somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইভি হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার হারিয়েছেন রাষ্ট্রপতি -অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের স্ত্রী

২১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জঘন্য খুনি বিপ্লবকে মাফ করে দেয়ার পর রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তার স্ত্রী আইভি রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মরহুম অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের বিধবা স্ত্রী রাশিদা ইসলাম। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির উচিত হবে এখন আইভি রহমানের হত্যা মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দিয়ে ওই ঘটনায় জড়িতদের ক্ষমা করে দেয়া। কারণ, তিনি যেমন স্ত্রী হারিয়েছেন, আমিও স্বামী হারিয়েছি। আমার স্বামী হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়ে স্ত্রী হত্যার বিচার করার অধিকার তার নেই। গতরাতে টেলিফোনে আমার দেশকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় রাশিদা ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার পিতার হত্যাকারীদের বিচার করে দ্রুততার সঙ্গে তাদের ফাঁসি কার্যকর করেছেন। যারা পলাতক আছেন তাদেরও ধরে এনে ফাঁসি দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অথচ তার সরকারের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে নুরুল ইসলামের খুনিদের ক্ষমা করে তাদেরকে আরও খুন করার লাইসেন্স দিচ্ছেন। তিনি যেমন পিতার হত্যাকারীদের বিচার চাওয়ার বা করার অধিকার রাখেন তেমনি আমার এতিম সন্তানরাও পিতৃহত্যার বিচার পাওয়ার, খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখার অধিকার রাখে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর তাহেরের বাসায় তার স্ত্রী নাজমা তাহেরের উপস্থিতিতে তিন ছেলে বিপ্লব, লাবু ও টিপু মিলে জবাই করে। এরপর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ তখন দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। তখন সেখানকার পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরও সন্ত্রাসের ‘গডফাদার’ হিসেবে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন।
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের অসহায় পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কারণে লক্ষ্মীপুর ছেড়ে ঢাকায় বসবাস করতে থাকেন। বর্তমানে তারা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসার চালাতে নিদারুণ কষ্ট করছেন রাশিদা ইসলাম। বড় মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। একমাত্র ছেলে ও দ্বিতীয় মেয়ে অনার্সে পড়াশোনা করছে। ছোট মেয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণীতে।
আমার দেশ-এর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে রাশিদা ইসলাম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার আছে মৃত্যুদণ্ডের আসামিকে ক্ষমা করার। তাই বলে এমন জঘন্য খুনিদের তিনি ক্ষমা করে দেবেন এটা ভাবতেও অবাক লাগছে। কোনো সভ্য দেশে দলীয় বিবেচনায় খুনিদের এভাবে ছেড়ে দেয়ার দৃষ্টান্ত নেই। রাশিদা ইসলাম বলেন, তাহের পরিবার শুধু আমার স্বামী নুরুল ইসলামকেই নয়, আরও অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে খুন, গুম ও চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছে। গোটা এলাকাবাসীর জীবন তারা বিপন্ন করে তুলেছে। তারা যদি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ থেকে আস্কারা পায় তখন তাদের খুনের নেশা আরও বেড়ে যাবে। আমাদের মতো নিরীহ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নতুন করে হুমকির মুখে পড়বে। একটা স্বাধীন দেশে যদি খুনি ক্ষমা পেয়ে যায়, তাহলে কোথায় আইনের শাসন। এই খুনির ক্ষমা হয় কীভাবে?
রাশিদা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলবো—আমার অসহায় এতিম সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে আপনি খুনি তাহের পরিবারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। কারণ, আপনি যেমন আপনার পিতার হত্যাকারীদের বিচারকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছেন, তেমনি আমার সন্তানরাও তার নিরপরাধ পিতার খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখতে চায়। তা না হলে আল্লাহ খুনির প্রশ্রয়দানকারীদের বিচারও অবশ্যই করবেন।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে দেয়া রায়ে বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত মঙ্গলবার নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার বিচারিক আদালত চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। চিঠিটি পাঠিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক নুরশেদ আহমেদ ভুঁইয়া। চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ‘কারা শাখা-২-এর পি-২০/২০১১(অংশ)/২৭০, তারিখ ১১/০৭/২০১১’ এবং কারা অধিদফতরের স্মারক নং ‘পিডি/পরি/৭/২০১১/১৬৭৫(৩), তারিখ ১৭/০৭/২০০১’-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘উপরোক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারকের আলোকে মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিষয়োক্ত বন্দিকে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম-৪৮/২০০৩ মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির পিতা কর্তৃক ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ‘মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করা হলো’ লিখে স্বাক্ষর করেছেন। তাই সংশ্লিষ্ট বন্দি গত ১৪/০৭/২০১১ তারিখে মৃত্যুদণ্ড হতে খালাস পেয়ে অন্য মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে বর্তমানে অত্র কারাগারে আটক আছে।’
১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×