somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হৃদরোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

১৯ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হৃদরোগ অর্থ হৃদপিন্ডের রোগ। এই হৃদপিন্ডটা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। আমাদের আশপাশের প্রিয় মানুষগুলো কেউ না এই হার্টের রোগে ভুগছে। অথচ একটু সচেতন হলে আমরা এই রোগ এড়িয়ে দিব্যি ভালো থাকতে পারি। পৃথিবীতে যতো মৃত্যু হয় তার ৩০% হয় শুধুমাত্র হৃদপিন্ডের রক্তসংবহন রোগে।
এ রোগের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় রয়েছে। যেমন,
ক) ওজনাধিক্য
খ) উচ্চ রক্তচাপ
গ) ডায়াবেটিস
ঘ) ধূমপান
ঙ) জর্দা, সাদাপাতা, খয়ের সেবন
চ) আর সর্বোপরি খাবার-দাবার বা খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস।
খাবারের সাথে সব রোগই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের অসচেতনতা, অজ্ঞতা আর খাবার রান্না প্রক্রিয়া সবই এই ধরনের রোগের কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে জানা গেছে, হৃদরোগের কারণে যেসব মৃত্যু হয় এর অধিকাংশ উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশের মানুষের।
অনেকেই মনে করেন, ক্ষীণকায় শরীরে কখনো হৃদরোগ হবে না। এজন্য খাওয়া-দাওয়ায় কোনো নিয়ন্ত্রণ আনেন না। অথচ বাইরে সরু হলে কী হবে এদের রক্তনালীতে চর্বি জমে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে মেদবহুল দেহে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
আমাদের শরীরে ক্যালরি প্রয়োজন এটা সত্য, তবে সে ক্যালরি ২ বা ৩ বারে গ্রহণ না করে ৫/৬ বারে গ্রহণ করলে তা শরীরে মেদ হয়ে জমবে না। অনেকে বলেন, ডায়েটিং করছেন। সকালে কিছু খান না। অথচ দুপুরে যে খাবার খাচ্ছেন তা প্রচুর পরিমাণে খেতে হচ্ছে। কারণ, ক্ষুধাকেতো নিবৃত্ত করতে হবে। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যে চর্বি এবং শর্করা জাতীয় খাবার যেনো পরিমাণে কম খাওয়া হয়।
অনেকের ধারণা, যেহেতু তিনি ডায়াবেটিক রোগী না সেহেতু কেনো চিনি কম খাবেন বা তিন বেলা ভাত খাবেন না। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই শর্করা জাতীয় খাবার দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হয় আর বেশি পরিমাণ গ্লুকোজ চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। বেশি তেল বা চর্বি জাতীয় খাবার শরীরের শুধু রক্তনালী বা হার্ট নয় লিভার, কিডনিসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গে বাজেভাবে প্রভাব ফেলে। অনেক রোগী হাই বস্নাড প্রেসার বা ডায়াবেটিস পারিবারিকভাবে পেয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে খাবার নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে প্রাথমিকভাবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আপনার খাদ্য তালিকায় অাঁশ জাতীয় খাবার বেশি রাখার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ফলমূল বিশেষ করে আমড়া, পেয়ারা, জাম্বুরা, লেবু, কামরাঙ্গা, আমলকি এগুলো বেশি করে খাবেন। এ সকল ফলের অাঁশ শরীরে রক্তের চর্বিকে জমতে দেয় না। পাশাপাশি শাক-সবজি ও ফলমূলে যে এন্টিঅঙ্েিডন্ট, বিটা ক্যারোটিন থাকে তা রক্তের এলডিএল-এর অঙ্েিডশনে বাধা দেয়। এই এলডিএল-ই এথেরোসক্লোরেসিসের জন্য দায়ী। এন্টিঅঙ্েিডন্ট রক্তে এইচডিএল-এর পরিমাণ বাড়ায়। মনে রাখবেন- রক্তে এইচডিএল-এর পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা হার্টের ভালো কোলেস্টেরল। মূলত এইচডিএল বাড়ে হাঁটার সাথে সাথে। হাঁটার পাশাপাশি এইচডিএল বাড়ানোর জন্য সামুদ্রিক মাছ আর বেশি করে শাক-সবজি খাবারের ব্যাপারে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি ধূমপান, জর্দা, সাদাপাতা ইত্যাদি কেউ খেলে সেক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন বা ওষুধ সেবনে কোনো লাভ হবে না। হৃদরোগের সবচেয়ে বড়ো শত্রু হচ্ছে চর্বি। এখানে সম্পৃক্ত চর্বির কথা বলা হচ্ছে। যা কীনা পনির, মাখন, ঘি, নারকেল, পামতেল, ননীযুক্ত দুধ, চিংড়ি মাছ, ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাংস ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।
চিকিৎসকরা ইদানিং বলে থাকেন যে ভেজিটেবল ওয়েল হার্টের জন্য ভালো যাতে ওমেগা ৩,৬ থাকে। যা আপনার হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে। একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন, এক্ষেত্রে রান্নার প্রসেসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রান্না যদি ডিপ ফ্রাই হয় তাহলে ভেজিটেবল ওয়েল দিয়ে রাঁধলেও লাভ হবে না। কেননা ডিপ ফ্রাইতে খাদ্যের ক্যালরি আড়াই গুণ বেড়ে যায়। যা কীনা পরে ফ্যাট হয়ে যায় এবং এ জাতীয় খাবার ওজন বাড়ায়। মনে রাখতে হবে যে খাদ্যে বেশি লবণ হিডেন কিলার। অতিরিক্ত লবণ বা খাবারের সাথে কাঁচা লবণ হাই বস্নাড প্রেসার ও হৃদপি-ের রক্ত সংবহননালীর যথেষ্ট ক্ষতি করে।
তাই হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগ থেকে দূরে থাকার জন্য কিছু পরামর্শ:
ক) পরিমিত আহার গ্রহণ করুন
খ) রিচ ফুড, ভাজা খাবার, কোমল পানি কম খান।
গ) প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি আর ফলমূল রাখুন।
ঘ) খাবারের পর পরই শুয়ে পড়বেন না।
ঙ) ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
চ) প্রচুর পানি পান করুন।
ছ) ডায়াবেটিস আর বস্নাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
জ) খাবারের সাথে কাঁচা লবণ খাবেন না।
ঝ) ধূমপান, জর্দা, খয়ের, সাদাপাতা ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত খাকুন।
ঞ) ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন।
ট) প্রচুর হাঁটুন। মনে রাখবেন- হাঁটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম।

সূত্র : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:৩৬
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×