somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহান স্বাধীনতা দিবস এর তাৎপর্য এবং আমাদের সত্য ইতিহাস ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অভিভক্ত ভারত থেকে ব্রিটিশ এবং ইংরেজ শাসনের অবসান হল
কাদের মাধ্যমে ।
নিগ্রিত সংখ্যালঘু মুসলিম জাতীর উপর চলল ব্রিটিশ দের খরগ । বহু আলেম ওলামা দের ধরে নিয়ে ব্রিটিশ ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদিরা
কামানের তোপের মুখে ফেলে বাতাসে মিশিয়ে দিত , এবং ধর্মান্তরিত করার জন্য মধ্যযুগিয় কায়দায় নির্যাতন চালাত ।
গান্ধি ডাক দিল অহিংস আন্দোলনের , কারন হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায়
তখন সমগ্র ভারত সাম্রাজ্য উত্তপ্ত । তার আহবানে অনেক নিগৃহীত
মুসলিম অন্তত যুলুমের অত্যাচারের বিচার চাইবার দিক মহতি খুজে
পাইল ।
মাওলানা ভাসানি সেই সব নিরীহ নির্যাতিত দের বাঁচানোর জন্য
গঠন করেন মুসলিম লীগ ফর ন্যাশান বা জাতীয় মুসলিম সমাজ
এতে , কমরেড মুজাফফর , কমরেড আব্দুল হক , মতিলাল , কানাই চাঁদ , মনিসিং , সুভাস চন্দ্র বসু , সিরাজ সিকদার সহ অনেক প্রথম সারির আলোচিত ব্যক্তি বর্গ জুট গঠন করে , ব্রিটিশ
দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । ফকির আন্দোলন , টঙ্খ আন্দোলন ,
তেভাগা আন্দোলন , জমিদার দের বিরুদ্ধে বর্গা ও খাস জমি অধিগ্রহন আন্দোলন সহ সব মহলের কৃষাণ , শ্রমিক জেলে মজুর
সহ সর্বস্তরের মানুষ এ আন্দোলনে একাত্মতা ও সঙ্ঘতি ঘোষণা
করে ব্রিটিশ দের ভিত নড়িয়ে দেয় ।
নানা সাঁড়াশি আক্রমণে ব্রিটিশ শক্তি ধিরে ধিরে তাদের গুটিয়ে নেয় এবং ভারত অন্তর বর্তি সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে গা ঢাকা দেয় ।
বাংলাদেশের ২ মহারথি শেরেবাংলা একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সহরাওয়ারদি এ অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য মন্ত্রী
এবং অন্যজন স্পিকার ছিলেন ।
ব্রিটিশ বিদায় নিলেও এদের ধূর্তামি তলে তলে ছলছিল কাস্মির
নিয়ে আবার যুদ্ধ বাধিয়ে দেয় , আবার মহান নেতাদের মাধ্যমে
তার ও আংশিক সমাধান হয় কিন্তু হিন্দু মুসলিম বৈষম্য দূর
হলনা ।
কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী পাকিস্থানের পক্ষ নিয়ে মুসলিম
অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৪ দফা আন্দোলনের ডাক দেয় , এবং সে আন্দোলনে সমস্ত মুসলিম এক্য ও ভারত অন্তর্বর্তী সরকারের
বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে স্বাধীনতার ডাক দেয় । ৪৭ সালে
জন্ম হয় ভারত বিভক্ত স্বাধীন পাকিস্থানের ।
মজলুম নেতা মাওলানা ভাসানি সহ অনেকেই পশ্চিম পাকিস্থানি
দের সাথে জুট বাধতে অনাগ্রহি হয় ।
মুসলিম লিগে ফাটল ধরে , পূর্ব বাংলা কমিনিশট নামে একটি শাখা তাদের নিজস্ব পায়ে দ্বারায় আরেকটি শাখা ভাসানির নেতৃত্বে আওমি মুসলিম লিগ গঠন করে , পশ্চিম পাকিস্তানিদের
আচরন গত দিক রাজনৈতিক , সামাজিক , অর্থনৈতিক সহ নানা
বৈষম্য চলতে থাকে ।
আগরতলা যরযন্ত্র মামলা হয় বাঙালি জাতীয় আওমি নেতাদের
উপর , সেখানে গোলটেবিল বৈঠকে এর বিরুদ্ধে আইযুব বিরুদ্ধি
সমালোচনা করেন , মাওলানা ভাসানি এবং জাতীয় আওমি নেতৃবৃন্দ , আইয়ুব সরকার প্রতিবাদ সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয় ।
সেখ মুজিব তখন উদিয়মান তরুন নেতা , পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিব সহ ৩৬ জন নেতা কর্মিকে গ্রেফতার করে ।
বাঙালি প্রতিবাদ মুখর হয় , প্রায় ১ বছর কারাবরণের পর মাওলানা ভাসানি ও বাম দল গুলুর আন্দোলনের তোপে মুজিব
সহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্থান সরকার ।
এর মধ্য ৬ দফা / ১১ দফা আন্দোলনে পাকিস্থান সরকার
এর বিপর্যয় নেমে আসে । ৬৯ এ গনঅভ্যুত্থানে পাকিস্তানের
স্বৈরশাসকের ভিত নড়ে ,
বাধ্য হয় নির্বাচন মুখি হওয়ার ।
আসে ৭০ এর নির্বাচন , বাংলাদেশ জাতীয় / আওমি মুসলিম লিগ [ বিঃ দ্র; আওমি উরদু শব্দ বাংলা অর্থ জাতীয় ] নিরংকুশ
সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে ] কিন্তু ইয়াহিয়া বা পাকিস্তান সরকার
বাঙ্গালির এ বিজয় মেনে নিতে পারেনি , তারা ক্ষমতাকে আঁকড়ে
থাকার ফন্দি করে মুজির / ইয়াহিয়া বৈঠক প্রস্তাব দেয় ঢাকায় ।
৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে মহাসমাবেশের ডাক দেয় , জাতীয় লিগ , সমাবেশের সভাপতি ছিলেন মাওলানা ভাসানি ।
সারাদেশের লক্ষ লক্ষ লোকের সামনে মুজিব স্বাধীনতার জ্বালাময়ী ভাষণ দেন ।
বাঙালি এর মর্ম অনুধাবন করে প্রস্তুতি নিতে থাকে ।
১৭ ই মার্চ ইয়াহিয়া ঢাকায় আসে এবং মুজিবের সাথে বৈঠকে বসে ।
চলতে থাকে বৈঠক দিনের পর দিন রাতের পর রাত কিন্তু আমাদের দাবি ওরা মানতে নারাজ ।
গোপনে ইয়াহিয়া বাংলাদেশ কে করায়ত্ত করার জন্য সামরিক
সরঞ্জাম সহ ঢাকা ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হয় ।
মাওলানা ভাসানি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে চিকিৎসার জন্য কলকাতা পাঠানো হয় ।
মুজিব গ্রেফতার হওয়ার আগেই স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র অধিনস্ত
লোকের নিকট রেখে যান ।
মেজর জিয়া ছিলেন সামরিক কমান্ডার , চত্রগ্রাম ইউনিট ।
সেখানে ঘোষণা পত্র পৌঁছলে কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে প্রথমে আব্দুল জলিল এবং পরে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন ।
পাকিস্তানিরা প্রথমেই রাজার বাগ পুলিশ লাইন এটাক করে এবং
২৫ শে মার্চ রাতের আধারে ঘুমন্ত জাতীর উপর চালায় ইতিহাসের নির্মম ন্যাক্কার জনক হত্যাকাণ্ড ।
স্বাধীনতা ঘোষিত হলে সারা বাংলার , ছাত্র , শ্রমিক , কৃষক , আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ সর্বস্তরের জনতা এক হয়ে মুক্তি যুদ্ধে
ঝাঁপিয়ে পড়ে ।
ভারতের নেতাজি সুবাস চন্দ্রের দল ও বাম মূর্ছা অনেক মুক্তি বাহিনিকে ট্রেনিং এর ব্যাবস্থা করে , এর মধ্য কাদের সিদ্দিকের বাহিনী ভাল ভুমিকা পালন করে । জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে
সারা বাংলা কে ১১ সেক্টরে ভাগ করে গেরিলা কায়দায় পাকিস্তানিদের সুসজ্জিত আধুনিক বাহিনীর সাথে চলে তুমুল লড়াই । এবার নিয়াজি ও পাকিস্তানিরা গোপন আতাত করে
কথিত রাজাকার , আলবদর , আলসামসদের সাথে । চালায় লুট , অগ্নিসংযোগ , ধর্ষণ ।
দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ভারত ১ম বাংলাদেশ কে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয় । পাকিস্তানিরা বুঝে গেছে লক্ষ লক্ষ সুসজ্জিত বাহিনীর পরাজয় আসন্ন ।
রাজাকার , আলসামস , এর সহায়তায় পালিয়ে যাওয়ার আগে
দেশের জাতীয় নেতা সহ বুদ্ধিজীবী দের ধরে ধরে নির্মম ভাবে
হত্তা করে । কারন বুদ্ধিজীবীরা বেচে থাকলে তারা বিশ্বের সাথে
ভাল সুসম্পর্ক স্থাপন করে অতি অল্প দিনেই আবার বাঙালি জাতী মাথা তুলে দাঁড়াবে ।
দেশ শত্রু মুক্ত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সামরিক ইউনিটের নিকট জেনারেল নিয়াজি ৫৩ হাজার সৈন্য সহ আত্মসমর্পণ করে ।
১৬ ই ডিসেম্বর কে জাতীয় সরকার বিজয় দিবস হিসাবে ঘোষণা
করা হয় ।
ঘরে ফেরে যুদ্ধ ফেরত মানুষ / হিসাব মিলায়ে দেখে প্রত্যক পরিবারের অধিকাংশই কেউ ফেরেনি ।
৩০ লক্ষ বাঙ্গালির রক্তে ২ লক্ষ নারির ইজ্জতের বিনিময়ে যে
স্বাধীনতা তা আমরা আর ভুলের মাশুলে , নিজেদের মধ্য বিভেদ
সৃষ্টির মাধ্যমে হারাতে চাইনা ।
মুজিব আরও ২ মাস পর কারামুক্তি পায় , শুরু হয় দেশ গড়ার সংগ্রাম । আমরাও অতিত ভুলে , দাগ ভুলে এস দেশ গড়ি ।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×