somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

 ‘নতুন শুরু’র আশায় ছাড় সাকিবকে

২৩ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফিল্ডিং কোচ জেসন সুইফটকে সঙ্গে নিয়ে জুনায়েদ সিদ্দিককে স্লিপ ক্যাচিং অনুশীলন করাচ্ছিলেন স্টুয়ার্ট ল। হঠাৎ পাশে আবিষ্কার করলেন সাকিব আল হাসানকে। দেশে আসার পর বাংলাদেশ কোচ আর অধিনায়কের প্রথম সাক্ষাৎ!
করমর্দনের পর কোচ ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন, আপাতত ব্যস্ত, পরে কথা হবে। প্রস্তুতি ম্যাচটা হবে কি না, তখনো বোঝা যাচ্ছিল না। তবে অনুশীলন শুরু হয়ে গেছে সময়মতোই। সাকিব এলেন পৌনে ১০টার দিকে। কোচের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সহকারী কোচ সারোয়ার ইমরানের সঙ্গে আলাপে। পাশে তামিম ইকবাল। মুখে হাসি। প্রস্তুতি ম্যাচ শুরুর পর দলের নতুন মুখ নাসির হোসেনের সঙ্গে মাঠের চারপাশে হাঁটতে হাঁটতে অনেকক্ষণ কথা বললেন। মুখে হাসি লেগেই আছে।
সেই হাসিটা উধাও ঘণ্টা দুয়েক পর। তামিম ইকবালকে সঙ্গী করে বিসিবির প্রধান নির্বাহীর রুম থেকে যখন বেরোলেন, সাকিবের মুখে একটু অপ্রস্তুত ভাব। বোঝা গেল, ভেতরের আলোচনা খুব একটা সুখকর হয়নি তাঁর জন্য। প্রধান নির্বাহী মনজুর আহমেদের কথায়ও ইঙ্গিত মিলল তেমনই। দল নির্বাচন নিয়ে নির্বাচকদের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য, অনুশীলনে যোগ না দিয়ে বিজ্ঞাপনে শুটিংয়ে থাকা, নতুন কোচের সঙ্গে দেখা না করা—এসব যে বোর্ড ‘সিরিয়াসলি’ নিয়েছে, সেটা সাকিবকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন তিনিই। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না অধিনায়কের বিরুদ্ধে। কারণ প্রধান নির্বাহীর ভাষায় কিছু ছিল ‘মিসকমিউনিকেশন’, কিছু ‘মিসরিপ্রেজেন্টেশন।’ নতুন শুরুর ‘স্বপ্ন’ দেখিয়ে তাঁর আশা, ছয় মাসের মধ্যে দেখা যাবে অন্য সাকিবকে!
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় অবশ্য আবার হাসি ফিরেছে সাকিবের মুখে। অনুশীলনে যোগ না দেওয়া নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘জিম্বাবুয়ে যাওয়ার আগে দলের দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার কথা ছিল। আমার সরাসরি জিম্বাবুয়ে যাওয়ার কথা ছিল ২৭ তারিখে, ওই পর্যন্ত দেশে ছুটিতে থাকার কথা। টানা খেলছি, বিশ্রামটা আমার খুব দরকার ছিল। আমি ওই প্ল্যানেই ছিলাম। বুঝতে পারিনি যে দলের প্ল্যান পরিবর্তন হওয়ায় নতুন করে আবার ছুটি নিতে হবে। বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই আমি লিখিত আবেদন করেছি। বোর্ড অনুমতিও দিয়েছে।’
ব্যাখ্যাটাকে গ্রহণযোগ্যই মনে হয়েছে মনজুরের, ‘দল দক্ষিণ আফ্রিকা যায়নি, কিন্তু ও (সাকিব) ভেবেছে ওর ছুটিটা তো বাতিল হয়নি। এটা আসলে একটা মিসকমিউনিকেশন হয়ে গেছে। আর যেহেতু ও জানে ছুটিতে থাকবে, তাই ইংল্যান্ডে থাকতেই কিছু বিজনেস কমিটমেন্ট করেছিল। সেটা এড়ানোর উপায় ছিল না। আর বিশ্রাম তো ওর প্রয়োজন ছিলই। তবে ও বুঝতে পেরেছে, সবকিছু আরও ভালোভাবে হতে পারত। কোচের সঙ্গে না দেখা করাটা হয়তো কোনো ভুল নয়, কিন্তু দেখা করলে ভালো হতো, সেটা ও বুঝতে পেরেছে।’
অধিনায়ক, সহ-অধিনায়কের সঙ্গে সভায় ছিলেন তিন নির্বাচকও। দল ঘোষণার আগে নির্বাচকেরা তাঁর মতামত নেননি—সাকিবের এই মন্তব্যেই শুরু সর্বশেষ বিতর্ক। কিন্তু কাল সাকিবই আবার বললেন, ‘ফোনে কিন্তু আকরাম ভাইয়ের (প্রধান নির্বাচক) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মনে হয় না, কোনো সমস্যা হয়েছে বা হবে। আমি ওনাদের যথেষ্ট সম্মান করি। আমি মনে করি, ওনারাও তা জানেন।’ আর প্রধান নির্বাহীর ব্যাখ্যা, ‘ওর বয়স কম। অনেক সময় যা বলতে চায়, তা ঠিকভাবে বোঝাতে পারে না। ও স্রেফ ওর অবস্থানটা বলেছে, কোনো অভিযোগ করতে চায়নি।’
কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার পক্ষে যুক্তি, ‘ও তরুণ অধিনায়ক, তরুণ খেলোয়াড়। ওকে বেড়ে ওঠার জন্য সময় দিতে হয়। মানুষ ভুল থেকেই শেখে। ওই সময় তিরস্কার না করে সাহায্য করা উচিত।’
সম্পূরক প্রশ্নও উঠেছে। সাকিবের জায়গায় অন্য কেউ হলেও কি ‘বেড়ে ওঠার’ সময় দেওয়া হতো নাকি শাস্তি দেওয়া হতো? মনজুর উত্তরে জোর দিলেন ‘নতুন শুরু’র দিকেই, ‘আমরা চেষ্টা করছি অতীত ভুলে যাওয়ার। এখন থেকে নতুন শুরু। টিম ম্যানেজমেন্ট নতুন, আমরা নতুন মৌসুম শুরু করছি। আমার জন্যও নতুন মৌসুম। এখন আমরা যদি এগোতে চাই, তাহলে অতীত থেকে শিক্ষা নেব, কিন্তু অতীতকে ধরে রাখব না। আজ যা আলোচনা হয়েছে, সেটা ঠিকভাবে মানলে ছয় মাসের মধ্যেই অন্যকিছু দেখতে পাবেন।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহীর এই আশা তো পুরো বাংলাদেশেরই চাওয়া!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×