somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসাধারন একটি গল্প.....................

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ক্লাস এ ঢুকেই মিথিলার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। কারন তখনো কেউই এসে পৌঁছায়নি। শুধুমাত্র রাতুল পিছনের টেবিলটাতে একা বসে আছে। এই
ছেলেটাকে মিথিলা একদমই পছন্দ করে না। ক্লাসের সবচেয়ে অমনোযোগী, বাজে ছাত্র হিসেবেই রাতুল পরিচিত । আরদেখতেও কেমন জানি অগোছালো। মাথার চুলগুলো উসকো - খুসকো । পরনের কাপড় গুলোওঅপরিষ্কার । মিথিলাকে দেখলেই ছেলেটা কেমন জানি হা করে তাকিয়ে থাকে । এই কারনে ছেলেটাকে মিথিলার আরও বেশি অপছ...ন্দ ।
বিকেলবেলা মিথিলা তার বান্ধবী লগ্নের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানতে পারলো যে তাদের ক্লাসের রাতুল , সুজয়ের কাছে মার খেয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলেছে । মিথিলা , সুজয়কে খুব ভাল করেই চেনে । আগে প্রায়ই রাস্তায় মিথিলাকে বিরক্ত করতো । বখাটে ছেলেরা তো মারামারি করবেই, এটাই তো স্বাভাবিক । তাই , রাতুলের মাথা ফাটানোর ব্যাপারটা মিথিলার মনে একটুও ছেদ ফেলল না । মিথিলা মন খারাপ করে কলেজের বারান্দায় দাড়িয়ে আছে । আজকে ওর পরীক্ষাটা খুবই খারাপ হয়েছে । পাশ করতে পারবে বলে মনে হয় না । এত চিন্তার কারন ছিল না যদি এটা নির্বাচনী পরীক্ষা না হয়ে সাধারণ কোন পরীক্ষা হতো । কিন্তু , নির্বাচনী পরীক্ষায়পাশ না করতে পারলে তো সে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে না । পরের দিন কলেজে গিয়ে মিথিলা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল । কারন, গত রাতে নাকি শর্ট-সার্কিট এ আগুন লেগে ওদের পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে । তাই গতদিনের পরীক্ষাটা আবার অনুষ্ঠিত হবে । এইচ.এস.সি পরীক্ষা শেষ হওয়ার কিছুদিন পরেই মিথিলার ক্যান্সার ধরা পড়ল । ধীরে ধীরে রোগটা সারা দেহেপ্রভাব বিস্তার করতে শুরু করল । কিন্তু , অপারেশন করতে যে পরিমাণ টাকা দরকারতা জোগাড়
করাটা মিথিলার পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো না । শেষ পর্যন্ত ধার-
দেনা করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করে অপারেশন করা হল ।
আল্লাহের রহমতে এবং সবার দোয়ায় মিথিলা সুস্থ হয়ে উঠলো ।
সুস্থ হওয়ার কিছুদিন পরে মিথিলার কাছে একটা চিঠি আসে ।

চিঠিটা ছিল এইরকম :

প্রিয় মিথিলা ,
কলেজে যে দিন তোমাকে প্রথম দেখেছি সে দিন থেকেই তোমাকে অনেক
ভালবেসে ফেলেছি । কিন্তু, একটা বখাটে ছেলের ভালবাসাকে তুমি
কোনদিনই মেনে নেবে না । তাই , ভেবেছিলাম লুকিয়ে যতটাভালবাসা
যায় ততটাই ভালবাসবো । সুজয় যে দিন লোক ভাড়া করে এনেছিল
তোমাকে কিডন্যাপ করার জন্য , সে দিন ওদের সাথে মারামারি
কোরেছিলাম শুধু তোমাকে বাঁচাবো বলে। লগ্নের কাছে জানতে
পেরেছিলাম, তোমার নির্বাচনী পরীক্ষায় রসায়ন পরীক্ষাটা খুব
খারাপ হয়েছিল । তাই, সে দিন রাতেই কলেজের অফিসে তালা ভেঙ্গে
ঢুকে খাতা পুড়িয়ে দিয়েছিলাম শুধু তোমার মুখে একটু হাসিদেখব
বলে। কিন্তু , দারোয়ানের কাছে ধরা পরে গিয়ে ছয় মাসের
জেল হল। কলেজেরই ছাত্র কাজটা করেছে বলে ব্যাপারটা শর্ট-সার্কিট এ
আগুন লেগেছে বলে চালিয়ে দেয়া হল। তাই আর এইচ.এস.সি পরীক্ষাটা
দেয়াহল না। জেল থেকে বের হয়ে শুনলাম, তুমি ক্যান্সার এ
আক্রান্ত। টাকার অভাবে তোমার অপারেশন হচ্ছেনা জেনে কোন
উপায় নাদেখে নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করলাম শুধু
তোমায় ভালবাসি বলে । আজ আমি জীবনের শেষ পর্যায়এ এসে
উপস্থিত হয়েছি । আমার অবশিষ্ট কিডনিটা অনেক আগে থেকেই নষ্ট
ছিল । এখন অবস্থা দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে । ডাক্তার বলেছে,
আর খুব বেশি দিন বাঁচবো না । তাই মারা যাওয়ার আগে ভাবলাম,
সেই কথাটা বলে যাই । যে কথাটা আজো তোমায় বলতে পারিনি ।
আমি তোমাকে ভালবাসি মিথিলা । অনেক ভালবাসি ।
ভাল থেকো ।

ইতি,
তোমাদের ক্লাসের সবচেয়ে বাজে ছেলে
রাতুল

মিথিলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে পড়তে চিঠিটা ভিজে গেল। :(( :(( :((


- সংগৃহীত


- সপ্ন আর সত্যি গলো না

যে কোনো মানুষকে ঠিক মোতো না যেনে না চিনে কোনো কমেন্ট অথবা তাকে বিচার করা উচিত না। সে তোমার খুব কাছের একজন মানুষ হতে পারে। অনেকেই ভালোবাসা এক্রপ্রেস করতে পারে না।
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×