somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা

১৭ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা

(লেখক ও সাংবাদিক এবং একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার কবির|)


প্রথম আলো- বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নটি সামনে চলে আসে। আন্তর্জাতিক নানা মহল থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনজীবীদের পক্ষ থেকেও সম্প্রতি একই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে খণ্ডন করবেন?

শাহরিয়ার কবির- আইসিসি গঠিত হয়েছে ১৯৯৮ সালে; আর সেখানে বলা হয়েছে, এই আদালত গঠনের আগে ঘটে যাওয়া অপরাধ বিচারের এখতিয়ার তাঁদের নেই। আর যেসব দেশের নিজস্ব বিচারব্যবস্থা আছে, সেখানে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার আইসিসির নেই। আমাদের দেশে যেহেতু নিজস্ব উন্নত বিচারব্যবস্থা আছে, সুতরাং এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে আইসিসির নিয়ম-কানুন বা বিধিবিধান আমাদের মেনে চলতে হবে।

প্রথম আলো- এই ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক না ‘ডমেস্টিক’ এ নিয়েও তো প্রশ্ন তুলেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনজীবীরা।

শাহরিয়ার কবির- এই বিষয়টি একটু পরিষ্কার করা দরকার। একাত্তরে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ ঘটেছে, তা আন্তর্জাতিক; কিন্তু এর বিচারের বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। এই অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে একটি আইন হয়েছে। এখানে যে বিষয়টি মনে রাখা দরকার তা হচ্ছে, অপরাধ ঘটেছে বাংলাদেশে, অপরাধ হয়েছে এ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে, এর শিকার হয়েছেন এ দেশের জনগণ। এই অপরাধের বিচার করার অধিকার বাংলাদেশের রয়েছে এবং এটা দেশের সার্বভৌম অধিকারের বিষয়। কোনো কারণে আমরা যদি তা করতে না পারি, তখন আন্তর্জাতিক বিচারের প্রশ্ন আসতে পারে।

প্রথম আলো- অভিযুক্ত ব্যক্তিদের এক আইনজীবী যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল ‘ডমেস্টিক’ হলে দেশের প্রচলিত আইনের নানা সুযোগ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাওয়া উচিত।
শাহরিয়ার কবির- দেশের প্রচলিত ফৌজদারি আইনে এই বিচার সম্ভব নয় বলেই ১৯৭৩শাহরিয়ার কবির সালে আইন করা হয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে, একাত্তরে বাংলাদেশে যে গণহত্যা চলেছে, তা বিশেষ ধরনের অপরাধ। একটি জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে রাজনৈতিক হত্যা হয়েছে। অপরাধগুলো আন্তর্জাতিক ও বিশেষ ধরনের। প্রচলিত আইনে এর বিচার সম্ভব নয়, তাতে এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। প্রচলিত আইনের সাক্ষীর যে বিধান রয়েছে, তা এখানে কার্যকর থাকলে হবে না।

প্রথম আলো- সম্প্রতি আমরা দেখলাম যে ট্রাইব্যুনালের কিছু কার্যবিধি পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন বিধানে অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার আপত্তি ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করেন কি?

শাহরিয়ার কবির- এই বিচারের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা পর্যবেক্ষণ সরকার ও ট্রাইব্যুনাল যে বিবেচনায় নিয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। বিচারের প্রয়োজনে ও বিচারের অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কার্যবিধির পরিবর্তন করা হয়েছে, প্রয়োজনে আরও সংশোধনীও করা যেতে পারে।

প্রথম আলো- সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হোক, সেটাই তো আপনাদের চাওয়া ছিল। এখন মনে হচ্ছে কিছু চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবে।

শাহরিয়ার কবির- সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে হবে, এমন দাবি বাস্তবসম্মত নয়। ৪০ বছর পর কাজটি খুবই কঠিন। বঙ্গবন্ধুর সময় ১১ হাজারের বেশি যুদ্ধাপরাধী আটক ছিল। এখন তাদের খোঁজ পাওয়া কঠিন হবে। ঢালাও বিচার করতে গেলে জটিলতা দেখা দেবে। আমাদের অবস্থান হচ্ছে, শীর্ষ অপরাধী ও জেলা-থানা পর্যায়ে যেসব যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচার নিশ্চিতের চেষ্টা করে যাওয়া। কেউ একটা বিবৃতি দিয়েছে বা রাজনৈতিক কারণে দালালি করেছে, তাদের বাদ দেওয়া যায়।

প্রথম আলো- ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পাশাপাশি সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের একটি দাবি আপনাদের ছিল। সেটা থেকে আপনারা কি সরে এসেছেন?

শাহরিয়ার কবির- আমরা সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে আমাদের অবস্থান থেকে সরে আসিনি। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা বিবেচনায় নেওয়ার কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। একাত্তর সালে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কথা না শুনেই দেশ স্বাধীন করেছিলাম।...................................................

আমার কথা হলো- এটির নাম যদি দেয়া হয় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুøনাল। আর কাজে কর্মে যদি আন্তর্জাতিক মান ঠিক না থাকে। তাহলে তো বিচার কাজ ডমেস্টিকই হয়ে গেল। তাহলে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুøনাল বললে তো ভূল হবে। সেক্ষেত্রে এই বিচার প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েই গেল---সম্মানিত লেখকের কথা থেকেই তা বুঝা যায়।----আপনারা কি মনে করেন???????
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×