তাশ্চর্য প্রতিযোগিতাও বাণিজ্যিক; যা কিনা দেশীয় বাণিজ্যিক অংশীদার জিজিবিও কবুল করে নিল।
২০০৭ সাল থেকে বিশ্বের সাতটি সেরা প্রাকৃতিক স্থান নির্বাচন করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন নিউ ৭ ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন। চার বছর ধরে ইন্টারনেটে ভোটাভুটির পর ২০১১ সালের ২১ জুনে তারা বাংলাদেশে শুরু করে এসএমএসএ ভোটাভুটি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এমন একটি বিষয়ে যত খুশি তত ভোট দিয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি আন্তর্জাতিক মহল স্বীকৃতি দেবে কিনা। তাই অনেকের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন নয় মূলত বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার কোটি ডলার হাতিয়ে নেওয়ার এটি একটি আন্তর্জাতিক প্রতারণা। কারণ সুন্দরবনকে দেওয়া প্রতি এসএমএসএ ৬৮ পয়সা দেওয়া হচ্ছে সেই ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশনকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশের বাণিজ্যিক অংশীদার জিজিবির কাছে ব্যাখ্যা চায় সরকার। জবাবে ১২ পয়েন্টের একটি চিঠিতে ফাউন্ডেশন একটি ব্যাখ্যা দেয়। এতে দাবি করা হয়, আমেরিকান আইডল, ইন্ডিয়ান আইডল এবং বাংলাদেশের ক্লোজ-আপ ওয়ানের মতো রিয়্যালিটি শো'র আদলে এসএমএস ভোটে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের এই উদ্যোগ তাদের।
পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে বিনোদনমূলক প্রতিযোগিতার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যৌক্তিক কিনা এমন প্রশ্ন এনটিভির পক্ষ থেকে করা হয় দৈনিক মানব জমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধূরীর কাছে। উত্তরে তিনি জানান, যেহেতু বিশ্বব্যাপী তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে, তখন তারা জাস্টিফাই করার জন্য ইন্ডিয়ান আইডল, আমেরিকান আইডল প্রতিযোগিতার সঙ্গে এই প্রতিযোগিতার তুলনা করে দেখাতে চেয়েছে দুটিই একই পাল্লায় মাপা যায়। আমি মনে করি, এটা কোন অবস্থাতেই একই সঙ্গে গ্রহনযোগ্য নয়। কারণ, বাংলাদেশের ইমেজ এখানে জড়িত, হোল ন্যাশন এখানে জড়িত।
ফাউন্ডেশন এবারের চিঠিতে স্বীকার করে নিয়েছে তাদের সঙ্গে জাতিসংঘ বা ইউনেস্কোর প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোন সম্পর্ক নেই। ফাউন্ডেশন ২০০৭ সালে মনুষ্যসৃষ্ট যে সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন করেছিল জাতিসংঘের ইউনেস্কো ২০০৭ সালেই জানিয়ে দেয় বিশ্বে কোন ঐতিহ্য নির্বাচনের অধিকার কেবল তাদেরই আছে। মতিউর রহমান আরো বলেন, এটা গ্রহণযোগ্য হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ তারা বলছে ইউনেস্কোর সঙ্গে তাদের বর্তমানে কোন সম্পর্ক নেই, আগে ছিল। তাই বিষয়টি এখানেই স্টপ (বন্ধ) করা উচিত। সরকার যত দ্রুত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ততই দেশবাসীর জন্য মঙ্গল।
এর আগে দেশের বরেণ্য টিভি ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষারও বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। আমি নিজেও এ ব্যাপারে ভোট করতে প্রচার চালিয়েছিলাম। এখন বুঝতে পারছি সেটা ভুল ছিল।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন ।