somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাবা খেলা,খেলোয়াড় আার দাবার গুটি (ভিকারুননিসা )

১৬ ই জুলাই, ২০১১ রাত ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনার ক্রমানুসারে বিচার করলে এটাই দেখা যায় যে ছাত্রীরা আর তাদের প্রিয় টিচার উভয়ই দুইটি শক্তির দাবা খেলার গুটিতে পরিনত হয়েছে,তাদের আর তাদের সমর্থনকারীদের অজান্তেই নির্যাতিত মেয়েটির প্রতি তাদের আবেগ কে খুব বিশ্রীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।আসুন ঘটনাগুলো একটু সাজিয়ে দেখে নিই।(ধর্ষন কথাটা খুব খারাপ লাগে শুনতে,মেয়েটি আমাদের বোনের মত,আমি চাই না কেউ তাকে ধর্ষিতা বলুক)

পরিমল ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন,তার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড বসুন্ধরা শাখার প্রধান শিক্ষক আর অধ্যক্ষ হোসনে আরা (যিনি নিজেও নাকি প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী) কে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা সৃষ্টি করেছে।অধ্যক্ষ তাকে বাঁচাতে নানা কথা বললেন,এতে ছাত্রীরা গেল খুব রেগে।খুব স্বাভাবিক ব্যাপার,যে তাদের নিরাপত্তার স্থল সেই তাদের বোনের নির্যাতনকারীকে বাঁচাতে চাচ্ছে ,এও কি মেনে নেওয়া যায়! ফেসবুক ,ব্লগে শুরু হল তীব্র প্রতিবাদ।

৬ দফা দাবী নিয়ে আন্দোলন শুরু হল। এর মধ্যে ছিল পরিমলের শাস্তি,অধ্যক্ষ হোসনে আরা, ভর্তি বাণিজ্যের জন্য দায়ী,স্কুলের সুনাম নষ্টের জন্য দায়ীদের শাস্তি ইত্যাদি অর্থাৎ ভিকারুন্নিসার সম্মান বাচানোর জন্য যা যা করা দরকার তাই ছিল।

এই মুহুর্তে সুযোগটা গ্রহন করলো পুর্বতন কমিটির কিছু সদস্য ।তাদের মধ্যে দুই একজন প্রাক্তন ছাত্রদলের নেতাও নাকি ছিলেন।তারা সভাপতি ছাড়াই একটা মিটিং করে হোস্নে আরাকে বরখাস্ত করলেন ,আর নিয়োগ দিলেন ছাত্রীদের অতি প্রিয় একজন শিক্ষিকাকে।এটা আর কিছুই না,ছাত্রী আর শিক্ষিকা উভয়ের আবেগকেই কাজে লাগানোর এক চাল।নতুন শিক্ষিকা আম্বিয়া খাতুন নতুন পুরাতন ছাত্রীদের কাছ থেকে যা জানা গেল যিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান একজন শিক্ষিকা,কলেজের প্রতি যার নিখাদ দরদ,তিনিও ভিকারুন্নিসার হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য সংকল্প বদ্ধ হলেন।

আর ছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষিকা পেয়ে হল আনন্দে আত্মহারা,এতটাই যে তারা মিরসরাই ট্রাজেডির প্রাতিষ্ঠানিক শোক দিবসের কথা ভুলে বিরাট বিরাট কেক কাটলেন,হোস্নে আরার আইডি কারড ছুড়ে ফেল্লেন,তাকে ক্যম্পাসে ভারসিটি স্টাইলে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হল,তার বাসায়ও নাকি ঢিল ছোড়া হল।প্রিন্সিপাল তো ভাইস চ্যান্সেলরের মত,জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়ে অনেক কাহিনী দেখেছি ,কই এরকম কিছুতো দেখিনি।মানছি দুই প্রেক্ষাপট মোটেও এক নয়।তারপরো বলি বেশি ক্রোধ দেখানো হয়ে গেছে,মনে মনে ঘৃ্না থাকবেই,সেটা আলাদা ব্যাপার। আমি হলে কখোন এই কাজটা করতাম না,তিনি তো আর রেপ করেন নি।তাহলে কারনটা কি? সম্ভবত তাদের তাতিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এরপর সরকারী দল দেখল ঘটনা তাদের এখতিয়ারের বাইরে চলে যাচ্ছে,তারা ঐ কমিটির সিদ্ধান্ত মানবে কেন ,দিল ঐ কমিটিকে বাতিল করে,কারন দেখালো যা, তা অত্যন্ত হাস্যকর ঐ কমিটির নাকি মেয়াদ অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছে,ঐ কমিটি অবৈধ,ঐ কমিটির সিদ্ধান্তও অবৈধ।ব্যস ল্যাঠা গেল চুকে।

আর ঐ দিকে ছাত্রীদের প্রানের ছয় দফা দাবী রুপ নিল দুই দফা দাবীতে।দেখুন বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আর কিছু শোনা গেল না।তাতে পুর্বতন কমিটির লাভ হল বেশ।সম্ভাব্য বিপদ থেকে তারা ভালই রেহাই পেয়ে গেল।আপাত দৃষ্টিতে তাদের মিশন সাকসেসফুলই মনে হচ্ছে।এরা থেকে গেল আড়ালেই,ফেসবুক আর ব্লগে ব্লগে সরকারকে ধুয়ে ফেলা হল ,আপাত দৃষ্টিতে তাদের মিশন সাকসেসফুলই মনে হচ্ছে।মাঝখানে ছাত্রীরা প্রিয় আম্বিয়া ম্যাডামকেও হারাল।

আমি কোন দলকেই সমর্থন করছি না।সরকারী দল যে কি করছে তা সবাই দেখছে,বিরোধী দলও কোন রা করছে না,একটা বিষয় কি খেয়াল করেছেন, সরকারের এই চরম বিশংখল মুহূর্তেও বিরোধী দল কোন কথা বলছে না।কারন সবাই লাভ খুজে,মীরসরাইতে গেলে আগামীবার ভোট পাবে,ভিকারুননিসার ছাত্রীরা তাদের কি দেবে?

সরকার এই ইস্যু নিয়ে বাড়াবাড়ি চায় না,বিরোধী দল ও সাইলেন্ট।মিডিয়া তাই পাত্তাই দিচ্ছে না ছাত্রীদের দাবীতে।হোস্নে আরাকে বাচানো গেলে বা বি এন পির কাউকে বাচানো গেলে ভবিষ্যতে যথোপযুক্ত পুরষ্কার পাওয়া যাবে,ভিকারুননিসার ছাত্রীরা তাদের কি পুরষ্কার দিবে?
আর এভাবেই ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কলেজের বর্তমান পুরাতন ছাত্রী,শিক্ষক আর সাধারন মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করল এই দুই শক্তি।হয়তো এসবের ভীড়ে আড়ালেই চলে যাবে পরিমলের শাস্তিটাও।দেখারো যে তেমন কেঊ নেই,মানবধিকার কর্মীরাও যে বিড়াল তপস্বী সেজে বসে...।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১২:৩৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×