somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,শুনছেন কি..

২২ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আমি আমার মাকে হারিয়েছি,বাবা কে হারিয়েছি।স্বজন হারানোর ব্যথা কি আমি বুঝি।আমাকেও হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়েছে.।তবুও আমি রাজনীতি করি এই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য,বাংলার মানুষের ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।"

১।আ্ওয়ামী লীগের শাসনকাল।রাজধানীর মালিবাগে এমপি ইকবালের নেতৃত্বে একটি হরতাল বিরোধি মিছিল এগিয়ে আসছিলো।বিপরিত দিক থেকে এলো একটি হরতাল সমর্থকদের মিছিল।হঠাৎ ইকবালের খুব কাছ থেকে কয়েকজন যুবক পিস্তল বের করে গুলি ছুড়লেন।কেউ কিছু ভাল করে বুঝার আগেই লুটিয়ে পড়লো চার চারটি মানুষ।একটি আগের সজীব মানুষ গুলো নাম লেখালো লাশের কাতারে

সেই হত্যার বিচার হয়নি আজো।উল্টো এমপি ইকবালের নামে করা মামলা প্রত্যাহার হল রাজনৈতিক বিবেচনায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বজন হারানোর ব্যথায় যন্ত্রনাকাতর কে্উ কি পারে এমন করে মামলা প্রত্যহার মেনে নিতে?

২।২৮ অক্টোবরের সেই গা শিউরে উঠা দৃশ্য।তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান নির্দেশ দিলেন লগী বৈঠা নিয়ে ঢাকা অবরোধ করার জন্য।টেলিভিশনের সেটে দেখা গেলো,পৈশাচিক কায়দায় লগী বৈঠা দিয়ে নারকীয় কায়দায় সাপের মত পিটিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে।আঘাতে আঘাতে মাথায় ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছিলো।গলগল করে রক্ত বেরুলো মুখ দিয়ে।তবুও লগী বৈঠার আঘাত চলছিলো,যতক্ষন না নিস্তেজ হয়ে এল শরীর।

আজো এর কোনো বিচার হয়নি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বজন হারানোর বেদনায় দুমড়ে মুচড়ে উঠা মায়ের সাথে আপনার হৃদয়ও কি কেদেছিলো সেদিন ?তবে কেন আজো তার কোন বিচার হয়নি?

৩।গামা হত্যা মামলা,নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দিয়েছেন।অথচ আইনী প্রক্রিয়া তখনো শেষ হয়নি।

আজ নুরুল ইসলামের স্স্ত্রী কেদে কেদে একটি প্রশ্নই করছেন বারেবারে"মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কি পারতেন,নিজের পিতার হত্যাকারিদের ক্ষমা করে দিতে?পারতেন কি কোন রাষ্ট্রপতী তাদের ক্ষমা করে দিলে তা মেনে নিতে?"

স্বজন হারানোর ব্যথায় যন্ত্রনাকাতর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,কি জবাব দিবেন নুরুল ইসলামের স্ত্রীকে?

৪।সারা দেশে অসংখ্য হত্যা মামলার আসামীরা রাজনৈতিক বিবেচনায় তাদের মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন।তাদের মুল যোগ্যতা তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক।অথচ এক লিমনের মত আরো অগনীত মানুষ অপরাধী না হয়েও রাষ্ট্রের হাতে নির্যাতীত হচ্ছেন।মামলা,পুলিশের হয়রানী তাদেরকে দাড় করিয়ে দিচ্ছে জীবনের নির্মম নিষ্ঠুর বাস্তবতার সামনে।

দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটবে কি এমনি করে,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?

৫।পাবনায় প্রশাসনের লোকদের পিটিয়েও বীর দর্পে ভিক্টরী চিহৃ দেখিয়ে পার পেয়ে গেলো স্থানীয় আওয়ামিলীগের নেতারা।নাহ,তাদের কোনো বিচার হয়নি।হবে বলেও আমরা সাধারন মানুষ আশা করিনা।কারন তারা সাধারন নন,সরকারের লোক।এই ঘটনা আমাদের মুখে হাসি ফুটায়নি,আতংকিত করেছে।

গনতন্ত্রের মানসকন্যা,এখনো কি দেশের সাধারন মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর সে বাসনা আপনার মনে আছে? জানতে বড় ইচ্ছা হয়।

৬,মীরসরাইয়ের দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের পাশে গিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন।স্বজনদের সান্তনা দিয়েছিলেন এই বলে "আমি আমার মাকে হারিয়েছি,বাবা কে হারিয়েছি।স্বজন হারানোর ব্যথা কি আমি বুঝি"। আমরা সত্যিই আপ্লুত হয়েছিলাম আপনার কথা শুনে।আপনার সেই বেদনা কাতর মুখভঙ্গী আমাদের ব্যথিত করেছিলো।

শবেবরাতের রাতে গনপিটুনিতে নিহত হল ছয় ছয়টি তাজা প্রান।সন্ধ্যায় বেরিয়ে ছেলেগুলো মায়ের কোলে ফিরে এল লাশের খবর হয়ে।মরেও নিস্তার নেই।পুলিশের খাতায় একেকজন আজ অজ্ঞাতনামা ডাকাত।স্বজনেরা কান্না ভুলে অপেক্ষায় আছেন,কবে আপন আপন সোনামনীদের মাটির ঘরে রেখে আসবেন পরম মমতায়।কবে শেষবারের মত একটুখানি ছুয়ে দিবেন তাদের নিরব নিথর শরীর।আর বলবেন"বাবারে,ঘুমা।.আমার লক্ষি সোনা ঘুমায়রে"

আপনি কি পারেননা,মিরসরাইয়ের মত এই সব স্বজন হারানো মায়েদের পাশে দাড়াতে?পুলিশের নির্মম রসিকতার হাত থেকে ওদের একটু মুক্তি দিতে?


এই দেশের সাধারন মানুষের চাওয়া পাওয়া খুবই সামান্য।দু বেলা দু মুঠো ভাত,আর একটু নিরাপদে বেচে থাকা।সে আশায় তারা প্রতিবারে রাজনীতিবীদদের আশ্বাস কে বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়।

এই দেশের মানুষ বড় আবেগপ্রবন।অন্যের দু"খ কষ্ট তাদের মনকে ব্যথিত করে,সমব্যথি করে তুলে।তারা বিশ্বাস করে স্বজন হারানোর যে দু:খের কথা আপনি বলেন তা নিখাদ সত্যি,কোন রাজনৈতিক কৌশল নয়।কিন্তু এই সব কর্মকান্ডের সাথে মিলাতে গিয়ে তাদের সে বিশ্বাস টলে যায়,নাড়া খায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,আপনি তাদের সে বিশ্বাস ধরে রাখবেন কি?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:০৮
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×